দেশ বিদেশ
তরিকে হত্যা করা হলো কেন?
নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
২৩ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবারপ্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বাড়ির পাশে খেলতে যায় মন্দিরভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী তরি বাড়ৈ। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বাড়িতে ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে তার পরিবার। একপর্যায়ে কলাগাছের ঝোঁপে লুকিয়ে রাখা তরির দেহ নিথর অবস্থায় উদ্ধার করে এলাকাবাসী। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাদ নামে এক কিশোর ও তার মাকে ঘরবন্দি করে এলাকাবাসী। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে সাদ ও তার মাকে। সাদ তরিকে হত্যা করেছে স্বীকার করলেও কেন মেরেছে এটা এখনো অজানা। ১২ বছরের এক কিশোরের হাতে ৬ বছরের মেয়ে হত্যার ঘটনায় হতভম্ব এলাকাবাসী। মঙ্গলবার ঢাকার নবাবগঞ্জের শোল্লার চন্দ্রপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তরি উপজেলার দক্ষিণ শোল্লা চন্দ্রপাড়া গ্রামের সুমন বাড়ৈ ও বকুল বাড়ৈ দম্পতির একমাত্র মেয়ে। সে স্থানীয় দুর্গা মন্দিরে স্থাপিত মন্দিরভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রেণিতে পড়তো।
অভিযুক্তরা একই গ্রামের প্রবাসী আবু সাঈদের ছেলে ও স্ত্রী বলে জানা যায়। নিহতের মা বকুল জানান, সাদ ও ওর মা আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ গুম করতে চেয়েছিল। তবে কেন ওরা আমার মেয়েকে হত্যা করলো আমি এখনো বুঝতে পারছি না। আমি ওদের দুইজনেরই ফাঁসি চাই! স্থানীয়রা জানান, সাদের মা একটি চালাক প্রকৃতির মহিলা। সাদের বাবা বিদেশে থাকায় সাদ এ বয়সেই বখাটে। তবুও তার মা ছেলেকে শাসন করেন না। মায়ের কারণেই ছেলেটা এই বয়সেই এমন জঘন্য কাজ করতে পেরেছে। ছেলের হত্যাকে গোপন করতেই তিনি লাশ গুমের চেষ্টা করেছেন বলে ধারণা করছে অনেকে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাদ ও তার মার বিচার দাবি করেন এলাকাবাসী। তারা মনে করেন সাদ ও তার মাকে জিজ্ঞাসা করলেই বের হয়ে যাবে কেন হত্যা করা হলো তরিকে। হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবিও জানান তারা।
তরিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তার বাবা সুমন বাড়ৈ বাদী হয়ে আবু সাদ ও তার মা শিমু বেগমকে আসামি করে মঙ্গলবার রাতেই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল দুপুরে আবু সাদ-এর মা শিমু বেগমের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের দু’জনকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান, নবাবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক অজিত কুমার রায়। নবাবগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহ্ জালাল, হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। গতকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশু মেয়েটিকে মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সাদ। তার মার কি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে জানতে পারবো।