পতাকা বিভ্রাট: ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিকের ফোন জব্দ করলো কাতারের পুলিশ

কাতার বিশ্বকাপের প্রতিবেদন করা একজন ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিক দাবি করেছেন যে, কাতারি পুলিশ ব্রাজিলের স্থানীয় পতাকাকে LGBTQ ব্যানারের পতাকা ভেবে ভুল করে স্টেডিয়ামের বাইরে তাকে বিরক্ত করেছে। ভিক্টর পেরেইরা নামের ওই সাংবাদিক বলেছেন , ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পার্নাম্বুকো রাজ্যের রঙিন পতাকা দেখে কাতারি পুলিশ ওই সাংবাদিকের ফোনটি জব্দ করে । পার্নাম্বুকো রাজ্যের পতাকাতে লাল, হলুদ, সবুজ রঙের রংধনু , একটি লাল ক্রস, একটি হলুদ তারা চিত্রিত করা আছে । তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সৌদি আরবের ২-১ গোলে জয়ের পর লুসাইল স্টেডিয়াম থেকে বের হওয়ার সময় ঐতিহ্যবাহী সাদা পোশাক পরা একজন ব্যক্তি এটিকে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের রংধনু পতাকা মনে করেছিলেন। উপসাগরীয় রাজ্যে সমলিঙ্গের সম্পর্ক অবৈধ কিন্তু বিশ্বকাপের আয়োজক কাতারের কর্তৃপক্ষ বারবার বলেছিল ক্রীড়া ইভেন্টে "সবাইকে স্বাগত"। 

ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিক পেরেইরা জানান, ''ঘটনার দিন সাদা পোষাক পরা এক ব্যক্তি পতাকাটি  ধরে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে । আমি একটি ভিডিও রেকর্ড করার জন্য আমার ফোনটি নিয়েছিলাম কিন্তু তিনি এটি আমার হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বলেন যে আমি ভিডিওটি মুছে দিলে তবেই তিনি ফোনটি ফেরত দেবেন। তখন একজন অফিসার এসে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি ''। পেরেইরা বলেছিলেন যে, তিনি ওই  পুলিশ অফিসারের কথা মেনে  ক্লিপটি মুছে ফেলার পর তবেই  নিজের ফোনটি ফেরত পান। তিনি টুইটারে তার একাউন্ট-এ গোটা ঘটনাটা জানিয়েছেন।

যদিও  কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজকরা বিষয়টি জেনেও কোনো মন্তব্য করেনি।  সাড়া দেয়নি কাতারি সরকারের মিডিয়া অফিসও। 

এদিকে পার্নাম্বুকোর গভর্নর পাওলো কামারা ঘটনার পরপরই টুইট করেন। তিনি বলেছেন: "পার্নাম্বুকোর  সাংবাদিক ভিক্টর পেরেইরার সাথে আমরা আছি । ভিক্টর কাতার বিশ্বকাপ কভার করছেন এবং পার্নাম্বুকোর পতাকা নিয়েছিলেন যেটি সে দেশের কর্তৃপক্ষ কেড়ে নেয় ।"একজন আমেরিকান সাংবাদিক বলেছেন যে, সোমবার এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের সমর্থনে রেইনবো শার্ট পরে কাতারের একটি বিশ্বকাপ স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করার জন্য  তাকে  আটক করা হয়েছিল। তার ফোন জব্দ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। সোমবার কাতারে কিছু ওয়েলস সমর্থক বলেছেন, তাদের রংধনু  টুপি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে , তাদের দেশের ফ্যানদের সাথে কি আচরণ করা হচ্ছে তা খেয়াল রাখছে কর্তৃপক্ষ। কেউ কেউ দাবি করেছেন যে তাদের বলা হয়েছিল রংধনু রঙের পতাকা ব্যবহার  নিষিদ্ধ , যদিও ফিফা বলছে রংধনু রঙের পতাকা এবং পোশাক স্টেডিয়ামে অনুমোদিত। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সরকারী মুখপাত্র বলেছেন,  ''এলজিবিটি অধিকার যুক্তরাজ্যের একটি মৌলিক অংশ। আমরা টুর্নামেন্টের দিকে অগ্রসর হওয়ার  সমস্ত স্তরে কাতারি কর্তৃপক্ষের কাছে এলজিবিটি দর্শকদের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি এবং স্পষ্টতই আমরা এটি পর্যবেক্ষণ করতে থাকব। ''

সূত্র : news.sky.com