ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঈদ আনন্দ ২০২৩

সোশ্যাল মিডিয়া ও ফেক নিউজ

পরিতোষ পাল

(১১ মাস আগে) ২২ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন

mzamin

সোশ্যাল মিডিয়াতে একদিকে যেমন মানুষের স্বার্থে কাজ করেন এমন সংগঠন ও গোষ্ঠী জনসংযোগ, প্রচার ও জনমত সংগঠিত করার কাজে শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে এটিকে ব্যবহার করেন। অন্যদিকে আরেকদল সমাজে বিভেদ, বৈষম্য তৈরির কাজে এই গণমাধ্যমটিকে ব্যবহার করেন

আধুনিক বিশ্বে সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে মানুষ নিবিড়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েছে। দিনের কয়েক ঘণ্টা সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে না কাটানোর কথা তারা ভাবতেই পারেন না। এই তালিকায় নাবালক থেকে প্রৌঢ় সকলেই রয়েছেন। যোগাযোগ বা মতপ্রকাশের মাধ্যম হিসেবে মানুষের প্রথমেই মনে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়াকে।  বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার। 
তথ্য মতে, বিশ্বের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ ৪৭০ কোটি মানুষ নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন। ২০২০ সালের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, সে সময় বিশ্বজুড়ে মানুষ দিনে ২.২৪ ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়াতেই সময় কাটিয়েছেন। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার বহু ধরনের প্ল্যাটফরমের অবাধ ব্যবহারের কারণে তা আরও বেড়ে গিয়েছে নিশ্চিত ভাবে। 
ভারতের মতো দেশেও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। প্রত্যন্ত গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবার সম্প্রসারণের ফলে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। 
‘স্ট্যাটিস্টা’র দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, ভারতে ২০১৫ সালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতেন ১৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ হাজার। 
নতুন ডিজিটাল প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ম্যাসেঞ্জার প্রভৃতির ব্যবহারের ফলে সোশ্যাল মিডিয়া বিশ্বব্যাপী সংযোগের ক্ষেত্রে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। 
সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমরা কি বুঝি?
ব্লগ, মাইক্রো ব্লগ, উইকিস, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট, ফটো শেয়ারিং সাইট, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, পডকাস্ট থেকে শুরু করে ভার্চ্যুয়াল সব কিছুই সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে পড়ে।

