দেশ বিদেশ
পারভেজ হত্যা
৩ দিনের রিমান্ডে শিক্ষার্থী টিনা
স্টাফ রিপোর্টার
১০ মে ২০২৫, শনিবার
প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের শিক্ষার্থী ফারিয়া হক টিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল বিকালে আসামির উপস্থিতিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মঈন উদ্দিন, টিনাকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। টিনাকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদনে বলা হয়, পারভেজকে ছুরিকাঘাতে হত্যার কারণে প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটিসহ বনানী থানা এলাকা ও আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, যা বর্তমানেও চলমান আছে। তদন্ত কর্মকর্তা তার আবেদনে বলেছেন, টিনাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রকৃত ও সঠিক তথ্য উদ্ঘাটিত হওয়াসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ ও গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী টিনাকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার ভাটারা থানাধীন নদ্দা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পারভেজকে হত্যার ঘটনায় নাম আসা দুই তরুণীকে খুঁজে বের করতে গত ২৩শে এপ্রিল নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ১৯শে এপ্রিল প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী পারভেজকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে তার মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর আটজনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলো- মেহরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে মেহরাজ, হৃদয় মিয়াজী ও মাহাথির গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। এজাহারের বাইরে মো. আল কামাল শেখ, আলভী হোসেন জুনায়েদ ও আল আমিন সানি নামে তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
আসামিদের মধ্যে হৃদয় মিয়াজী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা ইউনিটের যুগ্ম সদস্য সচিব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষারও এ হত্যা মামলার আসামি।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯শে এপ্রিল বিকালে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে একটি পুরি-শিঙাড়ার দোকানে খেতে খেতে বন্ধুদের সঙ্গে হাসাহাসি করছিলেন পারভেজ। সে সময় তাদের পেছনে অন্য প্রতিষ্ঠানের দু’জন ছাত্রী দাঁড়িয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে মামলার এক নম্বর আসামি মেহরাজসহ তিনজন এসে পারভেজের কাছে হাসাহাসির কারণ জানতে চান। বিষয়টি নিয়ে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষক এসে দুই পক্ষকে প্রক্টরের রুমে ডেকে নিয়ে মীমাংসা করে দিলে মেহরাজসহ তার সঙ্গীরা বিশ্ববিদ্যালয় ভবন থেকে বের হয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরে আসামিরা লাঠিসোটা, ছুরি-চাকু ও চাপাতি হাতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ধাওয়া করে পারভেজ ও তার বন্ধু তরিকুল ইসলামকে মারধর এবং পারভেজের বুকে ছুরিকাঘাত করে। এতে পারভেজ মারাত্মক আহত হয়। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।