বিশ্বজমিন
নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির অনুমোদন, বাস্তবায়ন নিয়ে নানা প্রশ্ন
মানবজমিন ডেস্ক
(৭ মাস আগে) ১১ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:২৩ অপরাহ্ন
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে ভোটাভুটিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৪টি। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল শুধু রাশিয়া। সোমবার যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবটি অনুমোদন পেয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়েছে, আট মাস আগে গাজায় ইসরাইলের রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরুর পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি অনুমোদন করেছে। তবে এই অনুমোদন বাস্তবায়ন নিয়ে রয়ে গেছে নানা প্রশ্ন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এই অনুমোদন বাস্তবায়নে কার্যকরী আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। পক্ষান্তরে জাতিসংঘে ভোটের পর যুদ্ধবিরতির অনুমোদনকে ‘অর্থহীন এবং অন্তহীন’ বলে মন্তব্য করেছে ইসরাইল। দেশটি যুদ্ধবিরতির আলোচনায় আসবে কী না তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়ে গেছে। যেহেতু হামাস তাদের প্রস্তাবে অটুট রয়েছে।
গ্লোবাল দাতব্য প্রতিষ্ঠান মার্সি কর্প বলেছে, গাজার প্রায় অর্ধেক মানুষ ‘অনাহারে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে’। সেক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ না করে অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
এছাড়া যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশর এবং কাতার বাইডেনের এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে। এর আগে বাইডেন গাজায় তিন স্তরে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের একটি রূপরেখা দেন। সেখানে তিনি বলেছেন, প্রাথমিকভাবে গাজায় অবস্থানরত ইসরাইলি সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং সেখানে অবাধে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমোদন দিতে হবে। এছাড়া বাইডেন হামাসের হাতে ইসরাইলে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে গাজাকে পুনর্গঠনের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন বাইডেন।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক খবরে বলেছে, নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে ইসরাইলের সঙ্গে কথা বলেছে বাইডেন প্রশাসন। তারা বাইডেনের ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন এবং হামাসকে তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু বাইডেনের করা প্রস্তাবে একটি বিষয় উল্লেখ নেই, হামাস যে বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। হামাসের দাবি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিতে হবে- তবে এ বিষয়টি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে উল্লেখ করেনি বাইডেন প্রশাসন। এক্ষেত্রে হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কতটা এগোবে বা আলোচনা কতটা ফলপ্রসূ হবে তা এখনও স্পষ্ট না।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গাজার বেসামরিকদের ওপর চড়াও হয়েছে ইসরাইল। তারা হামাস নির্মূলের নামে সেখানে গত আট মাসে ৩৭ হাজার ১২৪ বেসামরিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এছাড়া তেল আবিবের ভয়াবহ হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৮৪ হাজার ৭১২ ফিলিস্তিনি। জাতিসংঘের তথ্যমতে, হতাহতের বেশির ভাগ নারী এবং শিশু। এছাড়া বহু ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।