দেশ বিদেশ
১৩ বছর পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াত নেতারা
দুর্বৃত্তপনা হলেই প্রতিরোধ
স্টাফ রিপোর্টার
৭ আগস্ট ২০২৪, বুধবার২০১১ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শেষ কার্যক্রম। মাঝের ১৩ বছর বন্ধই ছিল কার্যালয়। নানা চড়াই উৎরাই পার করতে হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের। যুদ্ধাপরাধের দায়ে শীর্ষ অনেক নেতার ফাঁসি ও জেল হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই শুরু করেছিল জামায়াতের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন। এই লম্বা সময়ে দলীয় কার্যক্রম অনেকটা আড়ালে থেকেই করতে হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের। গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পর সন্ধ্যায় কার্যালয় ধোয়া মোছার কাজ শুরু হয়ে যায়। বন্ধ থাকা দপ্তরটি খুলে দেয় জামায়াত। আর গতকাল ১৩ বছর পর রাজধানীর মগবাজারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলন করে। দলের আমীর ডা. শফিকুর রহমান কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
এ সময় সুবিধাবাদী দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী বিভিন্ন স্থানে সরকারি স্থাপনা, প্রতিপক্ষের বাড়িঘর এবং ক্ষেত্র বিশেষে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান। তিনি এর নিন্দা জানিয়ে বলেন, গতকালই আমরা উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছি, আজকে আবারো আমরা জাতিকে আহ্বান জানাবো, যেখানেই দুর্বৃত্তপনা দেখবেন তৎক্ষণাৎ এদের প্রতিরোধ করতে হবে। আমরা কথা দিচ্ছি, বিদ্যমান প্রশাসনকে এ বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।
অনেক মানুষের জীবনহানির মধ্যদিয়ে গতকাল একটি ‘পরিবর্তন’ আসে উল্লেখ করে জামায়াতের আমীর বলেন, আমরা অতীব দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এই ধরনের পরিবর্তনের উষালগ্নে একটি সুবিধাবাদী দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়, শহরে এবং গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়, প্রতিপক্ষের বাড়িঘর এবং ক্ষেত্র বিশেষে কিছু কিছু জায়গায় সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আঘাত করেছে। কোথাও ভাঙচুর, কোথাও লুটপাট করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। যাদের অন্তরে বিবেক আছে, মানবতা আছে, তারা এগুলো করতে পারে না। দলের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, এখন থেকে যেখানে মানুষের বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে, সেখানে জামায়াতের নেতাকর্মীরা যেন পাহারাদারের ভূমিকা পালন করেন। যারা লুটপাট-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানান এই জামায়াত নেতা। তিনি বলেন, ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই দেশে কোথাও কোন ফাঁকফোকরে কোনো দুর্বৃত্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসে, এইজন্য দুই-একটা সংগঠনের দ্বারা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এখানে আপামর জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাহলে অবশ্যই দুর্বৃত্তরা এই দুঃসাহস দেখাবে না। যারা ইতিমধ্যে এ কাজগুলো করেছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদের ছাড় দেয়া ঠিক হবে না।
জামায়াতের আমীর আরও বলেন, এখানে কেউ সংখ্যালঘু নয় এবং কেউ সংখ্যাগুরু নয়। এজন্য কে সংখ্যালঘু এ প্রশ্নটি আমাদের কাছে অবান্তর। আমরা এসব দুর্বৃত্তপনা মানবতা বিরোধী কাজ মনে করি। আমরা জাতিকে আহ্বান জানাবো, যেখানেই দুর্বৃত্তপনা দেখবেন, তৎক্ষণাৎ এদের প্রতিরোধ করতে হবে। আমরা কথা দিচ্ছি, বিদ্যমান প্রশাসনকে আমরা এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে, নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তারা কীভাবে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, যারা আমাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, সে সরকারই তো ইতিমধ্যে... এ বিষয়ে আর বলতে চাই না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছেন, জামায়াত এটাকে সমর্থন করে কিনা জানতে চাইলে শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্রদের সম্মান করি, তাদের আমরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে ধারণ করি, আজকের এ পরিবর্তন তাদের ত্যাগের ফসল। তাদের অধিকার আছে এ ধরনের কিছু বলার। এ ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে খুব বেশি হোমওয়ার্ক করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন শফিকুর। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী বলেন, কেয়ারটেকার বলেন এটা নিয়ে বেশি হোমওয়ার্ক করার দরকার পড়বে না। যদিও আইনের দিক থেকে এটাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন জনগণের জন্য। প্রয়োজনে আবার সংশোধন করা যাবে। কাজ করছি দুই একদিন সময় লাগবে।’
খুবই চমৎকার বক্তব্য, আমরা তার কথার সাথে একমত
এই বক্তব্যের আলোকে দলমত নির্বিশেষে সকলের সংযত আচরণ করা উচিত। বিশেষ করে ভিন্নধর্মাবলম্বী ভাই বোনদের সুরক্ষা দিতে হবে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো।
চমৎকার বক্তব্য!!!