ঢাকা, ১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৩ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

অর্থ-বাণিজ্য

দুর্যোগ বাড়লেও প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু সম্পর্কিত বরাদ্দ কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১১ মাস আগে) ২২ জুন ২০২৪, শনিবার, ৭:০৩ অপরাহ্ন

mzamin

তীব্র তাপপ্রবাহ, শৈত্য প্রবাহ, মওসুমের বাইরে বৃষ্টিপাতসহ বিভিন্ন দুর্যোগ বাড়লেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু সম্পর্কিত বরাদ্দ কমেছে। একইসাথে বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের প্রকৃত বরাদ্দও ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। পরিবেশবাদী সংগঠন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

শনিবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘সবুজ অর্থনীতি ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু, পরিবেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রিন ফিনিটির প্রধান নির্বাহী ড. দিলরুবা, চেঞ্জ চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের গবেষণা সহকারী তন্ময় সাহা এবং পারমিতা অরণি।

জাকির হোসেন বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু সম্পর্কিত বাজেট বরাদ্দ জিডিপির ১ শতাংশের কম। যা ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তুলনায় এবং মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় প্রকৃত বরাদ্দ ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। একইসাথে জলবায়ু সহনীয়তা ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতে বাজেটে জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ ব্যয় করা প্রয়োজন। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়লেও জলবায়ু সম্পর্কিত বাজেট বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় ০ দশমিক ৭০৬ শতাংশ  কমেছে।

তিনি বলেন, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় এবারের বাজেটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ বেড়ে দুই হাজার ১৩০ কোটি টাকা বা ৫২ কোটি টাকা বাড়লেও বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতির বিবেচনায় প্রকৃত বরাদ্দ কমেছে। দুর্যোগ বাড়লেও কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পানি সম্পদ খাতে জলবায়ু সম্পর্কিত বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক বা তার সামান্য বেশি। তীব্র দাবদাহ, শৈত্যপ্রবাহ, মওসুমের বাইরে বৃষ্টিপাতসহ বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং শিলাবৃষ্টির মতো দুর্যোগ বাড়লেও খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং গবেষণা ও জ্ঞান ব্যবস্থাপনায় জলবায়ু সম্পর্কিত অর্থায়ন ক্রমেই কমছে।

জলবায়ু অর্থায়নে ঘাটতি ২৩.৪ বিলিয়ন ডলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের হারানো কর্মদিবসের আর্থিক মূল্য বিবেচনায় সার্বিক জলবায়ু অর্থায়নে ঘাটতি বছরে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার। ঘাটতির তুলনায় আন্তর্জাতিক উৎস হতে বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। তাছাড়া সরকার জলবায়ু সহনীয়তার জন্য কার্বন নিঃসরণকারী জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর কার্বন কর আরোপ করা উচিত। তাহলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির পাশাপাশি অভিযোজনেও বেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ কমে বায়ু দূষণের পরিমাণ কমে যাবে। কার্বন কর, দূষণ কর আরোপ করার মাধ্যম বছরে সর্বোচ্চ ৩.৪ বিলিয়ন ডলার সবুজ অর্থায়ন।

জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ জাকির হোসেন আরও বলেন, প্লাস্টিক, ইট ভাটা, বিল্ডিং, দূষণকারী প্রতিষ্ঠান, পানি উত্তোলন ও বনভূমি কর্তনের ওপর ৫ শতাংশ দূষণ কর আদায়ের মাধ্যমে আরও ২৯০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব। জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে ঘূর্ণিঝড় রেমালে ২০টি জেলায় ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৮১৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন দুর্যোগ আরো ভয়াবহ হতে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী গড় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির চেয়ে বাংলাদেশে বছরে দ্রুত এবং ৩.৪২ মিলিমিটার বেশি হারে বাড়ছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশ প্রায় ১০ শতাংশ আমন ধানের উৎপাদন হ্রাসের ঝুঁকির সম্ভাবনা আছে। জলবায়ুর ঝুঁকি সূচকে রংপুর এবং বরিশাল বিভাগ কাছাকাছি অবস্থান করলেও রংপুর বিভাগের তুলনায় বরিশালে বিসিসিটিএফ থেকে জনপ্রতি প্রায় ৯ গুণ বেশি তহবিল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়াও টেকসই সমৃদ্ধি কৌশল ও পরিকল্পনা নিশ্চিতে জল, বন এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার প্রদান করে ২০২৫ সালের মধ্যে প্রকৃতি ভিত্তিক টেকসই সমৃদ্ধি কৌশল প্রণয়নসহ বেশকিছু সুপারিশের কথাও বলেন তিনি।

অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status