বিজ্ঞাপন
এক সময় বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ার আবির্ভাব হলেও এখন প্রযুক্তির প্রসার ও বহু ধরনের অ্যাপ ও প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া এক প্রকার শক্তিশালী মিডিয়ার রূপ নিয়েছে। মত প্রকাশের সুবিশাল জগতে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে পুঁজিনির্ভর প্রযুক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় সোশ্যাল মিডিয়াকে জনপ্রিয় করার কাজটি চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। 
সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে,  ফেসবুককে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ ব্যবহার করেন। সংখ্যার হিসাবে ২৯৬ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। এরপরে রয়েছে ইউটিউব। এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২৫২ কোটি। হোয়াটস অ্যাপ ব্যবহার করেন ২০০ কোটি মানুষ। ইনস্টাগ্রামও একই সংখ্যক মানুষ ব্যবহার করেন। উই চ্যাট ও টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ বিলিয়নের উপরে। 
নিশ্চিতভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া বৃহত্তর অংশের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তাছাড়া গোটা বিশ্বে খবর সরবরাহ করার ক্ষেত্রেও এর সুবিশেষ ভূমিকা রয়েছে। গ্লোবাল ওয়েব ইনডেক্স অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ৪৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফরম থেকেই খবর দেখেন বা জানেন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে একদিকে যেমন মানুষের স্বার্থে কাজ করেন এমন সংগঠন ও গোষ্ঠী জনসংযোগ, প্রচার ও জনমত সংগঠিত করার কাজে শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে এটিকে ব্যবহার করেন। অন্যদিকে আরেকদল সমাজে বিভেদ, বৈষম্য তৈরির কাজে এই গণমাধ্যমটিকে ব্যবহার করেন। 
তবে অপরিহার্য এই গণমাধ্যমটি বর্তমানে আর নির্ভরযোগ্য হিসেবে গ্রহণ করা যাচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ভুল খবর, বানানো খবর, উদ্দেশ্য প্রণোদিত খবর, গুজব, ও হিংসাত্মক নানা ধরনের ভিডিও সমাজমাধ্যমে প্রাধান্য বিস্তার করার ফলে ফেক নিউজের দৌরাত্ম্য বেড়ে চলেছে। এমনকি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সোশ্যাল মিডিয়াকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করছেন।
প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়াতে এমন সব খবর, ভিডিও আমরা দেখি যেগুলোর সত্য হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতার বশবর্তী হয়ে কোনোরকম যাচাই বাছাই না করেই তা ছড়িয়ে দেয়ার কাজ করেন। এমনকি নানা ধরনের গুজবও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মাধ্যমে পল্লবিত হয়ে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে নানা প্রান্তে। আর এভাবেই ফেক নিউজের জন্ম হয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। গত কয়েক বছরে ভারতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরম হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুক, টুইটার, ইউ টিউবের মাধ্যমে ফেক নিউজ স্টোরির সংখ্যা অসম্ভব ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। 
ফেক নিউজ নানা রকমের হতে পারে। মিস ইনফরমেশন, ম্যাল ইনফরমেশন ও ডিস ইনফরমেশন, এই তিন ধরনের ঘটনাই ঘটতে পারে। মিস ইনফরমেশন হলো এমন সব ভুল খবর যেগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করে ব্যবহারকারী প্রচার করে দেন। আবার ডিস ইনফরমেশনের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি খবরটি সত্যি জেনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা ছড়িয়ে দেয়ার কাজটি করেন। আর ম্যাল ইনফরমেশন অর্থ যে সব খবর সত্যি হওয়া সত্ত্বেও সেগুলো কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায় বা সংগঠনের ওপর আঘাত হানতে পারে বা রাষ্ট্রের ক্ষতি করতে পারে তা জেনেও প্রচার করা।  সোজা কথায়, তথ্যের অপব্যবহার করে বানানো খবর, মিথ্যা খবর, জাল খবর, মিথ্যা ভিডিও, মিম সবই ফেক নিউজের মধ্যে পড়ে। 
কিছু মানুষ আছেন যারা, রাজনৈতিক বা আদর্শগত বা ব্যবসায়িক স্বার্থে ফেক নিউজের প্রচারে সক্রিয় থাকেন। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোরও অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। আর তাই বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর আইটি সেল খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ভারতের শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টির আইটি সেলের এ ব্যাপারে অনেক দুর্নাম রয়েছে।
আবার একদল আছেন যারা জেনেবুঝেই মজা করার ছলে ফেক নিউজ ছড়িয়ে দেন। সকলেরই উদ্দেশ্য কে কতো আগে পৌঁছাতে পারবেন এবং অন্য পাঠককে প্রভাবিত বা চালিত করতে পারবেন। আসলে ইচ্ছাকৃতভাবেই ফেক নিউজ ছড়িয়ে দেয়ার কাজটি চলে। সেক্ষেত্রে অনেকে সত্যতা না জেনে বা কোনোরকম সত্য-মিথ্যা যাচাই করার চেষ্টা না করেই অন্যের কাছে দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছানোর কাজটি করেন। 
সোশ্যাল মিডিয়াতে ফেক নিউজের ব্যাপক প্রচারের ফলে গত এক দশকে ভারতে অসংখ্য অঘটন ঘটে গিয়েছে। বহু জায়গাতেই আঞ্চলিকভাবে ফেক নিউজ ও ভিডিও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে প্রচারের ফলে অসংখ্য দাঙ্গাও হয়েছে। 
২০১৩ সালে লাভ জিহাদের নামে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিউজ ও ভিডিও প্রচারের ফলে মুজাফ্ফরনগরে লিঞ্চিং ও ব্যাপক গণসংঘর্ষ ঘটেছিল। ২০১৮ সালে ভুয়া খবর ও ভিডিও ক্লিপ ছড়ানোর ফলে ভারতে ২০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। 
বিবিসি’র একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ছেলেধরার গুজবে ভারতে গত কয়েক বছরে ৩১ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে। শহরে শহরে অচেনা কাউকে দেখলেই ছেলেধরার গুজব রটিয়ে দেয়া হয়েছে ফেসবুক ও টুইটারের মাধ্যমে। 
