দেশ বিদেশ
দু’দফা কর্মসূচি ঘোষণা ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের
স্টাফ রিপোর্টার
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শুক্রবারকওমি মাদ্রাসা সমূহের সনদ ইস্যু, স্বীকৃতি ও মানোন্নয়নের জন্য অনতিবিলম্বে আল-হাইআতুল উলয়ার অধীনে কওমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১০ দফা প্রস্তাবনা এবং দুই দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ। কর্মসূচিগুলো হলো- ২১শে সেপ্টেম্বর থেকে ২০শে অক্টোবর পর্যন্ত দেশব্যাপী জেলা পর্যায়ে দাবি বাস্তবায়নে সেমিনার ও শিক্ষা অফিসার বরাবর স্মারকলিপি পেশ এবং অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ ডাক দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের উদ্যোগে বৈষম্য নিরসনে কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে জাতীয় সেমিনারে এসব প্রস্তাবনা ও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
স্বীকৃতির মানোন্নয়ন বিষয়ক প্রস্তাবনাগুলো হলো- কওমি মাদ্রাসাসমূহের সনদ ইস্যু, স্বীকৃতি ও মানোন্নয়নের জন্য অনতিবিলম্বে আল-হাইআতুল উলয়ার অধীনে ‘ইউজিসি’র অনুমোদনক্রমে কওমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। দাওরায়ে হাদিস বা তাকমীলের উক্ত সনদ ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিষয়ে ‘কওমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে প্রদান করা হবে। তাকমীলের প্রয়োজনীয় শিক্ষাক্রম তৈরি, সিলেবাস পুনর্গঠন, পরীক্ষা গ্রহণ, মূল্যায়ন সার্বিক বিষয় কওমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হবে। শুধু দাওরায়ে হাদিস নয়, বরং কওমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক হিসেবে ফযিলতের স্বতন্ত্র স্বীকৃতিও প্রদান করা হবে। নাহবেমীর জামাতকে এসএসসি, কাফিয়া জামাতকে এইচএসসি মানের স্বীকৃতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষার অধীনে প্রদান করতে হবে। সকল তাখাসসুসকে (অন্তত দুই বছর মেয়াদি) নিজ নিজ সাবজেক্টে পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা হিসেবে জাতীয় কওমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বীকৃতি ও সনদ প্রদান করতে হবে।
সিলেবাস বিষয়ে প্রস্তাবনা: দাওরায়ে হাদিসের জন্য জাতীয় কওমি বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি শিক্ষাক্রম এমনভাবে তৈরি করতে হবে। ফযিলত স্তরের জন্য ইসলামী ভ্রান্ত মতবাদ বিষয়ক একটি প্রেজেন্টেশন সিলেবাসে যুক্ত থাকতে হবে। নাহবেমীর ও কাফিয়া জামাতসমূহে বাংলা, ইংরেজি ও অংকের প্রাথমিক পাঠদানের মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডাবল মাস্টার্স এবং পিএইচডি করার সুযোগ প্রদান করা হবে। সরকারি বা বেসরকারি চাকরিতে উক্ত বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত যেসব পদ রয়েছে, যেমন- সরকারি মসজিদে ইমাম-খতিব, কাজী পদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ- বিজিবিসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষক পদ ইত্যাদি, এগুলোতেও উক্ত সনদকে গ্রহণ করা হবে। যারা বিগত সময়ে উক্ত প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের আগে দাওরায়ে হাদিস বা তাকমীলে পাস নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাদেরকে পূর্বোক্ত প্রস্তাবনা অনুসারে অ্যাসাইনমেন্ট পত্র লেখার শর্তে কওমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একই মানের মাস্টার্স এর সনদ প্রদান করা হবে। যারা ইতিমধ্যে তাখাসসুস সম্পন্ন করেছেন, তারা পূর্বোক্ত প্রস্তাবনা অনুসারে নির্ধারিত রিসার্চ পেপার জমা দেয়ার শর্তে কওমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট সনদ প্রদান করা হবে। সেমিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই বলেন, সনদের স্বীকৃতি এটা কোনো অনুকম্পা নয়, এটা কওমি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার। তাই এর যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন রাষ্ট্রকেই করতে হবে। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন- জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট ইসলামী অর্থনীতিবিদ মুফতি আবদুল্লাহ মাসুম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মুফতি রেজাউল করীম আবরার, মুফতি ইসমাইল সিরাজী আল-মাদানী, মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফী, মুফতি আবদুল আজীজ কাসেমী, মাওলানা নূরুল করীম আকরাম।