দেশ বিদেশ
ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ থেকে
১১ জানুয়ারি ২০২৫, শনিবার২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দু’দিন প্রচণ্ড শৈত্যপ্রবাহের কারণে বিফলে গেলেও দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে ক্রেতা দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। গতকাল ছুটির দিনে সব বয়সী ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। দর্শনার্থীদের স্রোতে মেলায় যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তাই বিক্রেতাদের মুখেও দেখা গেছে সন্তুষ্টির ছাপ।
শুক্রবার সকাল থেকেই দর্শনার্থী বাড়তে থাকে বাণিজ্য মেলায়। সন্ধ্যায় মেলার ২০ একর জায়গায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। মেলায় দর্শনার্থী বাড়তে থাকায় এ সময় বিক্রেতাদেরও ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। আশানুরূপ ক্রেতা-দর্শনার্থী পেয়ে খুশি বিক্রেতারা। দেশের সার্বিক অস্থিরতা কেটে একটি শান্ত পরিস্থিতি থাকায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সাড়া ভালো পাওয়া গেছে বলে ধারণা করছেন টিকিটের ইজারাদার প্রতিষ্ঠান দিপন গ্রুপের অপারেশন ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম হৃদয়। তিনি জানান, চলতি বছর প্রথম বাণিজ্যমেলায় ই-টিকিটিং সিস্টেম চালু করেছেন তারা। বাণিজ্যমেলার অফলাইন টিকিট কাউন্টারের পাশেই তাদের নিজেদের স্বেচ্ছাসেবীগণ দর্শনার্থীগণ ই-টিকিট ক্রয় করতে সহযোগিতা করছেন। পাশাপাশি রাজধানী ঢাকার কুড়িল ও ফার্মগেট, নারায়ণগঞ্জ ও সাইনবোর্ড এবং নরসিংদী থেকে মেলা অভিমুখে চলাচল করা দুই শতাধিক বিআরটিসি বাসের টিকিটের সঙ্গেই মেলায় প্রবেশের টিকিট পাওয়া যায় বলে জানান তিনি। তাছাড়া বিকাশ ও নগদেও সহজে দর্শনার্থীগণ প্রবেশ টিকেট ক্রয় করতে পারছেন।
এবার মেলায় ৩৬১টি স্টল-প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মাঝে ৩৫০টি দেশীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠান ও সাতটি দেশের জন্য ১১টি স্টল প্যাভিলিয়ন রয়েছে। মেলায় গৃহস্থালি বিভিন্ন পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ দেখা গেছে। প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি আগ্রহ রয়েছে প্রেসার কুকার, জুস মেকার, জুস ব্লেন্ডার, ওভেন, রাইস কুকার, ইস্ত্রি, ইন্ডাকশন চুলা, ফ্যানসহ নানা ধরনের ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক গৃহস্থালি পণ্যের। মেলায় অংশ নেয়া হাতিল ফার্নিচারের কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, আমাদের কোম্পানি ফার্নিচার পণ্যে মেলা উপলক্ষে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। আর এ কারণে ক্রেতাদের আগ্রহ রয়েছে হাতিলে। মেলায় অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবার ক্রেতা-দর্শনার্থী বেশি হওয়ায় অর্ডারও ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি। মেলায় আসা রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা কাউসার আহমেদ মিলন বলেন, হরেক রকমের পণ্য পাওয়া যায় বলে প্রতি বছরই মেলার অপেক্ষায় থাকি। এবার মেলা থেকে বিআরবি ক্যাবল, সেনা কল্যাণ সংস্থার কিছু যন্ত্রাংশ ও ঘরের কিছু নিত্যপণ্য কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।
দর্শনার্থী মো. আল-আমিন বলেন, বাণিজ্যমেলা এখন আর শুধু কেনাবেচার বাজার না, এটি রাজধানীবাসীর উৎসবের উৎস হয়ে উঠেছে। ছুটির দিনে বাচ্চাদের শিশুপার্কের রাইডে চড়াবো বলে নিয়ে এসেছি। কাঁঠালবাগান এলাকা থেকে মেলায় আসা ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, ছুটির দিন থাকায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। মেয়ের পছন্দের বিজ্ঞান বক্স কিনবো। ঘরের কিছু নিত্যপণ্য কেনারও পরিকল্পনা আছে। উল্লেখ্য, গত ১লা জানুয়ারি মাসব্যাপী ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চলবে ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে পূর্বাচলে চতুর্থবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ও ছুটির দিন রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছে।