ষোলো আনা
‘বক্সিং ছেড়ে দেবো’ স্ট্যাটাস দেয়া সুরা কৃষ্ণ এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন
দিবাকর চৌধুরী
২ জুলাই ২০২২, শনিবার
সুরা কৃষ্ণ চাকমা, ক’দিন আগে এই মানুষটিকে ক’জনই বা চিনতেন। বক্সিং রিংয়ে দ্যুতি ছড়িয়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছেন তিনি। ক্রিকেট, ফুটবলে বুঁদ হয়ে থাকা বাঙালি তবে কি পাচ্ছে এক বিশ্বমানের বক্সার? প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের মাটিতে আয়োজিত কোনো আন্তর্জাতিক পেশাদার বক্সিং টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন দেশের প্রথম পেশাদার বক্সার সুরা কৃষ্ণ চাকমা। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই বক্সিংয়ের হাতে খড়ি দেশসেরা এই বক্সারের। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। ২০১৩-২০১৪ সালে জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়ন। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ২০১৪ সালের কমনওয়েলথ গেমসে। বাবার হাত ধরে ক্রীড়াঙ্গনে আশা সুরা কৃষ্ণ রীতিমতো বক্সিং রিংয়ে প্রতিপক্ষের আতঙ্ক। অথচ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা হারানো এই ছেলেটি এক সময় বক্সিং ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
সুরা কৃষ্ণ বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বক্সিং করাটা অনেক কঠিন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে মনে হয়েছিল একসঙ্গে দুটো করা সম্ভব না।
সুরা কৃষ্ণ চাকমা তার কঠোর অধ্যবসায় ও হেরে না যাওয়ার মানসিকতা কাজে লাগিয়ে নিজেকে যেভাবে তৈরি করেছেন তাতে বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশন যেন এক সোনার ডিম পাড়া হাঁসের সন্ধান পেয়েছে। বাংলাদেশ বক্সিং এখনো তেমনভাবে জনপ্রিয় না হলেও সুরা কৃষ্ণ চাকমার সাফল্য, সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। অন্য সব খেলাধুলার ভিড়ে এখনো অনেক তরুণ-তরুণী বক্সিং অঙ্গনে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চান। নানাবিধ অনিশ্চয়তা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাব বক্সিংকে দূরে সরিয়ে রাখছে। এ বিষয়ে সুরা কৃষ্ণ চাকমা বলেন, বক্সিংয়ে এখনো পৃষ্ঠপোষকতার অনেক অভাব রয়েছে। আমাদের স্পন্সর পেতে খুব ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। বক্সিং সকলের জন্য না। এর জন্য ফিজিক্যালি এবং মেন্টালি ফিট থাকতে হয়। ২০১৩ থেকে আমি বক্সিং করি তখন মানুষ এত চিন্তা করতো বা জানতো না। এখন কিন্তু ধীরে ধীরে মানুষ জানছে। তিনি আরও বলেন, বক্সিংয়ের মাধ্যমে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই। দেশে আনতে চাই বড় বড় পুরস্কার।