কাতার থেকে
মেসি, নেইমার, এমবাপ্পে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে, রোনালদো কোথায়?
৮ ডিসেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার

তিন সুপারস্টার মেসি, নেইমার এবং এমবাপ্পে। এখন ফুটবল দুনিয়ায় আলোচনার শীর্ষে। থাকার কথা ছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। মঙ্গলবার তার কপাল পুড়েছে লুসাইল স্টেডিয়ামে। তিনি এখন অন্য আলোচনায়। কোচ ফার্নান্দো সান্তোস তাকে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে ড্রপ করেন। প্রথম একাদশে তার নামই ছিল না। সাইডলাইনে বসে খেলা দেখেছেন। সতীর্থদের গোলবন্যার সময় তিনি ছিলেন মাঠের বাইরে। তার পরিবর্তে নামানো হয় গনসালো রামোসকে। বেনফিকার এই স্ট্রাইকার মাঠে নেমেই হ্যাটট্রিক করে বসেন। এরপর রোনালদোর অবস্থাটা কী? প্রেসবক্স থেকে দেখছিলাম রোনালদো দু’একবার বাইরে এসে উল্লাসে যোগ দিচ্ছেন, কিন্তু চোখে-মুখে তার বিরক্তির ছাপ। নেই কোনো আনন্দ। হবারই কথা। তার প্রয়োজন কি ফুরিয়ে গেল তাহলে! পর্তুগালের আনন্দের দিনে রোনালদোর কেন এই অবস্থা? এর জন্য দায়ী রোনালদো নিজেই। কোনো কোচের সঙ্গেই তার বনিবনা হয় না। তিনি কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলা মানেন না। সর্বশেষ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ এরিক টেন হাগের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে ক্লাব ছেড়েছেন। পর্তুগিজ কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের সঙ্গেও তার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। এটা এখন লুকোছাপার বিষয় নয়। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে খেলার সময় রোনালদোর আচরণ নিয়ে সান্তোস খুব বিরক্ত ছিলেন। রোনালদোর বয়স হয়েছে তাই বলেই কি তিনি ছিটকে পড়লেন? না-কি নিয়ম-শৃঙ্খলার বরখেলাপ করার কারণে তার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটেছে। মেসি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ফুটবল দুনিয়ায় বলাবলি হচ্ছে, ৩৬ বছর আগে যা ঘটেছিল তাই কি ঘটতে যাচ্ছে? কিংবদন্তি ম্যারাডোনা মেক্সিকো বিশ্বকাপ জয় করেছিলেন। সেরকম কি কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি তিনি? তার অগণিত ভক্তরা এমনটাই আশা করছেন। বলছেন, তার নেতৃত্ব তুলনাহীন। খেলায় যেমন, খেলার বাইরেও তেমন। বয়স কোনো ফ্যাক্টর নয় মেসির কাছে। মাঠে এখনো মনে হয় টগবগে যুবক। বল নিয়ে নিজে খেলা করেন, অন্যকে দিয়ে খেলাতে ভালোবাসেন। কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবেন নেদারল্যান্ডসের। নেদারল্যান্ডসে আলোচিত কোনো সুপারস্টার নেই। তবে রয়েছে টিম স্পিরিট। কোচ লুইস ভ্যান গালের বাহিনী চমকের অপেক্ষায়। ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার। পিএসজি’র এই তারকা ইনজুরি কাটিয়ে রাউন্ড সিক্সটিনে ফিরেই গোল পেয়ে গেছেন। তাই তাকে নিয়েও আলোচনার কমতি নেই। ব্রাজিল টিমটা এবার খুবই সংঘবদ্ধ। অনেকেই বলছেন, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সেমিফাইনাল হয়ে যায় কি-না শেষ মুহূর্তে। যদিও ফুটবলে কোনো প্রেডিকশন করা অনেকক্ষেত্রেই কঠিন। টেবিলের অঙ্ক মেলে না। মাঠে অনেক কিছুই পাল্টে যায়। কিলিয়ান এমবাপ্পে, ফুটবল দুনিয়ার নতুন বিস্ময়। ফরাসি এই তারকা ইতিমধ্যেই ফুটবল ভক্তদের নজর কেড়েছেন। অনেকেই হিসাব মেলাচ্ছেন এমবাপ্পের হাতেই যাবে এবারের বিশ্বকাপ ট্রফি। ইংল্যান্ডের সঙ্গে মুখোমুখি হবে কোয়ার্টার ফাইনালে। ইংল্যান্ডও এই ট্রফির অন্যতম দাবিদার। ইংল্যান্ডকে কোনোভাবেই আন্ডারমাইন্ড করা যাবে না। তারকা ফুটবলার হ্যারি কেইন ভাগ বসাতে পারেন। ১৯৬৬ সন থেকে তারা কাপের অপেক্ষায়। কাতার বিশ্বকাপে যেভাবে অঘটন ঘটছে তাতে হিসাবটা যে সহজ তা কিন্তু নয়। মরক্কো যেভাবে লড়াই করছে তাতে ফুটবল পণ্ডিতদের সব ধারণাই বদলে গেছে। স্পেনের সঙ্গে লড়াইটা ছিল এই বিশ্বকাপে অন্যতম এক লড়াই। যা ফুটবলভক্তরা উপভোগ করেছেন মাঠে, টিভির পর্দায়। হাকিমিকে যুক্ত করে এমবাপ্পের টুইট নতুন কোনো বার্তার ইঙ্গিত কি-না তাও থাকছে ভাবনায়। যদিও এমবাপ্পে ট্রফিটা হাতছাড়া করতে চান না। নতুন কারও হাতে ট্রফিটা দেয়ার জন্য তিনি মোটেও প্রস্তুত নন। তিনি বারবার বলেছেন- মাঠেই ফয়সালা হবে, পণ্ডিতরা যাই বলুন না কেন। কাতারে নতুন কোনো শক্তির উত্থান ঘটলেও ঘটতে পারে। ফুটবলে এমনটাই হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে অনেকটা নাটকীয়ভাবে স্পেনের উত্থান ঘটেছিল।