আমেরিকানদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান বাইডেনের

শনিবার বিকেলে নির্বাচনী সমাবেশে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার পর আমেরিকান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আমেরিকানদের রাজনৈতিক বিভাজনকে একপাশে রেখে সবাইকে জাতি হিসেবে এক হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তিনি। রোববার রাতে ওভাল অফিস থেকে জাতির উদ্দেশে সাড়ে ছয় মিনিটের একটি ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। সেখানে তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক সহিংসতাকে কোনোভাবেই স্বাভাবিক করা যাবে না। এছাড়া ট্রাম্পের ওপর ওই হামলার পর রিপাবলিকানদের কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন এজন্য বাইডেন দায়ী। এক্ষেত্রে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
বাইডেন আরও বলেছেন, আমরা আমেরিকানরা সহিংসতার পথে যেতে পারি না, এটা আমাদের জন্য উচিত নয়। আমাদের ইতিহাসে হিংসার স্থান নেই বলেও মন্তব্য করেছেন বাইডেন। 

ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান দলের মধ্যে তীব্র পার্থক্য স্বীকার করে বাইডেন বলেছেন, তিনি নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দেশের জন্য তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে যাবেন কিন্তু রাজনৈতিক মতবিরোধ মীমাংসা হবে ভোটে ব্যালটের মাধ্যমে। বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার গণতন্ত্রে মতবিরোধ অনিবার্য। এটা জনগণের অংশ। তবে রাজনীতি কখনই আক্ষরিক যুদ্ধক্ষেত্র বা হত্যার ক্ষেত্র হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন বাইডেন।

এর আগে ১৯৮১ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার প্রায় দুই যুগ পরে গত শনিবার দেশটির আরেক সাবেক প্রেসিডেন্টের ওপর হামলার ঘটনা ঘটলো। মূলত এসব রাজনৈতিক সহিংসতাকে উল্লেখ করেই বাইডেন তার দেশের জনগণের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য পেনসিলভ্যানিয়ার বাটলারে একটি নির্বাচনী সমাবেশে বক্তৃতা করার সময় ট্রাম্পের ওপর হামলা চালায় ২০ বছর বয়সী এক যুবক। হামলাকারী ওই যুবকের নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। সে বাটলার থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে বেথেল পার্ক এলাকার বাসিন্দা ছিল। হামলাকারী মুহূর্তের মধ্যে একসঙ্গে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান ট্রাম্প। একটি গুলি ট্রাম্পের ডান কানের ওপরের অংশ স্পর্শ করে চলে যায়। এতে ট্রাম্প আহত হন। তবে এখন তিনি সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

হামলার ওই ঘটনায় দুই জন নিহত এবং দুই জন গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে রয়েছে সাবেক ফায়ার চিফ কোরি। তার বয়স ছিল ৫০ বছর। এছাড়া আরেক নিহত হচ্ছেন হামলাকারী ম্যাথিউ ক্রুকস। সে সিক্রেট সার্ভিসের গুলিতে নিহত হন। শনিবার ট্রাম্পের ওপর হামলাকে হত্যাচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। তবে এখনও পুরোপুরি ওই হামলার মোটিভ উদ্ধার করতে পারেনি গোয়েন্দারা। তারা এ বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ওই হামলার পর থেকে আমেরিকার রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া এতে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মতামত তাদের ।