ফুটবল বিশ্বকাপ
ম্যাচ বিশ্লেষণ
ইংল্যান্ড বনাম এমবাপ্পের লড়াই
মামুনুল ইসলাম, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক
১০ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবারশুরু থেকেই বলে আসছি যে কাতার বিশ্বকাপে শিরোপার অন্যতম দাবিদার ইংল্যান্ড। তারা দুর্র্র্দান্ত দল। ডিফেন্সে ভরসার দুই নাম হ্যারি ম্যাগুয়ের ও জন স্টোন্স। দুই ফুলব্যাকে যথা ওয়াকার, ট্রিপিয়ার ও লুক শ’ এর মতো তারকা। মিডফিল্ডে তরুণ তুর্কী বেলিংহামের পাশাপাশি রয়েছে রাইস। ফরোয়ার্ড লাইনআপে থাকবেন সাকা, রাশফোর্ড, স্টার্লিং, ফোডেন ও হ্যারি কেইনরা। দুর্দান্ত ফর্মে আছে তরুণ বুকায়ো সাকা। ফ্রান্সের মতো ইংল্যান্ডও ও ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে খেলে থাকে। ফলে দুই কোচের ট্যাকটিকাল ব্রিলিয়ান্সের একটা যে দুর্দান্ত লড়াই অপেক্ষা করছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের অন্যতম শক্তি ফরোয়ার্ড এমবাপ্পে।
আজ গোটা ইংল্যান্ড দলকে তার দিকে নজর রাখতে হবে। বলতে পারেন এমবাপ্পেকে ঠেকাতেই লড়াই করতে হবে ইংলিশদের। কোয়ার্টার ফাইনালেই দেখা যাবে আরেকটি ফাইনাল। দুই দলের একটিকে আজ বাদ পড়তে হবে। আজ আরেক ম্যাচে আমি মরক্কোর চেয়ে পর্তুগালকে এগিয়ে রাখবো। কারণ, তাদের দল কিন্তু রোনালদোকে ছাড়াও দুর্দান্ত। শুধু তাই নয়, এই দলটিতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগসহ বেশ কয়েকটি বড় ক্লাবে খেলা ফুটবলাররা আছেন। রামোস, ব্রুনো, বারনার্দো, ফেলিক্স তাদের অন্যতম। আর মরক্কো যেভাবে খেলছে তাদের টিকে থাকতে হলে চমকই দেখাতে হবে। অন্যদিকে এবারের ফ্রান্স দলটির দিকে তাকান নিঃসন্দেহে বিশ্বের সেরা স্কোয়াডের একটি। ২০১৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নদের বেশির ভাগই এই দলে আছে। পাভার্ড, কুন্দে, ভারান, উপামেকানো, থিও হার্নান্দেজ কে নিয়ে গড়া ব্যাকলাইনও বিশ্বের অন্যতম সেরা।
মিডফিল্ডে চুয়ামেনি ও র্যাবিও এবং ফরোয়ার্ড লাইনে দেম্বেলে ছাড়াও আছেন এমবাপ্পে। ইংল্যান্ডের যদি তাদের বিপক্ষে লড়াই করতে হয় এমবাপ্পে ছাড়াও তাদের গোটা ফ্রান্স দলের ওপর নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে হবে। তাদের জন্য বড় বিষয় হলো হ্যারি কেইন গোল পেয়েছে। আমি বলবো যে কারণে ইংল্যান্ডের এবার শিরোপার দাবি তা তাদের এই ম্যাচেও টিম হিসেবে প্রমাণ রাখতে হবে। আরেকটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের আগে যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে নিয়ে বেশ কথা হচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় না এমন একটি ম্যাচে এগুলো খুব বড় হয়ে মাঠে প্রভাব ফেলবে। কোচ যদি মনে করেন যে ক্রিস্টিয়ানোকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিবে তাও তাদের দল দারুণ শক্তিশালী। বিশেষ করে দলটির আক্রমণ ভাগ দারুণ। মিড ফিল্ডের ক্ষমতাও অসাধারণ। কিন্তু মরক্কোর যে শক্তি সেটি হলো টিম ডিফেন্ডিং। তারা গোটা দল যেভাবে রক্ষণভাগকে শক্তিশালী করে তোলে তা যে কোন দলের জন্যই ভাঙা কঠিন। এই বিশ্বকাপে শুরুতে যে অঘটন হয়েছে গ্রুপ পর্বে তা কিন্তু ধিরে ধিরে কমে এসেছে। বড় দলগুলোই তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রভাব খাটিয়ে জয় তুলে নিয়েছে। মরক্কোর পুরাটাই ছিল দলগত চমক। শেষ ম্যাচে সেটি তাদের কতটা অব্যাহত থাকবে তার জবাব মিলবে মাঠে।
অনুলিখন: ইশতিয়াক পারভেজ