ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

রোমিও, জুলিয়েট এবং পিলপিলের বয়স হওয়াতে কমে গেছে প্রজনন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবারmzamin

গত চার বছর ধরে সুন্দরবনের করমজল প্রজনন কেন্দ্রে কুমির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। সুন্দরবনের নোনা পানির কুমির রক্ষায় করমজলে তৈরি করা হয় কুমির প্রজনন কেন্দ্র। কুমিরের বয়স আর মেদ বাড়াকে দায়ী করছে বনবিভাগ। সুন্দরবনের নোনা পানির কুমির বিলুপ্তির শঙ্কায় ২৩ বছর আগে গড়ে ওঠে করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্র।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের এই চার বছরে এখানে কুমির থেকে কোনো ডিম আসেনি। যে কারণে বাচ্চাও হয়নি। সম্ভবত কুমিরের বয়স হয়ে যাওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে। তবে কুমিরের প্রজনন ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে করমজলের ভেতরে আরেকটি পুকুরে আরও ছয়টি নতুন কুমির ছাড়া হয়েছে। যার বয়স সাত থেকে আট বছর হয়েছে। এই ছয়টির মধ্যে দু’টি পুরুষ এবং চারটি নারী কুমির রয়েছে। এগুলো ১৪/১৫ বছর হয়ে গেলে ডিম পাওয়া যাবে।

বিজ্ঞাপন
বর্তমানে করমজলে ১০০টি কুমিরের বাচ্চা রয়েছে। দু’টি মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল এবং পুরুষ কুমির রোমিওকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে কেন্দ্রটি। ডিম থেকে বাচ্চা এবং তা লালন-পালন করে কিছুটা বড় হলে ছেড়ে দেয়া হয় নদীতে। তবে রোমিও জুলিয়েট আর পিলপিলের এখন বয়স হয়েছে। কমে গেছে প্রজনন ক্ষমতা। যাতে প্রভাব পড়েছে উৎপাদনে। বনবিভাগ বলছে, কেন্দ্রের অপ্রাপ্ত কুমিরে প্রজনন ক্ষমতা হতে সময় লাগবে ১২ বছর। তখন ডিম পাড়া শুরু করলে কুমিরের বাচ্চা পাওয়া যাবে। বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় সিডরে ভেসে গেছে ৭৫টি কুমির। এ ছাড়া বনের চিতা বিড়াল মেরে ফেলেছে ৬২টি বাচ্চা। খাদ্যে পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। তবে প্রজনন বাড়াতে পারলে করমজল থেকে কুমির রপ্তানির সম্ভাবনা বাড়তে পারে।

সূত্র জানায়, সুন্দরবনের দুবলারচরে ১৯৯৭ সালে লবণ পানি প্রজাতির কুমির ধরা পড়ার পর স্বপ্ন দেখা শুরু করে সুন্দরবন বিভাগ। তারা তখন কুমিরের বংশ বৃদ্ধির প্রাথমিক কাজ শুরু করে। এরপর ২০০২ সালে চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে আট একর বনাঞ্চলে কুমির প্রজনন কেন্দ্র চালু করে। বন বিভাগের তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত এই প্রজনন কেন্দ্রের জন্য সে সময় ব্যয় ধরা হয় ২৩ লাখ টাকা। বন কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, ২০০২ সালে প্রজনন কেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলেও বাচ্চা দেয় তিন বছর পর ২০০৫ সালে। ২০০৭ সালে ১৫ই নভেম্বর সুপার সাইক্লোন সিডরে এই কেন্দ্রের ৭৫টি কুমিরকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এরইমধ্যে ২০৬টি বড় কুমিরের বাচ্চা সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে দুই রাতে এই প্রজনন কেন্দ্রের শেডের নেট ভেঙে একটি ‘চিতা বিড়াল’ ৬২টি কুমিরের বাচ্চা মেরে ফেলে ও খেয়ে ফেলে। এরপরের বছর করমজল কেন্দ্রের দু’টি মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল ৯১টি ডিম পাড়লেও তা থেকে একটিও বাচ্চা ফোটেনি।
 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status