দেশ বিদেশ
টাকার প্রয়োজনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সিএনজিচালককে হত্যা করে চক্রটি
স্টাফ রিপোর্টার
২৪ মে ২০২৫, শনিবারঢাকার পল্লবীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে হাতুড়ি দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত বৃহস্পতিবার বিকালে র্যাব-৪, র্যাব-৯ ও র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে ঢাকা, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছিনতাই হওয়া গাড়িটিও কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চক্রটিতে মোট ছয় থেকে সাতজন সদস্য রয়েছেন এবং তাদের সবার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকালে মিরপুরে র্যাব-৪ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৪ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম। র্যাব বলছে, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। টাকার প্রয়োজনে চক্রটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।
এর আগে ১৬ই মে পল্লবীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার ৪ নম্বর গেটসংলগ্ন স্থান থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে র্যাব। পরে জানা যায় নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল অজিদ ওরফে বাচ্চু। তিনি পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে হত্যাকারীদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. সৌরভ সরকার (২০), মো. ইয়াছিন মিয়া (২০), মো. মুসা (২৫), মো. দুলাল মিয়া (৩২) ও মো. শাহজালাল (২৬)। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন বন্ধু মুসা, ইয়াছিন ও সৌরভ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তারা দীর্ঘদিন ধরে চুরি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। টাকার প্রয়োজনে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন তারা। ১৫ই মে সন্ধ্যায় সৌরভ ও ইয়াছিন ঢাকায় আসেন। রাতভর অপেক্ষার পর তারা শ্যামলী ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে থেকে আবদুল বাচ্চুর অটোরিকশায় যাত্রী হিসেবে ওঠেন। সৌরভ চালককে নিয়ে যান ৬০ ফিট এলাকার পানির ট্যাংকির সামনে, যেখানে ইয়াছিন আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা চালককে অটোরিকশা ঘোরাতে বললে তিনি গাড়ি থেকে নামেন। সেই সুযোগে পেছন থেকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন তারা। পরে মুসার মুঠোফোনে পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত করা হয় যে চালক মারা গেছেন। হত্যার পর লাশ ফেলার জন্য একাধিক স্থানে ঘোরাঘুরি করেন তারা। অবশেষে ডিওএইচএস এলাকার নির্জন এক প্রাচীরের পাশে লাশ ফেলে দেন এবং সাভারে পালিয়ে যান। ঘটনার পরদিন সকালে তারা অটোরিকশা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পূর্বাচলে গিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন শাহজালাল ও দুলাল। তারা চোরাই যানবাহন চক্রের সদস্য বলে জানায় র্যাব। পরে অটোরিকশাটি ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এই চক্রের নেতা আল আমিন অটোরিকশাটি নিয়ে কুমিল্লার দেবীদ্বারে যান। সেখানে একটি ওয়ার্কশপে যানটির রং ও কাভার পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়।