এবার ২৯শে মে'র মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণে আল্টিমেটাম

আগামী ২৯শে মে'র মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, উপ কমিশনার (দ্বিতীয় সচিব) শাহাদাৎ জামিল শাওন ও উপ কর কমিশনার (দ্বিতীয় সচিব) রইসুন নেসা।
সংবাদ সম্মেলন বলা হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় এ দাবি করা হয়েছে।

এর আগে রোববার কর্মবিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ঘোষিত এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি যথারীতি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছিল তারা। আবারও সেই দাবিসহ আল্টিমেটাম দিলো এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ঐক্য পরিষদ জানায়, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান অসহযোগিতা, নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির ব্যাপকতা ও যৌক্তিকতার বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঠিক তথ্য না দিয়ে আড়াল করেছেন। এ সময় তার অপসারণ দাবি করা হয়। এতদিন তার অপসারণের দাবি থাকলেও কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়নি, এবারই প্রথমবার সময় দেয়া হলো।
রাজস্ব ক্ষতি পোষাতে প্রতিদিন অতিরিক্ত সময় কাজ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। প্রয়োজনে প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টা বেশি কাজ করবেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। আগামী মাসে ‘কেমন এনবিআর চাই’ এই শিরোনামে সেমিনারের আয়োজনের কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, আগামী ৩১শে জুলাইয়ের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এনবিআর নিয়ে জারি করা অধ্যাদেশের প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে। তার আগে অবশ্য এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। ঘোষিত ওই কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশের সব শুল্ক-কর কার্যালয়ে কর্মবিরতির কথা ছিল। আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবাকেও এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত করা হয়। তবে ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম আমদানি কর্মবিরতির আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল। এরপরই নড়েচড়ে বসে অর্থ মন্ত্রণালয়। সমঝোতার প্রক্রিয়া হিসেবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অধ্যাদেশ স্থগিতের আশ্বাস দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ১২ই মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ চালুর ঘোষণা দিয়ে এ–সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এই অধ্যাদেশের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শুধু এনবিআর নয়, ঢাকা কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল, ভোমরা স্থলবন্দরসহ দেশের অন্যান্য শুল্ক স্টেশনেও কয়েক দিন ধরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলন চলছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবি মূলত চারটি। প্রথমত, জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করা; দ্বিতীয়ত, এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ; তৃতীয়ত, রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং চতুর্থত, এনবিআরের প্রস্তাবিত খসড়া ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে রাজস্বব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করা।