খেলা
৯ ছক্কায় রনির ১৪১ মোহামেডানের প্রথম ‘৩০০’
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবারআগের ১২ ম্যাচে ফিফটি স্রেফ ২টি। বেশির ভাগ ম্যাচেই ছিলেন না ছন্দে। সেই রনি সুপার লীগের দ্বিতীয় ম্যাচেই যেন স্বরূপে ফিরলেন। তার বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ পায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। এরপর বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে প্রাইম ব্যাংককে অল্পতেই আটকে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের (ডিপিএল) সুপার লীগের দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রাইম ব্যাংককে ৩৩ রানে হারায় মোহামেডান । টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩১৭ রান করে মোহামেডান। চলতি ডিপিএলে এবারই প্রথম মোহামেডানের দলীয় সংগ্রহ ৩০০ টপকায়। ৮ চারের সঙ্গে ৯ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ১৪১ রান করেন রনি তালুকদার। জবাবে ২৮৪ রানে থামে প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস। সুপার লীগে এটা মোহামেডানের টানা দ্বিতীয় জয় আর প্রাইম ব্যাংকের প্রথম হার। সবমিলিয়ে ১৩ ম্যাচে ১০ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে আছে মোহামেডান। ৫ নম্বরে থাকা প্রাইম ব্যাংকের সমান ম্যাচে এটা ষষ্ঠ হার।
এদিন লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় ২০ রানে অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালকে হারায় প্রাইম ব্যাংক। এরপর ৬০ রানের জুটি গড়েন পারভেজ হোসেন ইমন ও শাহাদাত হোসেন দীপু। ৩৮ রান করে অধিনায়ক ইমন ফিরলে ভাঙে তাদের জুটি।
এরপর আবার জাকির হাসানকে নিয়ে আবার নতুন জুটি গড়েন দীপু। এবার তাদের জুটির স্থায়ীত্ব হয় ৪৯ রানের। ৫১ রান করে ফেরেন দীপু। তার ৭৩ বলের ইনিংসে ছিল ১ চার ও ৩ ছক্কা।
এরপর মুশফিকুর রহিম, জাকির হাসান ও নাঈম হাসান ফেরেন মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে। যদিও মুশফিকের আউটকে কেন্দ্র করে খেলা বন্ধ থাকে অন্তত ১৫ মিনিট। ম্যাচের ৩৩তম ওভারে প্রাইম ব্যাংকের স্পিনার নাঈম হাসানকে মিড উইকেটে স্লগ সুইপ করেন মুশফিক, সেটা বাউন্ডারিতে তালুবন্দি করেন আবু হায়দার রনি। তবে রনির পা বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করেছে কিনা সেটা নিয়েই বিতর্কের সৃষ্টি হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত মুশফিককে আউট মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়।
এরপর শেখ মেহেদী হাসান ও সানজামুল ইসলাম ১০১ রানের জুটি গড়ে প্রাইম ব্যাংককে ম্যাচে ফেরান। কিন্তু ২৬৬ রানে ৪৯ রান করা সানজামুল ফেরার পর মাত্র ১৮ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রানে গুটিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। দশম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৪৫ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৪ রান করেন শেখ মেহেদী। মোহামেডানের হয়ে জোড়া উইকেট নেন মুশফিক হাসান, আবু হায়দার রনি ও নাসুম আহমেদ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩০ রানে ২ উইকেট হারায় মোহামেডান। ফিরে যান অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ও হাবিবুর রহমান মুন্না। এরপর ১৩৮ রানের জুটি গড়েন রনি তালুকদার ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ৫০ রান করা অঙ্কন ফিরলে ভাঙে তাদের জুটি। চলতি ডিপিএলে এখন পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে ৫৫ গড়ে অঙ্কনের সংগ্রহ ৬০৫ রান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় অঙ্কন আছেন তিন নম্বরে। অঙ্কন বিদায় নিলেও রনি ঠিকই রানের গতি সচল রাখেন। ৬৫ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় পঞ্চাশ করেন তিনি। ফিফটি থেকে সেঞ্চুরিতে যেতে রনির লাগে আর ৩৪ বল। তিন অঙ্ক ছুঁয়ে আরও আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন এই ৩৩ বছর বয়সী ওপেনার।
শেষ পর্যন্ত সানজামুল ইসলামের বলে স্লগ করতে গিয়ে শাহাদাত হোসেনের দারুণ ক্যাচে থামে তার ইনিংস। তার আগে ১৩১ বলে ১৪১ রানের ইনিংসে তিনি হাঁকান ৮ চার ও ৯ ছক্কা। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটাই রনি সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগের সর্বোচ্চ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির বিপক্ষে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ১৩২ রানের ইনিংস। এরপর শেষদিকে ২৯ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ফিফটি করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৩১৭ রান করে মোহামেডান। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে দুই উইকেট নেন শেখ মেহেদী।