শেষের পাতা
চুরির মামলার তদন্তে গিয়ে মিললো অস্ত্রের সন্ধান
স্টাফ রিপোর্টার
২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবাররাজধানীতে চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ৪টি বিদেশি পিস্তলসহ ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. রাজীব হোসেন রানা (২৮), মো. শাহীন (৪০), মো. আবুল হাসান সুজন (২৫), মো. পারভেজ নুর (৩৮) ও মানিক চন্দ্র দাস (৩৬)। গতকাল বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ড. খ. মহিদ উদ্দীন। ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, গত ১২ই এপ্রিল চকবাজারের পূর্ব ইসলামবাগের একটি বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার মামলার প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত পেশাদার চোর মো. মামুনসহ তার দলের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মো. রাজীব হোসেন রানাকে একটি ৭ পয়েন্ট ৬৫ বোরের বিদেশি পিস্তল ও ৭ রাউন্ড গুলিভর্তি ম্যাগাজিনসহ গ্রেপ্তার করে চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বিজ্ঞ আদালতে দেয়া জবানবন্দি পর্যালোচনাকালে বিদেশি পিস্তল সংক্রান্ত তথ্য বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে মো. শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মহিদ উদ্দিন বলেন, এই চক্রের মূলহোতা মামুন ২২ মামলার আসামি। মামুনের অন্যতম সহযোগী তার মা হাসিনা। তারা স্থানীয়ভাবে চোর হিসেবে পরিচিতি। চুরি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গিয়ে চক্র গড়ে তোলে মামুন। কারাগারে গড়ে তোলা ১০ থেকে ১২ জনের চক্রটি স্থানীয়ভাবে মামুন বাহিনী হিসেবে পরিচিত। তারা নানা কৌশলে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে চুরি করে আসছিল। আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মামুন বাহিনীর একটি অংশের সদস্য রাজীব হোসেন রানাসহ চক্রের আরও ৩ সদস্য প্রায় এক বছর আগে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার একটি বাসায় চুরি করে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগী। কারণ ওই বাসা থেকেই টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ বেশকিছু অস্ত্র চুরি হয়। ফলে অবৈধ অস্ত্রের মালিক শাহিন কোনো অভিযোগ করেননি। পরবর্তীতে অস্ত্রের মালিক শাহিনকে গ্রেপ্তার করে অভিযান চালিয়ে ৫টি অস্ত্র ও ৩৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় গ্রেপ্তার রানার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা, সুজনের বিরুদ্ধে একটি, মানিকের বিরুদ্ধে ৪টি ও পারভেজের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে। এই ঘটনায় দুজন পলাতক রয়েছে বলেও জানান তিনি। গত এক বছরে চুরি করে পাওয়া অস্ত্রগুলো নানা কৌশলে হাত বদল হয় উল্লেখ করে অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ বলেন, মামুনের চক্রটি মূলত চুরির সঙ্গে জড়িত। তবে এই অস্ত্রগুলোর অপব্যবহারের সুযোগ ছিল। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে অস্ত্রগুলো একাধিকবার হাত বদল হয়েছে। অস্ত্রের প্রকৃত মালিক বৈধ নাকি অবৈধ জানতে চাইলে তিনি বলেন, যার বাসা থেকে অস্ত্রগুলো চুরি হয়েছে। তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। এমনকি সে যখন গ্রেপ্তার হয়েছে তখনো অস্ত্রের বৈধতার কোনো তথ্য দিতে পারেনি। অস্ত্রগুলো তিনি কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।