দেশ বিদেশ
নারী-শিশুদের আইনি ও স্বাস্থ্য সহায়তায় সেল গঠন বিএনপি’র
স্টাফ রিপোর্টার
১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার
দলীয় আইনজীবী ও চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ‘নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনি সহায়তা সেল’ এবং ‘নিপীড়িত নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সহায়তা সেল’ নামে দু’টি সেল গঠন করেছে বিএনপি। এই সেল সারা দেশে সংঘটিত নারী ও শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করবে। বিএনপি’র ৮৪ সাংগঠনিক জেলায় এই সেল গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই সেল গঠনের কথা জানান। সেলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হচ্ছেন বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান সময়ে নির্যাতিত আছিয়াকে ধর্ষণের পর মৃত্যুর বিষয়টি কোনোমতেই দেশবাসী মেনে নিতে পারছে না। বর্তমান শাসনকালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূলে অতি দ্রুত আইনের শাসন বলবৎ, কিন্তু প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতকারীরা নানাভাবেই আশকারা পাচ্ছে। মানুষের সমবেত ধ্বনি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, কিন্তু সেটি যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেতে থাকবে। আইনের শাসনের শক্ত কাঠামো তৈরি করা হলেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন যোগ্য, দক্ষ, ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও মানবিক না হলে সমাজে অন্যায়-অবিচার এবং খুন, জখম, নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকোপ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। অবিলম্বে সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন বলবৎ করে সমাজে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমরা আবারো জোরালো দাবি করছি, ধর্ষণে নির্যাতিত শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে হত্যাকারীদের ধৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অতি দ্রুত নিশ্চিত করা হোক। আমি আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ও তার পরিবারের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।
রিজভী বলেন, বিগত ১৬ বছর দুঃশাসনের জাঁতাকলে আমাদের অতিপরিচিত শান্তি ও সুস্থময় পরিপার্শ্বকে বিকৃত করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের বাংলাদেশের সামাজিক সংহতিকে বিনষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে সমাজকে পচা গলিত দুর্গন্ধময় করার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অন্যের জমি দখল, লুট, টাকা পাচারের মহা উৎসবের মধ্যদিয়ে নিজের সিংহাসন অটল রাখতে সব ধরনের নোংরামিকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার শাসনের সবসময়ে হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, নারী, শিশু নির্যাতন, বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন, রাষ্ট্র ও সমাজে এমনই বিস্তার লাভ করেছিল, যাতে সভ্য, শিষ্ট, সজ্জন মানুষের বসবাস করা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছিল। সাধারণ মানুষকে লাঞ্ছিত করতে, দুর্দশায় ফেলতে তারা কোনো দ্বিধা করতো না। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে অবমাননা, অতিকথন ও অপ-প্রচারের মাধ্যমে বিরতিহীনভাবে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছিল। যাবতীয় ভয়, হুমকি ও দুর্বিপাকের মধ্যেও দেশের নাগরিকবৃন্দকে জীবনযাপন করতে হয়েছে।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সেই রেশ ধরেই চলছে, এখনো নারী-শিশু নির্যাতনকারীরা যেন সুযোগের অপেক্ষায় ওত পেতে বসে রয়েছে। সমপ্রতি মাগুরায় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বোনের শ্বশুর কর্তৃক ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ, ধর্ষণ করার পর কয়েকদিন চিকিৎসারত থেকে বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুবরণ সারা জাতিকে বিমূঢ় বেদনায় বেদনার্ত করেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সারা জাতির চোখ অশ্রুসজল। দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনে মানবিকতা, নৈতিকতা, নায্যতা, ন্যায়বিচার অদৃশ্য করা হয়েছে। অপকর্মকারীরা অধিকাংশই ছিল শেখ হাসিনার দলের লোক। কারণ এরা জনসেবার চেয়ে আত্মসেবাকেই বড় করে দেখেছে।