ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আপন আলোয় মানবজমিন

আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে মানবজমিন

আসাদুজ্জামান (ওবায়েদ অংশুমান), জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, প্রথম আলো
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার
mzamin

ছোট্টবেলায় স্বপ্ন দেখতাম; বড় হয়ে আমি মস্ত বড় ডাক্তার হবো। আমাদের গ্রামে একজন এমবিবিএস ডাক্তার ছিলেন। দাদুর মুখে ওই ডাক্তার কাকার অনেক প্রশংসা শুনতে শুনতে বড় হয়েছি। ডাক্তার হতে হলে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে হয়। আমিও মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করলাম। ভর্তি হলাম যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেয়া এই আমি চলে এলাম যশোর শহরে। সেখানে পেলাম একজন অকৃতিম বন্ধু। নাম দেলোয়ার। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি সে সাহিত্যের সমঝদার একজন মানুষ।

বিজ্ঞাপন
আমরা একই মেসে থাকতাম। মেসে তখন নিয়মিত খবরের কাগজ পড়ি। দিন-দুনিয়ার খবর রাখতে শুরু করি। তখন  আমি  সাহিত্য, লেখালেখিতে ঝুঁকে পড়ি। সময় পেলে ঢু মারি যশোর পাবলিক লাইব্রেরিতে। মানবজমিন, প্রথম আলোসহ প্রথম সারির সব  দৈনিক পড়া একটা সময়  নেশায় পরিণত হলো। সেই আমি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করে চলে এলাম ঢাকায়। যশোরে থাকতে লেখালেখির ভূত ঢাকায় এসে আরও বেড়ে গেল। সময় পেলে শাহবাগের আজিজে সাংবাদিক, সাহিত্যিকদের আড্ডায় অংশ নিতাম। সেখানেই পরিচয় কবি ও সাংবাদিক সৌমিত্র দেব দাদার সঙ্গে। দাদা তখন মানবজমিনের সহকারী সম্পাদক। ২০০৪ সালের  শেষের  দিকে সৌমিত্র দাদার সঙ্গে একদিন গেলাম শাহবাগের মানবজমিন অফিসে। তখন অবাক বিস্ময়ে সংবাদপত্র অফিসের সবকিছু  দেখতে থাকি। এরপর পরিচয় কাজল ঘোষ দাদা, শামীমুল হক ভাই, কাজী আদর আপা, সাজ্জাদ কাদির ভাইসহ অন্যদের সঙ্গে। সৌমিত্র দা, কাজল দাদাদের উৎসাহে আমার প্রিয় দৈনিক মানবজমিনে টুকটাক  লেখালেখি শুরু করলাম। অর্থাৎ মানবজমিনেই আমার সাংবাদিকতার হাতেখড়ি। মানবজমিনই আমার সাংবাদিক পরিচয়ের জন্মদাতা। পত্রিকার পাতায় নিজের নামে প্রথম লেখা প্রকাশের যে অন্যরকম অনুভূতি, সেই সুযোগও দিয়েছে মানবজমিন। মানবজমিনের কাছে আমি চিরঋণী। আমার প্রথম সম্পাদক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান  চৌধুরী; প্রিয় মতি ভাই। বাংলাদেশের বহু নন্দিত সাংবাদিকের হাতেখড়ি প্রিয় সম্পাদক মতি ভাইয়ের হাতে। আমারো হাতেখড়ি মতি ভাইয়ের কাছে। মতি ভাইয়ের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা।
সময়ের ব্যবধানে যখন মাঠের সব সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচয় হতে লাগলো; তখন আরও জানলাম মানবজমিনের ইতিহাস। বাংলাদেশের বহু খ্যাতিমান সাংবাদিক জন্ম দিয়েছে প্রিয় মানবজমিন। ওয়ান-ইলেভেনের  সেই কঠিন সময় আমি দেখেছিলাম; আইন ও মানবাধিকার রক্ষায় মানবজমিনের বলিষ্ঠ ভূমিকা।  দেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্র, সাধারণ মানুষের অধিকার যাতে ভূলুণ্ঠিত না হয়, সেজন্য দেশসেরা সব লেখক, অর্থনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধিদের সাহসী সব  লেখা ছাপা হতো নিয়মিত। বিশেষ করে ‌‘জনতার চোখ’।  সেই সময় সাহস নিয়ে জনতার চোখে যেসব লেখা ছাপতো; তা বহু বড় বড় কাগজেও ছাপা হতো না। আমার ১৮ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে মানবজমিনের অবদান অনেক। মানবজমিন আমাকে সাংবাদিক বানিয়েছে। প্রতিনিয়ত মানবজমিন জনতার চোখ হয়ে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। গ্রাম থেকে শহর, অধিকারহারা মানুষের খবর তুলে ধরছে মানবজমিন। আমি আশা করি, মানবজমিন নানা অধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে যুগের পর যুগ বেঁচে থাকবে। জয়  হোক মানবজমিনের।

আপন আলোয় মানবজমিন থেকে আরও পড়ুন

   

আপন আলোয় মানবজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status