দেশ বিদেশ
এমপি আনার খুনের ঘটনা দুই রাষ্ট্রের বিষয় নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কূটনৈতিক রিপোর্টার
২৩ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবারকলকাতার বিধাননগরের যে বাসায় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে গিয়ে কলকাতার পুলিশ মরদেহ পায়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের বরাতে এই তথ্য দেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এমপি আনার সাহেবের হত্যাকাণ্ডটি অত্যন্ত দুঃখজনক, মর্মান্তিক, অনভিপ্রেত। তিনি বলেন, আনোয়ার আজিম আনার খুনের ঘটনা দুই দেশের বিষয় নয়। তিনি বলেন, কলকাতা পুলিশ যে ফ্ল্যাটে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে ঢুকেছিল, কোনো লাশ সেখানে পায়নি। তবে, হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাকে এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ডিবি গ্রেপ্তার করেছে। এবং কলকাতা পুলিশও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ই মে তিনি দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কলকাতায় পৌঁছে এমপি আনার ওঠেন তার বন্ধু, বরাহনগরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। কিন্তু ১৬ই মে থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারছিল না তার পরিবার। আনার নিখোঁজ জানিয়ে ১৮ই মে বরাহনগর থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। সেখানে বলা হয়, ১৩ই মে দুপুরে সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি আনার।
তবে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে আসা এক বার্তায় বলা হয়, দিল্লি যাচ্ছেন তিনি। এদিকে আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন পরে ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বাবার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানান। পরের কয়েকদিনে দুই দেশের পুলিশের মধ্যে যোগাযোগের পর বুধবার সকালে কলকাতার সংবাদমাধ্যমে আনারের খুন হওয়ার খবর আসে। বলা হয়, নিউ টাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন নামের বিলাসবহুল একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে পাওয়া গেছে বাংলাদেশের এ সংসদ সদস্যের লাশ। পরে দুপুরে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এমপি আনারকে কলকাতার একটি বাসায় ‘পরিকল্পিতভাবে খুন’ করা হয়েছে। ভারতীয় পুলিশের দেয়া তথ্যে দেশে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তদন্ত চলছে, কীভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এ নিয়ে বিস্তারিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলবে। আমরা আমাদের মিশনের মাধ্যমে খোঁজ রাখছি। এবং মিশন কলকাতা পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আমাদের প্রান্ত থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সুতরাং বিষয়টি তদন্তাধীন, এর চেয়ে বেশি কিছু আমি বলতে পারি না। লাশ দেশে আনার বিষয়ে এক প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেখুন, সেটি তো তদন্তাধীন, এখনো কোনো লাশ তো পাওয়া যায়নি। কলকাতা পুলিশ ফ্ল্যাটে ঢুকেছিল, তারা কোনো লাশ পায়নি বলে আমাকে আমাদের মিশন, কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশন থেকে সেটি জানানো হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় কোনো দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এই ঘটনা তো অত্যন্ত দুঃখজনক। যেহেতু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ও বলেছেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সুতরাং এটি দুই রাষ্ট্রের বিষয় নয় আসলে।”