বিশ্বকাপ ম্যাগাজিন
আমার চোখে আর্জেন্টিনাই ফেভারিট
আইএম বিজয়ন, সাবেক ফুটবলার, ভারত
(২ বছর আগে) ১৪ নভেম্বর ২০২২, সোমবার, ৬:৪৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:০০ অপরাহ্ন

কাতার বিশ্বকাপে আমার ফেভারিট দল অবশ্যই আর্জেন্টিনা। কেন জানি না নীল-সাদা জার্সির ১১ জন খেলোয়াড়দের অন্ধ ভক্ত আমি। তবে কবে থেকে এই দেশের ফুটবল প্রেমে নিজে পাগল হয়ে গিয়েছি তা সঠিক সময় বা দিনক্ষণ এত আমি বলতে পারবো না। শুধু এটুকুই মনে আছে, প্রয়াত দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনার ফুটবল বাঁ-পায়ের শৈল্পিক কারুকার্যই আমাকে আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত করে দিয়েছে। ম্যারাডোনার সেই ফুটবল নিয়ে বিপক্ষ খেলোয়াড়দের একের পর এক কাঁটিয়ে করা গোলগুলো আজও আমি সময় পেলেই দেখি। আর মুগ্ধ হয়ে ভাবি যদি দিয়েগোর মতো এক ছিটেফোঁটাও ফুটবল নিয়ে করতে পারতাম, তাহলে হয়তো ধন্য হয়ে যেতাম। যে যতই বলুক আমি দিয়েগোর অন্ধ একজন সাপোর্টার। সেই দিয়েগোর প্রেমে আমি আর্জেন্টিনার ভক্ত হয়ে পড়েছি। কাতার বিশ্বকাপেও তার ব্যতিক্রম হবে না। জীবনে যতদিন বাঁচবো, ততদিন আর্জেন্টিনাকেই সাপোর্ট করবো। যদি আমার দেশ বিশ্ব ফুটবলের মহারণে অংশ নিতে পারে অবশ্য তখন আমি আমার দেশের অন্ধ ভক্ত হয়ে যাবো। এখন দিয়েগো ম্যারাডোনার যুগ আর নেই। বর্তমানে আর্জেন্টিনাইন ফুটবলে চলছে মেসি যুগ। লিও-ও আমার খুব পছন্দের ফুটবলার। ওর স্কিল, দৌড় সবকিছুতেই যেন আমি দিয়েগোর ছায়া দেখতে পাই। আমি চাইবো জীবনের শেষ বিশ্বকাপটা যেন লিও-হাতেই শোভা পায়। না পেলে আর্জেন্টিনার একজন অন্ধ সাপোর্টার হিসেবে আমি খুব দুঃখ পাবো। যা হয়তো আমিও অন্য আর্জেন্টিনার ভক্তদের মতো সারা জীবন ভুলতে পারবো না।

কাজেই আমি ঈশ্বরের কাছে করোজোড়ে প্রার্থনা করছি, অনেক আগে থেকেই, আমার প্রিয় আর্জেন্টিনা যেন এবারের কাতারের বিশ্বকাপে বিজয়ী হতে পারে। আমার প্রিয় লিও-ও যাতে বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে সতীর্থদের সঙ্গে নিয়ে ভিকট্রি ল্যাপে দাঁড়াতে পারে। সেই দৃশ্য আমি নিজে টিভির পর্দায় দেখতে চাই। আর যদি আর্জেন্টিনা ট্রফি জিততে পারে, উঃফ দারুণ, দারুণ আনন্দ করবো আমি। একজন আর্জেন্টিনার ফুটবল ভক্ত হিসেবে। আমি জানি, বর্তমান দলে গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য পাওলো দিবালা এবং ডি মারিয়াকে পাওয়া যাবে না। তবু আমি বলছি, মেসি একাই কাফি। যদি ফর্মে থাকেন, তাহলে তো কথাই নেই। আবার কোপার ঝলক বিশ্বকাপেও দেখা যাবে। ফুটবল দলগত খেলা হলেও মেসির মতো খেলোয়াড়রা যে দলে থাকেন, তাহলে সেই দল বাকি ১০ জনকেই ছাপিয়ে যায় বলে আমার মনে হয়। তবে তাই বলে আমি সতীর্থদের ছোট করছি না। অনেকে মনে করবেন যে, আমি কেন এই কথা বলছি। তাই তাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে দিয়েগো একাই শেষ করে দিয়েছিলেন সবাইকে। সেখানেও তো অনেক রথি-মহারথি ফুটবলাররা ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী হলো। তা তো সবাই জানেন।
এবারো মেসিসহ আর্জেন্টিনাকে গ্রুপ লীগে খেলতে হবে শক্তিশালী পোল্যান্ড ও মেক্সিকোর বিপক্ষে। তবুও আমার মতে, যদি কোনো অঘটন না ঘটে, তাহলে গ্রুপ লীগে সব ম্যাচ জিতেই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছবে স্কালেনির দল। শুধু সাপোর্টার হিসেবে নয়, টেকনিক্যাল দিক থেকেও এই মুহূর্তে লিওনেল স্কালোনি যেভাবে দলটাকে তৈরি করেছেন আমার মনে হয় সেদিক থেকেও সবাইকে টেক্কা দেবে নীল-সাদা জার্সিধারীরা। সবশেষে আবারো একটা কথা বলি, যতই সিআর সেভেন, বেঞ্জিমা, লেওয়ানডস্কি, হ্যারিকেন-রা থাকুক না কেন ১৯৮৬’র পর আবার আর্জেন্টিনা জয় করবে বিশ্বকাপ ফুটবলের ট্রফি।