টি-২০ বিশ্বকাপ
বাবরের কাছ থেকে স্পেশাল কিছু পেতে যাচ্ছে পাকিস্তান
স্পোর্টস ডেস্ক
৯ নভেম্বর ২০২২, বুধবারআসর শুরুর আগে বলা হচ্ছিল, কে হবেন সর্বাধিক রান সংগ্রাহক- বিরাট কোহলি নাকি বাবর আজম? কোহলি আলো ছড়িয়ে গেলেও বাবর পড়ে রয়েছেন অন্ধকারেই। কিছুদিন আগেও র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে থাকা এই ব্যাটারকে নিয়ে সামলোচনার ঝড়। নিজ দেশেই চাঁচাছোলা পাক অধিনায়ক। প্রশ্ন উঠেছে, সেমিফাইনালে বাবর ওপেন করবেন কিনা। তবে পাকিস্তান দলের ব্যাটিং পরামর্শক ম্যাথু হেইডেন বিশ্বাস রাখছেন অধিনায়কের ওপর। বাবর-রিজওয়ান জুটি ভাঙতে নারাজ তিনি। হেইডেন বলেছেন, ‘একের পর এক সেঞ্চুরি ও ফিফটি হাঁকানো এবং ১৪০ স্ট্রাইকরেটে রান করতে পারে না কেউই। অগ্নিশিখা না দেখলে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। বাবরের মতো স্পেশাল প্লেয়াররা এতদিন স্তিমিত থাকে না’ গত আসরে সর্বাধিক রান করা বাবর চলতি টুর্নামেন্টে পাঁচ ইনিংসে করেছেন যথাক্রমে ০, ৪, ৪, ৬ ও ২৫ রান। তার সঙ্গী মোহাম্মদ রিজওয়ানও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছেন না।
হেইডেন এতে সায় দিচ্ছেন না। সাবেক সতীর্থ অ্যাডাম গিলক্রিস্টের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘বাবর-রিজওয়ানই এক নম্বর কম্বিনেশন। আমি যদি অতীতে ফিরে যাই, ২০০৭ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দল অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলেও অ্যাডাম গিলক্রিস্টের সময় খারাপ যাচ্ছিল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটার কথা কি মনে আছে? দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সে আরেকবার বিশ্বকে বুঝিয়ে দেয় এই ফরম্যাটে সে একজন প্রিমিয়াম ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ার জুড়েই কোনো না কোনো সময় আমরা চাপে থাকি। নাম্বার ওয়ান কম্বিনেশনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ভিন্ন নয়। টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে চারে থাকা বাবরের জন্যও বিষয়টা এমনই।’ অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনার হেইডেন তাই আস্থা হারাচ্ছেন না। তার বিশ্বাস যথাসময়েই জ্বলে উঠবেন বাবর। সেমিফাইনাল ম্যাচ সামনে রেখে সিডনিতে আলাদাভাবে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। দল ঘুরে দাঁড়ানোয় স্বাভাবিকভাবে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে তার। পাকিস্তান ড্রেসিং রুম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আইসিসি’র শেয়ার করা এক ভিডিওতেই সেটি স্পষ্ট। দেখা গেছে, সতীর্থদের উদ্দেশ্যে জ্বালাময়ী বক্তব্য দিচ্ছেন অধিনায়ক বাবর।
হেইডেন বলেন, ‘যখন নেদারল্যান্ডস দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিলো, টুর্নামেন্টে সেটি ছিল আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ওই মুহূর্তটা দলের অনেক খেলোয়াড়ের ভেতরটা জাগিয়ে তুলেছে। নিজেদের সেরাটা দেওয়ার সক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে ওই জয়।’ খাদের কিনার থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর অস্ট্রেলিয়ায় শিরোপা উঁচিয়ে ধরাই লক্ষ্য বাবরদের। হেইডেন বলেন, ‘একটা রোলার কোস্টার রাইডের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। কিন্তু আমি চাই না এটা অন্য পথে চলে যাক। কারণ, গতবার অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে গিয়েছিলাম এবং অস্ট্রেলিয়া আমাদের ছিটকে দেয়। এই টুর্নামেন্টে উত্থান-পতনের মধ্যে গিয়েছি। কিন্তু এখনো নিজেদের সেরাটা বোধ হয় দেখাইনি। আমাদের প্রতিপক্ষের জন্য ব্যাপারটা হুমকির কারণই।’ তবে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডকে সমীহও করছেন হেইডেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, নিউজিল্যান্ডে কয়েকজন বিধ্বংসী ক্রিকেটার রয়েছে। তাদের বোলিং অ্যাটাকও মারাত্মক। ভারসাম্যপূর্ণ একটি বোলিং অ্যাটাক। অভিজ্ঞতার দারুণ মিশেল। এমনকি আমি নিজেও টিম সাউদির বিপক্ষে খেলেছি। এটাই প্রমাণ করে দলটা কতটা অভিজ্ঞ ক্রিকেটার পেয়েছে। লকি ফার্গুসনের গতি আছে। সে হুমকিতে ফেলতে পারে। এছাড়া তাদের স্পিন অ্যাটাকও যথেষ্ট ভালো। নিউজিল্যান্ড দল বিশ্বাস করে তারা এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যোগ্য। কাজেই কোনো সন্দেহ নেই যে চ্যালেঞ্জটা অনেক বেশি হবে।’