বিশ্বকাপ ম্যাগাজিন
বিশ্বকাপে ফ্রান্সই আমার প্রথম পছন্দ
অলোক মুখোপাধ্যায়, ক্রীড়া সাংবাদিক, কলকাতা
(২ বছর আগে) ১৪ নভেম্বর ২০২২, সোমবার, ৬:০৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:০০ অপরাহ্ন

চলতি বিশ্বকাপে আমার প্রথম পছন্দ অবশ্যই ফ্রান্স। তাই নিয়ে অনেকের সঙ্গে হয়তো বিস্তর মতবিরোধ হবে, তবে কেন জানি না ফরাসিরাই এবার কাতার বিশ্বকাপে আমার ট্রাম্পকার্ড। কেন জানি না, যত দিন যাচ্ছে ততই যেন ফ্রান্স দলটাকে নতুনভাবে দেখছি। তবে কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন আপনি কবে থেকে ফরাসিদের সাপোর্টার হলেন, এবং কী দেখে হলেন? তাদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই কথা ফ্রান্সের খেলার ধরনটা আমার খুবই পছন্দের। আর দ্বিতীয় কারণটি হলো অবশ্যই করিম বেনজেমা। ফরাসিদের হয়ে কী অসাধারণ ফুটবলটাই না খেলছে বেনজেমা। মিশেল প্লাতিনি, টিগানা, জিনেদিন জিদান, থিয়েরো অরির পর ফের একবার ফরাসিরা পেয়েছেন তাদেরই এক যোগ্য উত্তরসূরিকে। যিনি কিনা বর্তমান ফুটবলে অত্যন্ত একজন গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। না, শুধু ফুটবলার বললে ভুল হবে। বেনজেমা হলেন একজন কমপ্লিট গেম মেকার এবং ফিনিশার। যিনি যেকোনো মুহূর্তে বিপক্ষ দলের কাছে ত্রাস হয়ে উঠতে পারেন। আর সেই জন্য বেনজেমাই কাতার বিশ্বকাপে আমার তরুপের তাস। ওর খেলা যত দেখছি, ততই যেন মুগ্ধ হচ্ছি আমি। আসলে একজন ডিফেন্ডার হিসেবে বুঝি বেনজেমা কতো বিপজ্জনক। এ ছাড়া ফ্রান্স দলটিতে রয়েছেন আরও একজন স্ট্রাইকার। যার সঙ্গে যুগলবন্দিতে যেন আরও মারাত্মক হয়ে উঠবে এই দলটা। হ্যাঁ, এটাই ফ্রান্স দলের অন্যতম ভরসা। বেনজেমা মাঝমাঠ থেকে খেলাটা তৈরি করবে এবং ফিনিশ করবে কিলিয়ান এমবাপ্পে।
আমার দীর্ঘ ফুটবল জীবনে বহু আন্তর্জাতিক ম্যাচ আমি খেলেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আরও একটা কথা বলতে চাই, সেটা বেনজেমাকে দেখে অনেকেই হয়তো ভাবেন যে, ও ম্যাচ উইনার প্লেয়ার নন। কিন্তু সেটা একদম ভুল কথা। গেম মেকাররা কখন কীভাবে জ্বলে উঠবেন সেটা তারাই জানেন। রিয়ালের জার্সি গায়ে ও কি অসাধারণ ফুটবলটাই না খেলছে। একের পর এক ম্যাচে স্কোরশিটে যেমন নাম তুলছে, ঠিক তেমনই গোলের ফাইনাল পাসটা বেরিয়ে আসছে ওর পাশ থেকেই। এই জন্যই আমি এগিয়ে রাখছি ফরাসিদের।

ফরাসি যদি কোনোভাবে ব্যর্থ হয়, তবে সেক্ষেত্রে আমার দ্বিতীয় বাজি অবশ্যই ব্রাজিল এবং জার্মান। ব্রাজিল দলটা এই মুহূর্তে বেশ কিছুটা ব্যাকফুটেই রয়েছে বলে আমার মনে হয়। কেননা, নেইমারকে ঠিক স্বাভাবিক ছন্দে দেখতে পাচ্ছি না দীর্ঘদিন। হয়তো ওর কোনো সমস্যা আছে। যদি নেইমার ফর্মে ফেরেন, তবুও ব্রাজিল দলটা নিয়ে খুব একটা আশার আলো অন্তত আমি দেখতে পাচ্ছি না। এ ছাড়া লুকাস পুকুয়েতা চোটের কারণে সম্ভবত দল থেকে বাদ পড়ছেন। এটাও একটা বড় ধাক্কা ব্রাজিল দলের জন্য। কাজেই আমার মনে হয় এই দলটা নিয়ে বেশি দূর যেতে পারবেন না ব্রাজিল কোচ। তবুও আমি আশা করবো- দলটাকে বেশ ছন্দেই পাবো অন্তত কিছু ম্যাচে। যেহেতু দলটার নাম ব্রাজিল। ফুটবল যাদের রক্তে, ধমনীতে এবং শিরায় বহমান।
ব্রাজিলের পর আমার চোখ থাকবে জার্মানদের দিকে। যারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে প্রতিটি ম্যাচে। লড়াই-ই ওদের প্রাণশক্তি। এই লড়াইকে সঙ্গ করেই বহু ম্যাচ জার্মানরা কঠিন প্রতিপক্ষকে হার মানিয়েছে। হয়তো ফয়লার, ম্যাথুস, ক্লিসম্যানদের মতো স্ট্রাইকার বা মিডফিল্ডার এই মুহূর্তে জার্মান দলে নেই। তবুও কঠিন লড়াইকে সম্বল করেই বর্তমান জার্মান দলটা এগিয়ে যাবে অনেক দূর।