দেশ বিদেশ
কুকি-চিন আর্মির নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বমসহ গ্রেপ্তার ২
বান্দরবান প্রতিনিধি
১৮ মে ২০২৪, শনিবারকুকি-চিন আর্মির দেশ-বিদেশে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি জোনের নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বমসহ ২ জনকে লাইমী পাড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫। গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, র্যাব-১৫ বান্দরবান ক্যাম্পের আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোর ৬টার সময় বান্দরবান লাইমী পাড়া থেকে সিয়াম থং বমের মেয়ে আকিম বম ও মৃত থন থাম বমের ছেলে লাল সিয়াম লম বম (৬০)কে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকিম বম জানায়, ২০২৩ সালে সে কাল্পা কেউক্রাডং এলাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে অধ্যয়ন করে। এ সময় মাইকেল নামে একটি ছেলের সঙ্গে প্রথমে পরিচয় ও পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমিক মাইকেলের মাধ্যমেই সে কেএনএফ এ ট্রেনিংয়ে যায়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শুরু দিকে আকিম ও মাইকেল সন্ধ্যা বেলায় পায়ে হেঁটে কেএনএ-এর ট্রেনিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে রওনা করে এবং পরবর্তী দিন ভোর পাঁচটার দিকে তারা রোয়াংছড়ির গহীন পাহাড়ী জঙ্গলের ট্রেনিং সেন্টারে পৌঁছায়।
সেখানে পৌঁছানোর পর ভান থার ময়-বম নামে কেএনএ-এর একজন নারী কমান্ডারের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয় এবং ট্রেনিং সেন্টারে তাদের স্বাগত জানায়। তার ভাষ্যমতে, সেখানে আরও অনেক মেয়ে ছিল, তবে তাদের বেশির ভাগই মুখে কালি মাখা থাকতো। যার কারণে অনেকেই অপরিচিত। এ কালি প্রতি ৭দিন পরপর পরিবর্তন করতো। ট্রেনিং সেন্টারের নাম ছিল কেডিওন (ঈশ্বরের দিকে)। আকিম বমসহ তাদের ব্যাচে ২০ জন প্রশিক্ষণার্থী ছিল। তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতো ৪-৫ জন এবং প্রশাসনিক কাজের জন্য আলাদা সদস্য নিয়োজিত ছিল। ট্রেনিংয়ের বিষয়ে সে জানায়, প্রাথমিকভাবে ভোর তিনটার দিকে ঘুম থেকে উঠে ট্রেনিং শুরু করতো। প্রশিক্ষণ হিসেবে শারীরিক প্রশিক্ষণ বিশেষ করে মার্শাল আর্ট ট্রেনিং গ্রহণ করতো। ট্রেনিং কষ্ট সহ্য করার জন্য তাদের বেত দিয়ে আঘাত করা হতো। এ ছাড়া লাঠি দিয়েও আঘাত ও টর্চার করা হতো যাতে বিভিন্ন কঠিন পরিসি’তিতে টিকে থাকতে পারে। আর এ প্রশিক্ষণে প্রধানত তাদের জঙ্গলে পাহাড়ি এলাকায় নিজেদের কীভাবে লুকিয়ে রাখতে হয় সেটা শেখানো হতো। এ ছাড়াও জঙ্গলে বৈরী পরিবেশে কীভাবে টিকে থাকতে হয় সে প্রশিক্ষণও দিতো। এ সকল প্রশিক্ষণ সকাল ১০টা পর্যন্ত চলমান থাকতো। প্রশিক্ষণ চলাকালে সাধারণ খাবারের পাশাপাশি তারা বনের পাখি, কাঠবিড়ালি শিকার করেও রান্না করে খেতো। তার ট্রেনিংয়ের সময় মেয়েদের একদলে ৫০ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রায় তিন শতাধিক পুরুষ সদস্যও প্রশিক্ষণে ছিল। রুমা এলাকায় আরও দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ প্রশিক্ষণরত ছিল বলেও জানায় সে।