কাতার থেকে
বিশ্বকাপ ফুটবলে এশিয়াকে গণনায় নিতেই হচ্ছে
মতিউর রহমান চৌধুরী, কাতার
(১০ মাস আগে) ২৭ নভেম্বর ২০২২, রবিবার, ৪:৩১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০২ পূর্বাহ্ন

যারা একদিন বলেছিল এশিয়ায় ফুটবল হয় নাকি! এমন কি কোচও তো রাজি হতো না। তাদের কথা-ফুটবলে এশিয়া অনেক পিছিয়ে। এদের দম নেই। শরীরের কাঠামোও ফুটবল উপযুক্ত নয়। এখন তারা কী বলছে? তারা বলছে, এশিয়াকে আমরা কোনোদিন গণনার মধ্যে নেইনি। কাতার বিশ্বকাপে আমরা বুঝতে পেরেছি, এশিয়া অনেকদূর এগিয়েছে। একদিনের চমক নয়। ধারাবাহিকভাবে তারা চমক দেখিয়ে চলেছে। ফুটবলের দুই পরাশক্তি আর্জেন্টিনা ও জার্মানিকে হারিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। শুধু কি তাই! লিওনেল মেসি এখনো সুতোর উপর দিয়ে হাঁটছেন।
আরেক পরাশক্তি জার্মানি । চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।জাপানের কাছে হেরে গিয়ে বিশ্বকাপ নিজের ঘরে নেয়ার আশা ফিকে হয়ে গেছে তাদের। কে ভেবেছিল জার্মানি হেরে যাবে! কিন্তু জাপান খেলায় ফিরেছে অনেকটা নাটকীয়ভাবে। দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে দলটি। যেকোনো কিছু করে ফেলতে পারে। যেমনটা করেছিল ২০০২ বিশ্বকাপে দক্ষিণ কোরিয়া। জার্মানির সঙ্গে সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল তারা। ইরানই বা কম কিসে! প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে দলটি। বিশ্বকাপ ফুটবলের মঞ্চে এসে ক্ষোভ আর হতাশা ঝেড়েছে মাঠে। জাতীয় সংগীতে অংশ নেয়নি। তাই খবর রটেছে- এই ফুটবলাররা দেশে ফিরতে পারবেন না। ফিরলেও মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। অবশ্য বৃটেন তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে এমনটাই বলাবলি হচ্ছে। এই যখন অবস্থা, তখন তারা ২-০ গোলে ধরাশয়ী করেছে ওয়েলসকে। ওয়েলস ইউরোপের অন্যতম একটি ফুটবল টিম। সবমিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপে এশিয়ার উপস্থিতি ভিন্ন এক বার্তা দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়াই বা কম কিসে! দুইবারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ের সঙ্গে করেছে ড্র। স্বাগতিক দেশ কাতার, তারা কিছুটা হতাশ করেছে।বিশ্বকাপের কোনো উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিকরা কখনো পরাজিত হয়নি। ফুটবল পণ্ডিতরাও বলছেন, এশিয়াকে আর গণনার বাইরে রাখা যাবে না।তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, এশিয়ার ফুটবলের এই জাগরণের নেপথ্যে রয়েছে পশ্চিমা দুনিয়ার টেকনিক। আর এই টেকনিক নিয়ে এসেছেন আলোচিত হার্ভে রেনার্ড, হাজিমে মরিইয়াসু, পাওলো বেন্তো, কার্লোস কুইরোজ, ফেলিক্স সানচেজ বাস কোচরা।
এশিয়ায় ফুটবলের গোড়াপত্তনের কথা বলতে গেলে চীনের নাম উল্লেখ করতেই হয়। চীনেই ফুটবলের সূচনা হয়েছিল আমরা তো সবাই জানি। দেশটি একাধিকবার বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পেয়েছিল। এশিয়ায় ফুটবলভক্ত অগণিত। ফিফা’র হিসেবে ৮শ’ মিলিয়ন ফুটবলভক্ত রয়েছেন। যা অন্যান্য মহাদেশ থেকে বেশি। মজার খবর হচ্ছে, ১৯৫০ বিশ্বকাপে ভারত খেলার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু খালি পায়ে ফুটবল খেলার কারণে ফিফা তাদের সে সুযোগ দেয়নি। যদিও অনেকেই বলেন, এটাই মূল কারণ নয়। বলে কোনো লাথি না মেরেই ভারত এই সুযোগ পেয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে এই প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করেছিল জার্মানি, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স ও জাপান। এশিয়া থেকে বার্মা, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া অংশ না নেয়ায় ঐতিহাসিক সে সুযোগটি পেয়েছিল ভারত। ভারতীয় ফুটবল গবেষকরা বলছেন, তখন দেশটির তরফে বলা হয়েছিল- খেলোয়াড় বাছাই করা হয়নি। তাদের নেই কোনো ট্রেনিং। আর্থিক সংকটও রয়েছে। অনেকেই বলেন, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি, সুইডেন, প্যারাগুয়ের সঙ্গে শোচনীয় হার এড়াতেই শেষ মুহূর্তে ভারত এতে অংশ নেয়নি। সে যাইহোক, সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ । দেখা যাক শেষ পর্যন্ত এশিয়া কি করে।
মন্তব্য করুন
কাতার থেকে থেকে আরও পড়ুন
কাতার থেকে সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]