ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

সাংবাদিকতার মাধ্যমে সমাজকে বদলে ফেলার স্বপ্ন দেখেছিলেন আবুল মনসুর আহমেদ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার

প্রখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমেদের কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করতে গিয়ে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন- সাহিত্যিক, সাংবাদিক কিংবা রাজনীতিবিদ যে নিরিখে আমরা আবুল মনসুর আহমেদকে বিচার করি না সব মাপকাঠিতেই তিনি আমাদের সামনে কালোত্তীর্ণ একজন ব্যক্তিত্ব হিসেবে ধরা দেবেন।

আবুল মনসুর আহমেদ সাংবাদিকতাকে শুধু পেশা হিসেবে নেননি। এর মাধ্যমে তিনি পুঁজিবাদী ও বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থাকে বদলে ফেলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সমাজের নিপীড়িত ও বঞ্চিত শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নকে আরও বৃহত্তর পরিসরে বাস্তবায়নের ইচ্ছা থেকেই পরবর্তী জীবনে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। 

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী মোজাফফর আহমেদ অডিটোরিয়ামে আবুল মনসুর আহমেদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত ‘শতবর্ষে আবুল মনসুর আহমেদের সাংবাদিকতার প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবুল মনসুর আহমেদের তাৎপর্যপূর্ণ জীবন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রখ্যাত এই অধ্যাপক বলেন- সাহিত্য ও সাংবাদিকতার যে অভূতপূর্ব মিশ্রণ তিনি ঘটিয়েছেন, সেটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। মেধা, অন্তর্দৃষ্টি ও অসমান্য লেখনী গুণে তিনি সাংবিদকতা পেশাকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন সেটি এখনো আমাদের মুগ্ধ করে। 

আজও যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে বর্তমান বিশ্বে শক্তভাবে গেড়ে বসা পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদী ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তিনি লিখতেন, কথা বলতেন। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে, সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার কর্মময় জীবন আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। 

অনুষ্ঠানে নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, আবুল মনসুর আহমেদ সাংবাদিকতা জীবনে প্রাসঙ্গিক ও বোধগম্য শব্দ, ভাষার ব্যবহারের পাশাপাশি  যেকোনো ঘটনাকে প্রচলিত মত ও বিশ্বাসের ঊর্ধ্বে উঠে মৌলিক ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখার যে  ধারা চালু করেছিলেন সেটি আজও সাংবাদিক সমাজের  অনুকরণীয়। কলকাতাকেন্দ্রিক উচ্চমার্গীয় হিন্দুশ্রেণি  সুনিপুণ কৌশলে ভাষাগত ব্যবহার ও দর্শনচর্চায় মুসলমান সমাজকে দমিয়ে রাখার যে চেষ্টা চালাতো তার বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন। তিনি এটা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে মুসলমানদের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা তৎকালীন ভারতে সম্ভব না। এর জন্য প্রয়োজন আলাদা একটি দেশ।

অনুষ্ঠানে আবুল মনসুর আহমেদকে নিয়ে লেখা নিজ প্রবন্ধ ‘আগুনের পরশমনি’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন লেখক ও গবেষক কাজল রশীদ শাহীন। প্রখ্যাত এই সাংবাদিকের সাংবাদিক জীবনে ধারাবাহিক আলোচনা করতে গিয়ে রশীদ শাহিন বলেন, ব্যাপক অধ্যায়ন, গবেষণামনস্ক মন, আপোষহীনতা ও সংবাদকে সব শ্রেণির মানুষের জীবনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক করে তোলার যে প্রচেষ্টা তার ভেতর আমরা দেখেছি সেটি বর্তমান সমাজে বিরল।

তিনি বলেন, প্রথম জীবনের ছোলতান, মাসিক মোহাম্মদী, দ্যা মুসলমান, খাদেম কিংবা সম্পাদক হিসেবে কৃষক, নবযুগ, ইত্তিহাদ পত্রিকা- সবখানেই আবুল মনসুর আহমেদ তার অমিত প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন।

বিজ্ঞাপন
চিন্তা-বিশ্বাস ও নিজস্ব দর্শন লেখনীতে ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে তিনি অনেক সময় মালিকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়েছেন। এর জন্য অনেক সময় তার চাকরি হারাতে হয়েছে, তবে তিনি কখনো সত্য প্রকাশে আপোষ করেননি। পুরো আয়োজনে অনলাইনের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক ও আবুল মনসুর আহমেদের সন্তান মাহফুজ আনাম।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status