দেশ বিদেশ
স্থানীয় সরকার নির্বাচনকেও তামাশায় রূপান্তরিত করেছে
স্টাফ রিপোর্টার
৪ মে ২০২৪, শনিবারবিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন এখন বিশ্ববাসীর কাছে রীতিমতো হাস্যকর কৌতুকে পরিণত হয়েছে। কেবল জাতীয় নির্বাচন নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোকেও ‘আমরা আর মামু’দের তামাশায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের ভোটাধিকার আজ বিপন্ন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ রাষ্ট্রীয় অন্যায় ও অবিচারের জবাব দিতো। সেটি আজ মানুষের মন থেকে ভুলিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু চিহ্নিত ভোট ডাকাত সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করেছে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের প্রকাশ্য মদতে গত ৭ই জানুয়ারি গণ-বর্জিত ডামি নির্বাচনের পর দেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এক ব্যক্তির স্বৈরশাসন। এক গভীর সংকটে পতিত হয়েছে মা-মাটি-মানুষ। আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা ব্যতীত প্রতিটি জনগণ আজ ভয়াবহ শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি অতিক্রম করছে।
প্রধানমন্ত্রীর স্বেচ্ছাতন্ত্রের মূল উপাদান হচ্ছে সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, লুটপাট, টাকা পাচার আর সর্বক্ষেত্রে অনিয়ম ও অনাচার। তিনি আরও বলেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আসন্ন লোক দেখানো উপজেলা নির্বাচন সর্বাত্মক বর্জনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর স্বৈরতন্ত্র, ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। দস্যু দলের কাছে যেমন সাধারণ মানুষের সম্পদ নিরাপদ নয়, তেমনি ভোট ডাকাত সরকার কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে না। এর আগে সকালে রাজধানীর উত্তরায় তুরাগ থানা বিএনপি’র উদ্যোগে প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ মানুষদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্যালাইন ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়ে আপনি কি নিজেকে একমাত্র ত্রাণকর্তা মনে করছেন? জনগণ তা জানতে চায়।
আপনি জনগণের ভোটডাকাতি করেছেন। জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের চাবি ভারতের কাছে বন্ধক রেখে আর ক্ষমতা ধরে রাখা যাবে না। পঁচাত্তরের পর দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সবচেয়ে সুষ্ঠু হয়েছে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনি কী তাহলে স্বীকার করে নিলেন ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন এবং ১৯৯৬ সালের নির্বাচন ঠিক ছিল না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলো ডামি নির্বাচন। বাংলাদেশের মানুষসহ সারা পৃথিবীর মানুষ এ নির্বাচনকে ধিক্কার জানাচ্ছে। রিজভী বলেন, এই সরকারের অধীনে যত নির্বাচন হয়েছে সবই ডামি নির্বাচন, একতরফা নির্বাচন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচনে জনগণই ঠিক করবে তারা কাদের ক্ষমতায় বসাবে। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সদস্য সচিব আমিনুল হক, পটুয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. লতিফ মাসুম, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।