বিশ্বকাপ ম্যাগাজিন
রোনাল্ডো ছিটকে যেতেই আলো নিভে গেল
সম্পূর্ণা চক্রবর্তী কলকাতা
(১০ মাস আগে) ১৪ নভেম্বর ২০২২, সোমবার, ৫:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:০০ অপরাহ্ন

চার বছর আগে বিশ্বকাপ কভার করতে রাশিয়া গিয়েছিলাম। উঁহু, ঠিকঠাক হিসেবে তো সাড়ে চার বছর গড়িয়ে গেল। এবার কাতার বিশ্বকাপ হচ্ছে নভেম্বর-ডিসেম্বরে। রাশিয়ায় বিশ্বকাপ হয়েছিল জুন-জুলাইয়ে। তা যাই হোক, বিশ্বকাপ মানেই তো এলাহি একটা ব্যাপার। রাজকীয় আয়োজন। এরোফ্লোট এর ফ্লাইট ধরে দিল্লি থেকে মস্কো। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার ফ্লাইটে সেখানে পৌঁছতেই ব্যাপারটার আঁচ পেলাম। এটা আমার প্রথম বিশ্বকাপ। তাও আবার কমিউনিস্ট একটা দেশে! একটু চিন্তায় ছিলাম।

ইংরেজিতে যে ক্যাব ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলি, সে বলে-নিয়েত, নিয়েত। ইংলিশে যার মানে, আমি ইংরেজি জানি না। তারপর বহু কষ্টে একটা ট্যাক্সি পেলাম। তবে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে। মস্কোর রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। চারপাশে ওক, পাইন আর রডোড্রনড্রন গাছের সারি, অসাধারণ স্থাপত্যের ইমারত। আধুনিকতা আর প্রাচীনত্বের যেন এক মেলবন্ধন। চমৎকৃত হওয়ার আরও বাকি ছিল। ট্যাক্সি ড্রাইভার হঠাৎ জিজ্ঞাসা করলো, আমি কোথা থেকে আসছি। ইন্ডিয়া শুনেই বলে উঠলেন-ডিস্কো ডান্সার, মিঠুন চক্রবর্তী। তারপর গেয়ে উঠলেনÑআই অ্যাম এ ডিস্কো ডান্সার। অবাক হওয়ার আর একটু বাকি ছিল, রাশিয়ান ড্রাইভার এবার চালিয়ে দিলো শাহরুখ খানের নব্বই দশকের হিট গান। দাঁত বের করে বললেন, সে মিঠুন আর শাহরুখের ফ্যান। এইভাবেই মস্কোর হোটেলে পৌঁছলাম। আমার রাশিয়া বিশ্বকাপে যে ম্যাচটা মনের মণিকোঠায় উজ্জ্বল হয়ে আছে তা হলো সোচির একটি ম্যাচ।
পর্তুগাল আর উরুগুয়ের। রোনাল্ডো আর সুয়ারেজের। মস্কো থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার উড়ানে সোচি পৌঁছতেই দেখলাম গোটা শহর যেন রোনাল্ডোময়। বিমানে এসেছিলাম উরুগুয়ের কিছু সমর্থকের সঙ্গে। তাদেরও দেখলাম রোনাল্ডো সম্পর্কে বিনম্র শ্রদ্ধা। এই রোনাল্ডো কিনা সুয়ারেজের কাছে হেরে গেল! কাভানির করা দু’গোলে উরুগুয়ে পর্তুগালকে হারিয়ে দেয়। প্রি- কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় রোনাল্ডোর। রাশিয়ার সব আলো যেন নিভে গেল। সবটাই যেন রাশিয়ানদের কাছে অর্থহীন হয়ে গেল। সেন্ট পিটার্সবার্গ যে অমন পিকচার পোস্টকার্ডের মতো সাজানো ছবির মতো শহর, সেখানেও রং যেন বিবর্ণ রোনাল্ডো বিহনে। আসলে রাশিয়া আমার প্রথম বিশ্বকাপ। সেখানে রোনাল্ডোর বিদায় আমাকেও মুহ্যমান করেছিল। রাশিয়ায় প্রায় রাত বারোটা পর্যন্ত দিনের আলো থাকে। সেন্ট পিটার্সবার্গের একটা রেস্তরাঁয় ডিনার খেতে খেতে ভাবছিলাম, ইস্পাত কঠিন কমিউনিস্টদেরও তাহলে আবেগ থাকে। সেই আবেগ যেন শুষে নিয়েছে গভীর রাত পর্যন্ত থাকা দিনের আলোকে।
মন্তব্য করুন
বিশ্বকাপ ম্যাগাজিন থেকে আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ম্যাগাজিন সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]