আপন আলোয় মানবজমিন
আজ রুমী ভাই নেই
মারুফ কিবরিয়া, সাবেক স্টাফ রিপোর্টার, মানবজমিন
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বৃহস্পতিবার
মানবজমিন। শুধু একটি পত্রিকার নাম নয়। এই নামটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অজস্র ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতি। দিনটি ছিল ১০ই অক্টোবর ২০১৪। এই আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে নেয়ার প্রথম দিন। অভ্যর্থনা কক্ষে ফেরদৌসী আপা বসেছিলেন। জিজ্ঞেস করলেন কার কাছে যাবেন? উত্তরে বললাম বিনোদন বিভাগের রুমী ভাইয়ের কাছে। কাঁচের দরজা ভেদ করে বাঁ পাশে গিয়ে ঘুরে গিয়ে দাঁড়ালাম। সালাম জানিয়ে বললাম ভাইয়া আমার নাম মারুফ কিবরিয়া। দৈনিক যুগান্তরে কাজ করি। কম্পিউটারের কিবোর্ড চেপে লিখতে থাকা ব্যক্তিটি বেশ হাস্যজ্জোল চেহারায় তাকিয়ে বললেন, ওহ আপনি? বসেন। শুরু হলো আলাপচারিতা। একপর্যায়ে সিভি নিয়ে দেখা করতে যাওয়ার দিনই রিপোর্ট লেখায় বসিয়ে দিলেন তিনি। আর কেউ নন। আমাদের মোশাররফ রুমী ভাই। সবার কাছে মানবজমিনের বিনোদন সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। আমার কাছে আপাদমস্তক একজন নিউজম্যান। একটু রাগী ছিলেন, তবে মাথা ঠা-া হওয়ার পর সব ভুলে যেতেন। এমনভাবে মিশে যেতেন যেন কখনো কারওর উপর রাগ করেননি। ভালোবাসার মানবমিনের আজ রজতজয়ন্তী। সব সময়ের সাহসী এই পত্রিকাটিতে আমার ৭টি বছর কেটে গেছে। বিনোদন বিভাগে রুমী ভাইয়ের হাত ধরে মানবজমিনে আমার পথচলা। করোনাকালীন সময়ে নানা শারীরিক জটিলতায় তিনি প্রয়াত আজ। মানবজমিনকে ওউন করা এই মানুষটি আজ রজতজয়ন্তীতে নেই। সময় চলে যায়, রয়ে যায় স্মৃতিগুলো। মানবজমিনের সঙ্গে দীর্ঘ পথচলায় আমার অনেকটা সময় কেটেছে রুমী ভাইয়ের সঙ্গে। খুব মনে পড়ে তাকে।
দেশের প্রথম ট্যাবলয়েড পত্রিকা মানবজমিন। অনেকে বলেন, এটা সাংবাদিকদের আঁতুড়ঘর। দেশসেরা অনেক সাংবাদিক এই ঘর থেকে তৈরি। আমি দেশসেরা না হতে পারলেও একজন রিপোর্টার হিসেবে তৈরি করে দিয়েছে মানবজমিন। শুরুটা রুমী ভাই এর অবদান নেপথ্যে থাকলেও পরবর্তী সময়ে পত্রিকাটির অভিভাবক ও প্রধান সম্পাদক শ্রদ্ধেয় মতিউর রহমান চৌধুরী ভাইয়া ছিলেন আমাকে গড়ার কারিগর। বিনোদন থেকে রিপোর্টিংয়ে আসা তারপর ক্রাইম বিটে কাজ করা, একপর্যায়ে মানবজমিনের অনলাইনের হাল ধরা এবং আবার রিপোর্টিংয়ে ফিরে দুদক বিটে কাজ করা এর সবকিছুর পেছনে ছিলেন তিনি। শুধু দুদক নয়, সংবাদের নানা বিভাগে কাজ করিয়ে আমার পথচলাকে সুপ্রসারিত করেছেন মতিউর রহমান চৌধুরী ভাইয়া। ২৫ বছর বয়সী মানবজমিনের এই স্রষ্টার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। চির ঋণী।
সবশেষে বলতে চাই মানবজমিন বেঁচে থাকুক যুগ যুগ। এগিয়ে যাক ভালোবাসার পত্রিকাটি।