বিশ্বকাপ ম্যাগাজিন
ফুটবল আমাদের ধর্ম আমরা ভাত খাই ফুটবল মেখে
জোস্ রামিরেজ বারেটো, মোহনবাগানের সাবেক ফুটবলার
(২ বছর আগে) ১৪ নভেম্বর ২০২২, সোমবার, ৫:৫৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:০০ অপরাহ্ন

আমি নিজেকে অর্ধেক ব্রাজিলিয়ান, অর্ধেক ভারতীয় ভাবতে ভালোবাসি। ব্রাজিল আমার জন্মভূমি. ভারত আমার কর্মভূমি. সুদূর ব্রাজিল থেকে মোহনবাগানে খেলতে এসেছিলাম. সবুজ মেরুন আমার ধমনীর অঙ্গ হয়ে গেছে। কিন্তু ব্রাজিলকে কি ভুলতে পেরেছি? নিজের মাতৃভূমিকে কি ভোলা যায়? ফুটবল তো আমাকে ব্রাজিলই শিখিয়েছে। এই যে ফুটবল থেকে আমার এতো রমরমা সে তো ব্রাজিলেরই দান। জানিয়ে রাখি, বাঙালিদের মতো ব্রাজিলিয়ানরাও ভাত খেতে ভালোবাসেন, আমাদের কাছে ফুটবল হলো ধর্ম, আর প্রতিটি গ্রাসে ভাতের সঙ্গে ফুটবল মেখে আমরা খাই। ফুটবল ব্রাজিলিয়ানদের রক্তে। আমি নিজেই তো তার প্রমাণ। বিশ্বকাপের সময় যেখানেই থাকি, যাই থাকি, চোখ আটকে যায় বিশ্বকাপে। ব্রাজিলের ম্যাচ থাকলে তো কথাই নেই। ব্রাজিল মানেই আমার কাছে এক উন্মাদনা, আমার কাছে শিহরণ জাগানো এক ব্যাপার। কিশোর বয়সে থাকতাম পরতো আলেগ্রে নামে এক শহরতলিতে। সেই সময় এই শহরের এক যুবক ফুটবলার বিশ্ব ফুটবলে ঝড় তুলেছে। রোনালদিনহো।

আমার মনে আছে কিশোর বয়েসে রোনালদিনহোর খেলা দেখতাম আর ভাবতাম কবে আমি এই ভাবে বলকে পোষা পাখির মতো খেলাবো। না, স্বীকার করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই যে, রোনালদিনহোর ধারে-কাছে পৌঁছাতে পারিনি আমি। কিন্তু কিছু তো ফুটবল খেলেছি। নাইবা থাকলো রোনালদিনহোর টাচ, এই টাচ কথাটা উঠতেই মনে পড়লো ব্রাজিলের টাচ ফুটবলের কথা। ব্রাজিল সচরাচর প্যাটার্ন উইভিং ফুটবল খেলে থাকে। লক্ষ্য করলে দেখবেন ব্রাজিলের খেলার মধ্যে একটা ছন্দ থাকে। এটিকে অনেকে সাম্বা ফুটবল বলেন। ব্রাজিলিয়ানদের প্রিয় সাম্বা নাচের ছন্দ এই ফুটবলে কতটা থাকে জানি না, তবে এটা জানি, বিশ্বের তাবড় দলকে কাত করে দিতে পারে এই ছন্দ। রোনালদিনহো আমার প্রিয় ফুটবলারদের অন্যতম বলেও জানাই স্পোর্টস কারে করে রোনালদিনহো যখন পরতো আলেগ্রের রাস্তা দিয়ে যেতেন আমরা হাঁ করে তাকিয়ে থাকতাম। একটু ঈর্ষাও হতো। ফুটবল খেলে এতো সম্মান, বৈভব পাওয়া যায়! আসলে ব্রাজিল মানেই তো ফুটবল। যে দেশের অর্থনীতির অনেকটাই ফুটবল-নির্ভর, সেই দেশে যে ফুটবলকে ধর্ম বলে মানা হবে তাতে আর বিস্ময় কী!