ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আপন আলোয় মানবজমিন

পেশাদার সাংবাদিক গড়ার আঁতুড়ঘর ‘মানবজমিন’

রাকিবুল ইসলাম মুকুল, প্ল্যানিং এডিটর, মাই টিভি
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার
mzamin

হঠাৎ করেই চোখে পড়লে- সহকর্মী নেবে বাংলাদেশের প্রথম এবং আলোচিত ট্যাবলয়েড দৈনিক মানবজমিন। সাংবাদিকতার নেশা ছিল। পেশা হিসেবে নেয়ার এটিই মোক্ষম সুযোগ। আবেদন করলাম। লিখিত এবং মৌখিক-দুই পরীক্ষার প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে ভালোভাবেই টিকে গেলাম। সাক্ষাৎকারে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী জিজ্ঞেস করলেন, কোন সেক্টরে কাজ করতে চান। এক নিঃশ্বাসে বলে ফেললাম ক্রাইম। মতি ভাই যদিও বললেন-ক্রাইম কেন? উত্তরে সন্তুষ্ট হয়ে তিনি সুযোগ দিলেন। যাত্রা হলো শুরু। মানবজমিনে তখন ঢাকার আজকের বহু সেরা ও তারকা সাংবাদিকের সমাহার।

বিজ্ঞাপন
তাদের ভিড়ে নিজেকে গড়তে ও নিজের জায়গা করে নিতে উদয়াস্ত ছোটা শুরু হলো। অল্পদিনেই পাকা জহুরির মতো প্রিয় মতি ভাই বুঝে গেলেন-আমাকে দিয়ে আরও অন্য বিটে বা সেক্টরেও ভালো কাজ করানো যাবে। উৎসাহ দিলেন। হাতে-কলমে শেখালেন সাংবাদিকতা। অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক থেকে ভ্রাম্যমাণ ও স্পট রিপোর্টিং, বিভিন্ন সেক্টরের সাড়া জাগানো বিশেষ প্রতিবেদন, সচিবালয়, সংসদ-সবখানেই মতি ভাই ছোটালেন। আইডিয়া দিয়ে আমার পথচলাকে সমৃদ্ধ করলেন। আমার হাত ধরেও এলো হুমায়ূন আহমেদ-গুলতেকিনের তালাকের আলোচিত স্কুপ নিউজ। আমার হাত ধরেই এলো সরকারি মহলে তোলপাড় করা রংপুরের মঙ্গা নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনসহ অসংখ্য বিশেষ প্রতিবেদন। তখন মোবাইল ফোন ছিল না। ইন্টারনেট ছিল খুবই সীমিত পরিসরে। ছোট্ট ইয়াসিকা ক্যামেরা নিজেই বগলদাবা করে সাতসকালে ছুটে গেছি রংপুরের গঙ্গাচড়ার তিস্তার দুর্গম চরে। মাইলের পর মাইল চড়া রোদে চরের বালুতে হেঁটে হাজির হয়েছি একেবারে গহীন গ্রামের মানুষগুলোর কাছে। কলার থোড়, কচু খেয়ে কীভাবে তারা বেঁচে আছেন কোনোমতে-তুলে এনেছি তাদের দিনলিপি। অভুক্ত, অর্ধভুক্ত সেই মানুষগুলো চরম সেই মুহূর্তেও রিলিফ চাননি। তারা চেয়েছেন কাজ। কাজের বিনিময়ে বেঁচে থাকার অধিকার। সেসব পরিবারে ছোট ছোট শিশুগুলোর কঙ্কালসার চেহারা আর করুণ চাহনি এখনো চোখের সামনে ভাসে। মনে হয় এই পৃথিবীর সমন্ত দুঃখ, সমন্ত সরলতা জমে আছে তাদের চোখের সামনে। এখনো চোখ বুঁজলে সেই দিনগুলো ভেসে ওঠে মানসপটে। হারিয়ে যাই নগরীর বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি ছাড়িয়ে নগরে-বন্দরে। ভেসে ওঠে হাজারো মানুষের মুখচ্ছবি। তাদের কথা শুনি। তাদের চোখের ভাষা পড়ি। মানবজমিন ছেড়ে আসার দেড়যুগ হয়ে গেল। এতদিনে দেশ থেকে মঙ্গা দূর হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেছে দেশ। আয় বেড়েছে মানুষের। তবুও মনে হয় কেমন আছেন আমার সংবাদ প্রতিবেদনের সেই মানুষগুলো! মানবজমিন- বিশেষ করে প্রধান সম্পাদক মতি ভাই হাতে-কলমে যা শিখিয়েছেন চলার পথে তাকেই পাথেয় করে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রিয় প্রতিষ্ঠানের রজতজয়ন্তীতে অভিনন্দন। এগিয়ে যাক মানবজমিন। দেশের গণমাধ্যমের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাক মানবজমিনের নাম।

 

 

আপন আলোয় মানবজমিন থেকে আরও পড়ুন

   

আপন আলোয় মানবজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status