ঢাকা, ২ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার, ১৮ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ১০ রমজান ১৪৪৪ হিঃ

আপন আলোয় মানবজমিন

হৃদয়টা ওখানেই বাঁধা থাকুক

মনির হায়দার, নিউইয়র্ক প্রবাসী সাংবাদিক
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবারmzamin

ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত লাগে! তিন দশকের সাংবাদিকতা জীবন। কাজ করার সুযোগ হয়েছে অর্ধডজনেরও বেশি প্রতিষ্ঠানে। এরমধ্যে মানবজমিনে শারীরিক উপস্থিতি মাত্র কয়েক সপ্তাহের। আগের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিলাম বছরের পর বছর। তবু মানবজমিনেই কেন হৃদয়টা বাঁধা? 
সাংবাদিকতার দশা যা-ই হোক, পুঁজিপতিদের বিনিয়োগ-প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশে মিডিয়ার দৃশ্যমান চেহারাটা এখন বেশ জৌলুসপূর্ণ। চোখ ধাঁধানো অবকাঠামো থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রেই পুঁজির দাপট। এটা ঠিক, প্রতিযোগিতার বাজারে বড় পুঁজির বিনিয়োগ ছাড়া মিডিয়া দাঁড় করানো কঠিন। প্রায় অসম্ভব। যেকোন পেশায় বাড়তি বেতন-ভাতা এক স্বাভাবিক আকর্ষণ? সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে কেন? পেশাগত উৎকর্ষের আলোচনা ভিন্ন বিষয়। তবে বিগত দুই যুগে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বড় পুঁজির বিনিয়োগ যে নানা রকম আকর্ষণ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে সেটা অনস্বীকার্য। 
ব্যবসায়ী গ্রুপের বিনিয়োগ ব্যতীত সংবাদ প্রতিষ্ঠানের জন্ম এবং টিকে থাকার দৃষ্টান্ত সর্বত্রই বিরল।

বিজ্ঞাপন
পুঁজির যোগান ছাড়া এ ধরনের উদ্যোগ দুঃসাহসিকও বটে। বিস্ময়করভাবে মানবজমিন এমনই এক দুঃসাহসিক দৃষ্টান্ত হিসেবে রজতজয়ন্তী স্পর্শ করতে চলেছে! বাংলাদেশের মতো অনগ্রসর রাষ্ট্র ও সমাজে এটা নিঃসন্দেহে এক বড় ঘটনা।
পেশাদার রিপোর্টারের জীবন থেকে গণমাধ্যমের উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা অনেকেই করেছেন। কিন্তু সাফল্যের গল্প কি তেমন আছে? সেই ক্ষেত্রেও মানবজমিন এক বিরল ব্যতিক্রম। মতিউর রহমান চৌধুরী আজও আপাদমস্তক একজন রিপোর্টার।  পরিপূর্ণ সাংবাদিক। উদ্যোক্তা, প্রকাশক, সম্পাদক কিংবা প্রধান সম্পাদকের ওজনদার পদবি তার রিপোর্টারের সত্ত্বা কেড়ে নিতে পারেনি। যেকোন বিষয়ে রিপোর্ট লিখতে আগের মতোই নিঃসংকোচ তিনি। সাংবাদিকতার দায়বদ্ধতা কোথায় কতটুকু- তার জানা আছে অনেকের চেয়ে বেশি। এমন নেতৃত্বই মানবজমিনকে আলাদা করেছে অন্যদের চেয়ে। 
একের পর এক নিত্য নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্ম। নানা রকম সুযোগ-সুবিধার হাতছানি। রাতারাতি তারকা বনে যাওয়ার মওকা। ফুটবল-ক্রিকেটের দল বদলের মতো ঢাকাই মিডিয়ায় হাউজ বদলও এক চেনা দৃশ্য। এতে অস্বাভাবিকতার কিছু নেই। তবে পাশাপাশি ভিন্ন দৃশ্যপটও আছে। কিছু মানুষ নিয়েছেন ভিন্নপথ। তারা আজও সাংবাদিকতাটা করতে চান দায়বদ্ধতা বা কমিটমেন্টের জায়গা থেকে। বাড়তি সুযোগ-সুবিধার পথে ছুটতে তাদের সামনে কোনো বাধা ছিল না, এখনো নেই। মানবজমিনে সহকর্মীদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা ব্যক্তিগত জীবনের চাকচিক্য ও জৌলুসের পেছনে না ছুটে স্রেফ সাংবাদিকতাকেই আঁকড়ে থেকেছেন। আছে সীমাবদ্ধতা। আছে নানা রকম অপ্রতুলতা। সাংবাদিকতার বৈরী সময়। তবু তারা চেষ্টা করছেন টিকে থাকবার। টিকিয়ে রাখবার। এ এক কঠিন সংগ্রাম। এই সংগ্রামের কী কোনো শেষ আছে? হয়তো আছে। কিংবা নেই। তবু সংগ্রামটা জারি থাকুক। সহকর্মীদের জন্য সংগ্রামী অভিবাদন। বাস্তবে থাকি বা না-ই থাকি, নিজেকে সংগ্রামের অংশীদার ভাবতেই পছন্দ করি। সে কারণে মানবজমিনকেই মনে হয় নিজের ঠিকানা। হৃদয়টা ওখানেই বাঁধা থাকুক।

 

আপন আলোয় মানবজমিন থেকে আরও পড়ুন

আপন আলোয় মানবজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status