কোভিড মহামারির সময়ে ভুয়া চিকিৎসা পদ্ধতি, জীবাণুর উৎসস্থান, লকডাউন জারির মতো অসংখ্য খবরে মানুষ রীতিমতো বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছিলেন। কোভিড মহামারির সময়ে ভারতে ফেক নিউজের সংখ্যা ২১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত তিন বছরে প্রায় ১৫২৭টি ফেক নিউজকে চিহ্নিত করা হয়েছে। 
ভারতে কাশ্মীর নিয়ে গত এক দশকে ফেক নিউজের রমরমা ভাব দেখা গেছে। এসব ক্ষেত্রে উস্কানির উদ্দেশ্য নিয়ে সিরিয়া বা ইরানের সিভিল ওয়ারের ছবি ও ভিডিও ক্লিপ কাশ্মীরের বলে প্রচার করা হয়েছে। 
অতি সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়া সংক্রান্ত একটি খবর আলোড়ন ফেলেছিল। ভারতের সব জাতীয় মিডিয়াতে খবর প্রচারিত হয়েছিল যে,  নোবেল মনোনয়ন কমিটির ডেপুটি অ্যাসলে তোজে বলেছেন, মোদি নোবেল শান্তি পুরস্কারের সম্ভাব্য প্রতিযোগী। পরে অবশ্য তোজে জানিয়েছেন, তিনি এমন কথা বলেন নি। সবটাই ভুয়া খবর। 
ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবও সক্রিয়
ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারের মাধ্যমেও ফেক নিউজ ছড়িয়ে দেয়ার কাজ চলে সুচতুরভাবে। বিশিষ্ট মার্কিন বিশেষজ্ঞ ওয়েন্ডি উডের মতে, ফেক নিউজ প্রচারের বিষয়টি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের নিজেদের কাঠামোর মধ্যেই রয়েছে। 
বিশ্বের নানা দেশের উদাহরণ থেকে জানা যায়, জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরমগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে দক্ষিণপন্থিদের পক্ষে কাজ করে। সন্ত্রাস, ঘৃণা ভাষণও ভুয়া নিউজ প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে অনেক সময়ই কাজ করে ফেসবুক, টুইটারের মতো প্ল্যাটফরমগুলো।  
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর শাসকদের আক্রমণের প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের  সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগ্নেস ক্যালামার্ড জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের  নির্বিচারে খুন, নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হয়। হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। এই সব ঘটনার কয়েক মাস আগে থেকেই ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা উস্কে দেয়ার কাজটি লাগাতারভাবে চালিয়েছে ফেসবুক। 
জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনও স্পষ্ট করে জানিয়েছে, সেদেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অথ্যাচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর। এক সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ঘৃণা ভাষণ, ভুয়া খবর ও গুজবের মাধ্যমে উত্তেজনা ছড়ানো এবং এর ফলে যত বেশি তিক্ততা ও বৈষম্য তৈরি হবে  সেখানে মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তিই হলো হামলে পড়ে সেগুলো গোগ্রাসে আত্মকরণ করা। এগুলো অবলম্বন করে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরমগুলোতে মানুষ যত বেশি সময় যুক্ত থাকবেন ততই লাভ হয় তাদের। 
বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, ঘৃণা ভাষণ, বিভেদ তৈরি হতে পারে এমন নিউজের প্রচার ফেসবুক, টুইটারের ব্যবসায়িক কৌশলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আর তাই এদের নজর থাকে ফেক নিউজ যাতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। 
কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও ইউটিউবারদের ভূমিকা
সোস্যাল মিডিয়াতে কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও ইউটিউবারদেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। নানা গঠনমূলক আলোচনা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার নানা কাহিনী তারা প্রকাশ করেন। এ থেকে মানুষ উপকৃত হন। কিন্তু এদের মাঝে লুকিয়ে থাকেন একদল এমন মানুষ যাদের কাছে দর্শক পাওয়াই বিশেষ লক্ষ্য। এই লক্ষ্যের পিছনে থাকে আর্থিক উপার্জন বা পুরস্কারের হাতছানি।
আর এই দলের মাধ্যমেই জন্ম নেয় নানা ধরনের ফেক নিউজ। এরাই নানারকম গুজব ও নীতিহীন কাজে ইন্ধন দেন। আবার নিম্নমানের, ভুয়া কুরুচিপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রচার করেন। সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি এদের কাছে সোনার পাথরবাটি। আর তাই সামাজিক অবক্ষয়ের নানা নজির এরা তৈরি করে চলেন। অপরাধমনস্কতাও এদের মধ্যে কার্যকর দেখা যায়।
তাহলে উপায় কি?
ফেক নিউজের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা সহজ কাজ নয়। ফেক নিউজ প্রচার বন্ধ করার কোনো আইনি বিধানও নেই। যা আছে ফৌজদারি আইনে। আর তাই সরকার যখনই ফেক নিউজের প্রতিক্রিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বিপন্ন হওয়ার অবস্থা তৈরি হয় তখন ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে অবস্থা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে ২০১৯ সালের নভেম্বরে ভারতের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক ফেক নিউজ প্রচার বন্ধ করার জন্য ২৪ ঘণ্টা নজরদারির লক্ষ্যে একটি ফ্যাক্ট চেক মডিউল তৈরির ভাবনা ভেবেছিল। পরে অবশ্য সরকারি খবরের সত্যতা যাচাই করার দায়িত্ব দেয়া হয় প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর ফ্যাক্ট চেকিং ইউনিটকে। 
এদিকে ফেক নিউজের মোকাবিলায় অসংখ্য ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট বা সংস্থা ইতিমধ্যেই গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন মিডিয়া হাউজেরও নিজস্ব ওয়েব চেকিং ব্যবস্থা রয়েছে। 
ফেক নিউজ নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষজনের অভিমত হলো, তৃণমূল স্তরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা অবলম্বন করা। কেরালা সরকার কান্নুরে সরকারি স্কুলগুলোতে ফেক নিউজ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করেছে। তবে আরও ব্যাপকভাবে ফেক নিউজের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমাজের সর্বস্তরে ভূমিকা পালন জরুরি বলে তাদের অভিমত। 
 

ঈদ আনন্দ ২০২৩ থেকে আরও পড়ুন

   

ঈদ আনন্দ ২০২৩ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status