ঢাকা, ২৬ জুন ২০২৪, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ জিলহজ্জ ১৪৪৫ হিঃ

অর্থ-বাণিজ্য

বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়ন আরও বেগবান করা প্রয়োজন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১ সপ্তাহ আগে) ১৪ জুন ২০২৪, শুক্রবার, ৭:২৬ অপরাহ্ন

mzamin

দেশে অবকাঠামো, বাণিজ্য, বিনিয়োগ প্রবাহ ও টেকসই অর্থায়নকে আরও বেগবান করার ওপর জোর দিতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশকে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার সুযোগ রয়েছে  ।

‘থ্রাইভ ইন বাংলাদেশ: অ্যাকশনেবল ইনসাইটস অ্যান্ড সল্যুশনস ফর কোরিয়ান বিজনেস’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন বক্তারা। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংলাপ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে দেশের অন্যতম বেসরকারি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, বাংলাদেশে কোরিয়া প্রজাতন্ত্র দূতাবাস, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ ব্যাংক ও কোরিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (কেবিসিসিআই)।

অনুষ্ঠানে দেশে কোরিয়ার ব্যবসা ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। অবকাঠামো, বাণিজ্য, বিনিয়োগ প্রবাহ ও টেকসই অর্থায়নকে আরও বেগবান করার ওপর জোর দেন বক্তারা। দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার মাধ্যমে কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার ওপর আলোচনা করা হয়। সংলাপের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা নীতিনির্ধারক ও খাতসংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয় বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সমৃদ্ধিতে অবিরাম সহযোগিতার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের চতুর্থ বৃহত্তম উৎস হিসাবে দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অবকাঠামো ও উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে কোরিয়া। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এ দুই দেশের পারস্পারিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগে বৈচিত্র্য বৃদ্ধির আরও সুযোগ রয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, কার্যকরভাবে বিনিময় হারের পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ ও অনিষ্পন্ন বিষয়গুলোর সমাধানের সুযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।’

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সাথে টেকসই অর্জন ও বাস্তবসম্মত প্রতিশ্রুতিনির্ভর দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছে কোরিয়া।

বিজ্ঞাপন
আলোচনায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সহযোগিতা, তহবিলনির্ভর প্রকল্প, কোরিয়ান সরকারের কাছ থেকে গৃহিত ঋণ এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের বিষয়গুলো এসেছে। যদিও বাংলাদেশে শ্রমিক খরচ কম, কিন্তু ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তির যুগে অন্যান্য দিকেও দেশটির সক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশকে অবশ্যই ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করতে হবে। গুণগত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকার ও বেসরকারি খাতের মধ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।’

বিডা’র নির্বাহী সদস্য (আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রচার) মোহসিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের শক্তিশালী নেটওয়ার্কিং ও বিডা’র বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রচেষ্টার সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত করা আমাদের লক্ষ্য। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা এবং বিভিন্ন খাতে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা আমাদের উদ্দেশ্য। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে আমরা বিশ্বব্যাংকের সুপারিশকৃত বিভিন্ন সংস্কার বাস্তবায়ন করেছি এবং বিডা’র পক্ষ থেকে বাংলাদেশ বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচিও তৈরি করেছি।’ তিনি ১২৪টি পরিষেবা সম্বলিত বিডা’র অনলাইন ওয়ান-স্টপ সার্ভিস পোর্টালে স্বাগত জানান। বাংলাদেশ বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচিতে সংস্কারের সাতটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছেকোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সির মহাপরিচালক স্যামসু কিম বলেছেন, ‘কোরিয়ার কোম্পানিগুলো ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পে বিনিয়োগ করেছে। তবে অন্যান্য উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ এখনও কম। টেক্সটাইল শিল্পের জন্য কৃত্রিম ফাইবারের সাপ্লাই চেইনের মতো শিল্প অবকাঠামো উন্নত করা অপরিহার্য। বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান ও কর প্রক্রিয়াকে সহজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, লাইসেন্সিং, প্রশাসনিক পদ্ধতি ও শুল্কছাড়পত্রে বিলম্ব কমানে গেলে বাংলাদেশকে বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে এবং একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের পরিচালক আবু ছালেহ মুহম্মদ সাহাব উদ্দীন বলেন, ‘কোরিয়া বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম বিনিয়োগকারী। কোরিয়ার একাধিক প্রতিষ্ঠান বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ সেমিনার আয়োজনের জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাংলাদেশ ব্যাংক জুন ২০২৩ নির্দেশিকা অনুযায়ী, বিনিয়োগকারীরা যে কোনো স্থান থেকে বিনিময় ক্ষতি কমানোর উদ্দেশ্যে বৈদেশিক মুদ্রায় ইকুইটি তহবিল ধরে রাখতে পারবেন। বিনিয়োগকারীরা তাদের লভ্যাংশ বাংলাদেশের অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে পারবেন এবং এই অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যালেন্স বিদেশে পাঠাতে বা আরও পুনঃবিনিয়োগ করতে পারবেন। এছাড়া বিনিয়োগকারীরা মূল্য প্রদর্শন করে যেকোনো ক্রেতার কাছে শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন।  বিনিয়োগকারীরা এখন বিডা’র ওএসএস প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অস্থায়ী অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। ব্যক্তিগত উপস্থিতি বা স্থানীয় সহায়তা প্রয়োজন হবে না। বাংলাদেশে বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ব্যাংক থেকে চলতি মূলধন ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণসহ নমনীয় অর্থায়নের সুযোগ নিতে পারছে। কোরিয়ার সংস্থাগুলি বিডা নির্দেশিকা অনুসারে প্রকল্প-সংলগ্ন শাখা স্থাপন করতে এবং তাদের সদরদপ্তর থেকে পুঁজি স্থানান্তর করতে পারে।’ 
 

অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status