দেশ বিদেশ
প্রকাশ্যে প্রথম সিনেটরের মন্তব্য
ভূমিধস পরাজয় ঘটতে পারে বাইডেনের
মানবজমিন ডেস্ক
১১ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবার
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে দলের ভেতরে ক্রমশ চাপে পড়ছেন জো বাইডেন। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, ডোনারদের বড় অংশ তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এমনকি সাতজন কংগ্রেসম্যান তাকে একই আহ্বান জানিয়েছেন। সর্বশেষ প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডেমোক্রেট দল থেকে প্রথম একজন সিনেটর। তিনি মাইকেল বেনেট। তিনি সিএনএনকে বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট, রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনড় থাকেন ৮১ বছর বয়সী জো বাইডেন তাহলে নির্বাচনে ভূমিধস পরাজয় হবে বাইডেনের। তবে তিনি সরাসরি বাইডেনকে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতে বলেননি। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে খারাপ পারফর্ম করেন বাইডেন। তারপর থেকেই প্রেসিডেন্ট পদে তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জোর দিয়ে বলছেন, তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করতে পারবেন। গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের পক্ষ থেকে তিনি অব্যাহত সমর্থন পাচ্ছেন। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ন্যাটোর নেতাদের সামরিক সামিট। এর আলোচনার টেবিলে আছে ইউক্রেন ইস্যু। এই সামিটে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি রয়েছে বাইডেনের ওপর। বৃহস্পতিবার বিকালে ওয়াশিংটনে তিনি মিটিং নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন। সেখানে বৈশ্বিক নানা ইস্যুতে চাপের মুখে পড়তে পারেন। মঙ্গলবার কংগ্রেসে এসব নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার আবারো বলেছেন- আমি জো বাইডেনের সঙ্গে আছি। অন্যরা দলের ভেতর সংহতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
বিবিসি রেডিও ৪-এর ওয়ার্ল্ড টুনাইট প্রোগ্রামে জর্জিয়া থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান হ্যাংক জনসন সমর্থন দিয়েছেন বাইডেনকে। হ্যাংক জনসন হলেন কংগ্রেসনাল ব্ল্যাক ককাসের প্রভাবশালী একজন সদস্য। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘ভয়ানক’ বিতর্কের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বিভিন্ন বর্ণের ভোটারদের বেশির ভাগই বাইডেনকে তাদের প্রার্থী হিসেবে চায়। ব্ল্যাক ককাস হলো প্রায় ৬০ জন আইনপ্রণেতার একটি গ্রুপ। সোমবার ফোনকলে তারা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সমর্থন জানিয়েছেন। মঙ্গলবার ন্যাটো সামিট উদ্বোধনের সময় সংক্ষিপ্ত কিন্তু কড়া মন্তব্য করেন। তিনি বলেন- এই জোটকে যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক শক্তিধর হতে হবে। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ২৭শে জুনের বিতর্কে তিনি ভঙ্গুর পারফরমেন্স করেছেন। তা নিয়ে ওয়াশিংটনে কংগ্রেসনাল ডেমোক্রেটদের মধ্যে প্রাইভেট পর্যায়ে আলোচনা চলছে। কেউ কেউ সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করছেন। তারা হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের রেকর্ড এবং ডেমোক্রেটদের ঐক্যের বিষয়ে কথা বলছেন।
একই দিন নিউ জার্সি থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মিকি শেরিল প্রকাশ্যে নির্বাচন না করতে বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে খুব কড়া। কংগ্রেসের অন্য ভিন্নমতাবলম্বীদের সঙ্গে যোগ দেন তিনি। তাদের মধ্যে আছেন এডাম স্মিথ- তিনি এ সপ্তাহে বিবিসিকে বলেছেন, প্রার্থীর প্রতি শক্তিশালী বার্তা দেয়া উচিত দলের। সিএনএনের কাছে মাইকেল বেনেট বলেন, এই নির্বাচন প্রেসিডেন্টের জন্য বিবেচনার। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প কিন্তু তার ট্র্যাকে আছেন। তিনি নির্বাচনে জিততে চান। হয়তো ভূমিধস জয় পেতে পারেন। কলোরাডোর এই ডেমোক্রেট সিনেটর এটাকে এখন দেশের ভবিষ্যতের জন্য নৈতিকতার প্রশ্ন বলে উল্লেখ করেছেন। সিএনএনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আরও দু’জন সিনেটর মনে করছেন হোয়াইট হাউসের লড়াইয়ে জিততে পারবেন না বাইডেন। তবে ওই দুই সিনেটর তাদের নাম, পরিচয় প্রকাশ করেননি। আরও সমালোচনা শোনা গেছে কূটনীতিকদের মুখে। ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দেয়া কিছু কূটনীতিক মনে করছেন বাইডেন আরও চার বছর ক্ষমতায় থাকুন- তারা তা দেখতে চান না।
কিন্তু বাইডেন অনড়। তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না বলে স্থির আছেন। তবে যদি তিনি সরে যান বা দল তাকে আটকে দেয়- তাহলে তার পরিবর্তে কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের প্রার্থী হবেন তা নিয়ে নানা আলোচনা, জল্পনাকল্পনা চলছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু হাইপ্রোফাইল ব্যক্তির সমর্থন পেয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস। কিন্তু মঙ্গলবার লাস ভেগাসে এক র্যালিকালে মিস হ্যারিস তার বস বাইডেনের প্রশংসা করেছেন। তিনি তাকে একজন ‘যোদ্ধা’ বলে অভিহিত করেছেন।