অর্থ-বাণিজ্য
কমেছে রপ্তানি আয় অস্বাভাবিক রেমিট্যান্স
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৪ মে ২০২৪, শনিবারদীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলার সংকট সত্ত্বেও চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস থেকেই রপ্তানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ। টানা তিন মাস এই প্রবৃদ্ধি বজায় থাকলেও চতুর্থ মাসে এসে ছন্দপতন ঘটেছে। একক মাস হিসেবে এপ্রিলে রপ্তানি আয় বেশ কিছুটা কমে গেছে।
এদিকে ঈদের আগের ১২ দিনে গড়ে ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। আর ঈদের পর এপ্রিলের শেষ তিনদিন গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ডলার। আর শুধু শেষ দিনেই রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ডলারের বেশি। অর্থাৎ সদ্য বিদায়ী এপ্রিল মাসের শেষ দিকে হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক হারে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সারা বিশ্বে তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য এবং বাইসাইকেলসহ সব খাত মিলে দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি করে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রপ্তানি আয় এসেছে ৪ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৪ হাজার ৫৬৭ কোটি ডলার। সেই হিসাবে ১০ মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩.৯৩ শতাংশ। আর একক মাস হিসেবে এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৯১ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩৯৫ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ০.৯৯ শতাংশ।
রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দুদিক থেকেই পিছিয়ে রয়েছে দেশের রপ্তানি খাত। চলতি অর্থবছরের জন্য ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি ছিল ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলার। এসময় রপ্তানি আয় এসেছে ৪ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলার। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় কম এসেছে ৬.৮৭ শতাংশ। এপ্রিলের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৭০ কোটি ডলার। যদিও এসময়ে রপ্তানি আয় এসেছে ৩৯১ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এপ্রিলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় কম এসেছে ১৬.৭৮ শতাংশ। রপ্তানিকারকরা বলছেন, ১০ মাসে তৈরি পোশাক খাতে খুব বেশি প্রবৃদ্ধি হয়নি। গড়ে মাত্র সাড়ে তিন শতাংশের মতো হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে এখনো যে সংকট আছে, তাতে পুরো অর্থবছর শেষে খুব ভালো কিছু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে না।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় এসেছে ৪ হাজার ৪৯ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি ডলার। সেই হিসাবে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪.৯৭ শতাংশ। যদিও এসময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় কম হয়েছে ৫.৭৭ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল খাতের রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ২৫.৩২ শতাংশ কমে ৭০ কোটি ২৫ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.১২ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে এই খাতটিতে। আলোচ্য সময়ে ৭৭ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় এসেছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭২ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে ১৩.৩২ শতাংশ। এসময়ে এই খাতের রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৮৭ কোটি ২৪ লাখ ডলার। যা ২০২৩ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১০০ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, এসময় পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিও কমেছে ৭.০৫ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৭১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে আয়ের পরিমাণ ছিল ৭৭ কোটি ০৮ লাখ ডলার। হিমায়িত এবং জীবন্ত মাছের রপ্তানি আয় ৩৭ কোটি থেকে কমে ৩২ কোটিতে নেমেছে। তবে এসময়ে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
অস্বাভাবিক রেমিট্যান্স: ঈদের আগে সাধারণত দেশের প্রবাসী আয় বেড়ে যায়। আর ঈদের পরে কিছুটা কমে। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিষয়টি পুরো উল্টো ঘটেছে। অর্থাৎ সদ্য বিদায়ী এপ্রিল মাসের শেষদিকে হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সদ্য বিদায়ী এপ্রিল মাসে বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরা ২০৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার সমান ১১০ টাকা ধরে)। এ মাসে দৈনিক গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ৭৪৮ কোটি টাকা।
তথ্য বলছে, এপ্রিলের শেষ তিনদিনেই রেমিট্যান্স এসেছে ৩৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ শেষ ৪ দিনে গড় রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ৫ লাখ ডলার করে। আর এপ্রিলের শেষ দিন রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ডলারের বেশি। অথচ ঈদের আগের ১২ দিনে দেশে এসেছিল ৮৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসেবে প্রতিদিন এসেছে ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। মাসের শেষ দিন হঠাৎ করে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১০ কোটি বা ২.১০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার, মার্চে প্রায় দুই বিলিয়ন এবং এপ্রিলে এলো দুই বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। এর আগে ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। রেমিট্যান্স বাড়লেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ছিল ১৯.৯৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ১১.৬৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বেকুব বুদ্ধিজীবিরা ঘন্টা জানে,আসলে রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে রেমিট্যান্সের এর রেট ডলার প্রতি ৬ টাকা হারে কমিয়ে দেয়া হয়েছিল তাই আমরা বেশিরভাগ প্রবাসীরা এইবার ঈদের পরেই টাকা পাঠাইছিলাম যার কারনে ২ টাকা করে বেশি পাইছিলাম,আসলে সরকার আর বুদ্ধিজীবিদের সাধারণ মানুষের সাথে যোগাযোগ নাই তাই তারা আসল খবর জানে না, ধন্যবাদ।
আমাদের বিশিষ্ট বুজুর্গ রা কন্ডিশন রুম এ বসেই বুজে যাই সব কিছু ....নির্ধারণ করে ফেলে কম্পিউটার গেম খেলে .... যারা প্রবাসী তারাই ভালো জানে কখন সে সক্ষম টাকা দিতে ... আর এদেশের বুজুর্গরা দিলে এক না দিলে আরেক বাণী প্রচার ....