টি-২০ বিশ্বকাপ
নায়ক সেই স্টোকস
স্পোর্টস ডেস্ক
১৪ নভেম্বর ২০২২, সোমবার২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঘটনা। কলকাতায় ফাইনালের শেষ ওভারে বল হাতে চারটি ছক্কা হজম করেন বেন স্টোকস। এতে নাটকীয় জয়ে শিরোপা ছিনিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্টোকস ওই বেদনা ভুলিয়েছিলেন ব্যাট হাতে ২০১৯ বিশ্বকাপে। লন্ডনে ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অতিমানবীয় এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শিরোপা এনে দেন ইংল্যান্ডকে। ভক্ত-সমর্থকদের এবার যেন বোনাস দিলেন বেন স্টোকস। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলো ইংল্যান্ড। ফাইনালে ব্যাট হাতে ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক সেই স্টোকস। গতকাল মেলবোর্নে আগে ব্যাটিং শেষে পাকিস্তানের ইনিংস থামে ১৩৭/৮-এ। জবাবে ৬ বল বাকি রেখে জয় নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।
বিজ্ঞাপন
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ম্যাচের শুরুটাও ছিল ইংল্যান্ডে। টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ফর্মে ফেরার ইঙ্গি দিয়েছিলেন পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে ফাইনালে দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ তারা। পরে টপাটপ উইকেট খোয়ায় পাকিস্তানের বাকি ব্যাটাররাও। এজন্য কৃতিত্ব দিতে হয় ইংলিশ বোলারদের। ম্যাচ শেষে তা উঠে আসে বেন স্টোকসের কণ্ঠেও। ফাইনালে, বিশেষ করে রান তাড়ায় সব ভুলে কঠোর পরিশ্রমটাই আগে। তাদের ১৩০-এর ঘরে আটকে দেয়া, এজন্য বোলাদের অনেক কৃতিত্ব দিতে হবে।’ ১৩৮ রানের টার্গেট টি-টোয়েন্টির বিবেচনায় সহজই। কিন্তু শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, নাসিম শাহ মোহাম্মদ ওয়াসিম, শাদাব খানদের নিয়ে গড়া বোলিং আক্রমণ আশা দেখাচ্ছিল পাকিস্তানকেও। আর মেলবোর্নের উইকেটে টার্গেটটা ইংলশিদের জন্য সহজ রাখেননি তারা।
ইংল্যান্ডের ইনিংসের শুরুর ওভারেই ধাক্কা দেন আফ্রিদি। প্রথম ওভারের শেষ বলে তিনি তুলে নেন অ্যালেক্স হেলসের উইকেট। এরপর হারিস রউফ এসে ফিল সল্ট ও জস বাটলারকে তুলে নিলে বিপদেই পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তাদের রান ছিল ৩ উইকেটে ৪৯।
শুরুর এই ধাক্কা কাটিয়ে বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুকের ব্যাটে ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু ১৩তম ওভারে শাদাব খানের বলে ব্রুক আউট হয়ে যাওয়ার পর একটু যেন গুটিয়ে যেতে থাকে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। মনে হচ্ছিল পাকিস্তান ম্যাচে ফিরতে চলেছে। অল্পতে উইকেট খোয়ান মঈন আলীও। কিন্তু এক প্রান্তে অবিচল ছিলেন বেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ছিল ভাগ্যও। ব্রুকের ক্যাচ লুফে নেয়ার সময় পায়ে আঘাত পান শাহীন শাহ। পরে তার স্পেলের দুই ওভার বাকি থাকলেও এক বল করেই খোড়াতে খোড়াতে মাঠ ছাড়েন এ পাকিস্তানি পেসার। আফ্রিদির ওই ওভার শেষ করতে বল তুলে দেয়া হয় ইফতিখার আহমেদের হাতে। আর ওই অফস্পিনারের ৫ বলেই অনেকটা ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন স্টোকস। শেষ ২৯ বলে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৪১ রানের। ইফতিখারের ৫ বলে ১৩ রান যোগ হয় ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে।
এবারে বিশ্বকাপে বৃষ্টিতে পণ্ড হওয়া ম্যাচে আয়রল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে চাপে পড়েছিল ইংলিশরা। এ প্রসঙ্গে ফাইনাল শেষে বেন স্টোকস বলেন, ‘ওটা ছিল টুর্নামেন্টের শুরুর দিকের ঘটনা। বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হয়েছে, আমরা টুর্নামেন্টে শুধু ব্যাগেজ বহন করতে আসিনি। সেরা দল হিসেবেই সাফল্য পেলাম। দারুণ একটি সন্ধ্যা!