দেশ বিদেশ
তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবি
দেশে আসা ৮ জনের মরদেহ হস্তান্তর
স্টাফ রিপোর্টার
৪ মে ২০২৪, শনিবারআকাশ সমান স্বপ্ন নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইতালি পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন তারা। হয়তো ভেবেছিলেন ইতালি পৌঁছে গেলেই খুলবে ভাগ্যের চাকা। অভাব ঘুচবে পরিবারের। বাকি জীবনটা কাটানো যাবে শান্তিতে। জীবনের সর্বস্ব খুইয়ে দালালকে কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে সমুদ্রপথের যাত্রা যে কতোটা ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটি হয়তো জীবনের অভাব তাড়ানোর চিন্তার কাছে হার মানে। তাইতো জীবনের পরোয়া না করে এক অনিশ্চিত জীবনের দিকে পা বাড়িয়েছিলেন তারা। কিন্তু ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিভে যায় তাদের জীবন প্রদীপ। সেইসঙ্গে নিভে যায় তাদের স্বপ্নতরীও। লাশ শনাক্ত হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটযোগে ৮ জনের মরদেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে (ঢামেক) পাঠানো হয়।
এরপর কফিনবন্দি লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরেন স্বজনরা। যাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে তারা হলেন- মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সেনদিয়া গ্রামের সজল বৈরাগী (২২), একই থানার কদমবাড়ি গ্রামের মৃত পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (১৮), সরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ (২৪), কোদালিয়া গ্রামের কাজী সজীব (১৮), কেশরদিয়া গ্রামের তোতা খলিফার ছেলে কায়সার খলিফা (৩৫), গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার দাদন শেখের ছেলে রিফাত শেখ (২৪), একই থানার পদ্মাপট্টি গ্রামের আবুল কাশেম শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৫) এবং পদ্মাপট্টি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন (২৩)। লাশ বুঝিয়ে দেয়ার সময় বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গির আলম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ৮টি মরদেহ বিমানবন্দরে আসে। সেখান থেকেই মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ফরেনসিক চিকিৎসকের সামনে মরদেহবন্দি কফিন খুলে দেখা যায়, মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। সেহেতু নতুন করে আবার ময়নাতদন্ত না করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসআই আরও জানান, ৭ জনের নাম ও অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় হত্যা ও মানব পাচার সংক্রান্ত মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে অথবা দেশে যারাই জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে। এরআগে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি শেষ রাতে জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপে যাত্রাপথে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালকসহ নৌকাটি তিউনিসীয় উপকূলে ডুবে গেলে ৪৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি ও পাকিস্তানের ৮, সিরিয়ার ৫, মিসরের ৪ জন। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি ও অন্যজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে শনাক্ত হয়েছেন।