ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আপন আলোয় মানবজমিন

মানবজমিনে নেই কিন্তু পাঠে আছি

মাহমুদ কামাল, কবি ও লেখক
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার
mzamin

মানবজমিনে থাকলে কখনো বুড়ো হবো না- এই কথাটি বলেছিলাম একুশ বছর আগে পত্রিকার প্রতিনিধি সম্মেলনে। 
মানবজমিনের সঙ্গে আমার আত্মীয়তা হঠাৎ করে। চিরসবুজ এই পত্রিকার সঙ্গে প্রাথমিক সম্পর্ক ছিল পাঠক হিসেবেই। সাংবাদিকতায় এসেছিলাম পরিণত বয়সে। মানবজমিন দিয়েই শুরু মানবজমিন দিয়েই শেষ। সাহিত্যে সমর্পিত হলেও সাংবাদিকতা করবো কখনো ভাবিনি। অগ্রজ সাংবাদিকদের খুব কাছে থেকে দেখেছি। অনুজেরাও ছিল চোখের নজরে। সাংবদিকতা নিয়ে তাদের দৌড়ঝাঁপ দেখে বিস্মিত হয়েছি। কখনো ইচ্ছে হয়নি এই কঠিন বিষয়ের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে। কলেজে অধ্যাপনা এবং সাহিত্যচর্চার পরও কিছু অলস সময় নির্বিবাদে খরচ হতে থাকে।

বিজ্ঞাপন
মনটোনাস এই শহরে এভাবেই চলছিল দিনলিপি। হঠাৎ করেই জীবনপঞ্জিতে ‘সাংবাদিক’ শব্দটি জায়গা পেয়ে যায়। এর পেছেনে রয়েছে একটি গল্প। এই গল্পের নায়ক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আমার কলেজ জীবনের শিক্ষক এবং সেই সময়ে পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক কবি সাযযাদ কাদির (১৯৪৭-২০১৭)। গল্পের সময়ে তিনি ছিলেন পিআইবি’র পরিচালক। এ ছাড়া রয়েছে আরও একটি চরিত্র। অনুজ সাংবাদিক ফিরোজ মান্না। গল্পটি এ রকম: মানবজমিনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ছিল বজলুর রশিদ। তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ায় তখন কোনো জেলা প্রতিনিধি ছিল না। কবি সাযযাদ কাদির টাঙ্গাইলের কৃতী সন্তান। তিনি আদেশের সুরে আমাকে মানবজমিনে আবেদন করতে বলেন। তিনি নিজেই তার ছাত্রের দরখাস্ত মানবজমিনে জমা দিলেন। বললেন, নিয়মিত খবর পাঠাও। 
১৯৮৮ সালের অক্টোবরের কোনো একদিন ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা যাই। সঙ্গে জনকণ্ঠ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ফিরোজ মান্না। মান্না কিছুদিন মানবজমিনে এবং দীর্ঘদিন জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছে। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে যেতে অমরা স্কুটারে চেপেছি। হঠাৎ করেই প্রচণ্ড বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে ভালো একটি জায়গায় আমরা থেমে যাই। বেরিয়ে দেখি মানবজমিন পত্রিকার অফিস। ভালোই তো হলো! ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা হয় রাজু আলাউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি মানবজমিনের সাহিত্য পাতা দেখেন। আমাদের দেখে শান্ত মানুষটি স্বভাব-বিরুদ্ধ হৈচৈ করে ওঠেন। নানান আলাপে যখন বলি মানবজমিনে আমার সিবি জমা আছে তখুনি রাজু বলেন মতি ভাই অফিসে আছেন এখনই দেখা করুন। সাহস নিয়েই প্রধান সম্পাদকের কক্ষে প্রবেশ করি। ফিরোজ মান্না মতি ভাইয়ের পূর্ব পরিচিত। প্রথম দেখাতেই তিনি আমাকে আপন করে নিলেন। মতি ভাই অনেক সাংবাদিক সৃষ্টি করেছেন। তিনি যে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত পরবর্তীতে প্রতি পদে পদে বুঝেছি। দ্রুতই তিনি বের করতে পারেন  এক্সক্লুসিভ নানা বিষয়। তিনি যখন ইত্তেফাকের কূটনৈতিক রিপোর্টার তখন থেকেই তার তুখোড় সাংবাদিকতার সঙ্গে পাঠক হিসেবে আমার পরিচয়। তার একটি কখা মনের মধ্যে গেঁথে রেখে সাংবাদিকতা শুরু করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, ‘সাংবাদিকতার প্রথম শর্ত কলম এবং সাহসের সমন্বয়।’ শুরু হয়ে গেল জীবনের নতুন অধ্যায়। দ্রুতই নিয়েগ পেয়ে যাই। এর পর স্টাফ রিপোর্টারে পদোন্নতি। বেশ কয়েকবার সেরা দশ।
শুরুতে বলেছি, মানবজমিনে থাকলে কখনো বুড়ো হবো না। এখন আমি মানবজমিনে নেই কিন্তু পাঠে আছি। তবে বুড়ো হয়ে যাচ্ছি খুব দ্রুতই।
 

আপন আলোয় মানবজমিন থেকে আরও পড়ুন

   

আপন আলোয় মানবজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status