দেশ বিদেশ
বেহাত হওয়া তথ্যের পরিমাণ জানাতে পারেনি তদন্ত কমিটি: পলক
স্টাফ রিপোর্টার
২৫ জুলাই ২০২৩, মঙ্গলবারজন্মনিবন্ধন ওয়েবসাইট থেকে নাগরিকদের কী পরিমাণ তথ্য বেহাত হয়েছে তা তদন্ত কমিটি খুঁজে বের করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্তদের গাফিলতি থাকলেও তাদের শাস্তির সুপারিশ করা হয়নি বলে জানান তিনি। গতকাল আইসিটি বিভাগে ওয়েবসাইটের তথ্য ফাঁস বিষয়ে পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দোষীদের শাস্তি কিংবা দায়মুক্তি দেয়া হবে কিনাÑ তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে। আমরা তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়) প্রতিনিধিকে জানিয়েছি। তিনি অন রেকর্ড এই প্রতিবেদনের যথার্থতা গ্রহণ করেছেন এবং সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। পলক বলেন, কেউ যদি ৫ মিলিয়ন ডাটা উন্মুক্ত হওয়ার কথা বলে থাকে সেটি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ওই কর্তৃপক্ষের ফ্রন্ট এন্ডে কী পরিমাণ তথ্য ছিল এটি জানতে পারলেই বোঝা যাবে কী পরিমাণ তথ্য উন্মুক্ত অবস্থায় ছিল। তিনি বলেন, তবে সেই ওয়েবসাইটের লগ সার্ভার না থাকায় সঠিকভাবে জানা যায়নি ঠিক কী পরিমাণ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে জন্ম ও মৃত্যু মিলিয়ে মোট ২২ কোটি নাগরিকের তথ্য রয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে কাউকে দায়ী করা হয়নি।
এখানে কাউকে দায়ী করা বা দোষারোপ করা উদ্দেশ্য ছিল না। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না হয়, যেন তথ্যের আদান- প্রদানের সংস্কৃতি গড়ে ওঠে সে কারণেই এমন করা হয়েছে। তাদের একজন মাত্র প্রোগ্রামার। তার পক্ষে সবকিছু বুঝে নেয়াও কঠিন ছিল। তবে পুরো প্রতিবেদন আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী এবং সচিব বরাবর পাঠিয়েছি। এ সময় মামলা দায়েরের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পলক বলেন, এই ঘটনায় যে ভুক্তভোগী তাকেই মামলা করতে হবে। তারা মামলা করবেন কিনা, সেটা এখন তাদের বিষয়। তদন্তে আমরা পেয়েছি, ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশিত হওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের কারিগরি দুর্বলতা মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং তাদের টেকনিক্যাল টিমের সঙ্গে তদন্ত পর্যালোচনা এবং অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়, যথাযথ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন লোকবল না থাকায় তাদের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনসমূহ যথাযথভাবে তদারকির অভাব পরিলক্ষিত হয়। পরবর্তীতে যে এমন হবে না- এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।
এজন্য আমাদের সবাইকে আরও সচেতন থাকতে হবে। কাউকে শাস্তি দিতে হলে কোন আইনে দিতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে এই প্রতিমন্ত্রী বলেন- এটি সম্পর্কে আমার ধারণা নেই। তথ্য ফাঁস হওয়াতে আসন্ন নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, নাগরিকদের তথ্য ফাঁসের ঘটনা নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এখানে ভোটার আইডির কোনো তথ্য ছিল না। এখানে শুধু জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য ছিল। আঙ্গুলের ছাপ বা রেটিনার তথ্য আলাদা সার্ভারে থাকায় তা সুরক্ষিত আছে। তিনি বলেন, বড় ধরনের সাইবার আক্রমণের শিকার হতে পারি। সে কারণে সবাইকে সচেতন হতে হবে। রাষ্ট্রীয়ভাবেও হতে পারি। ইউক্রেন, ইরান, এস্তোনিয়াও সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছিল। মেধাবী সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টদের কাজে লাগাবো। যে সব হ্যাকারদের মোটিভ ও ইনটেনশন ভালো তাদের কাজে লাগাবো। পলক বলেন, মিস্টার ভিক্টর মেইল পাঠিয়েছিল এটিও সত্যি আবার এড্রেস করা হয়নি এটিও সত্যি। আমরা তাকে প্রশংসাপত্র দিয়ে জানিয়েছি ‘তুমি বাংলাদেশের বন্ধু, তুমি আমাদের শুভাকাক্সক্ষী’।