ঢাকা, ১১ মে ২০২৪, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

রাজশাহীতে মাদক কারবারির হামলায় ৪ পুলিশ আহত

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে
২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মাদক উদ্ধারের অভিযানে গিয়ে মাদক কারবারিদের দু’দফা হামলায় থানার চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কনস্টেবল মাহবুবকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কনস্টেবল মাহবুবের মাথা ফেটে গেলে হাসপাতালে ভর্তির পর ১২টি সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানা গেছে। মাহবুবের একটি হাতও ভেঙে গেছে। আহত এসআই আতিকুর রহমানসহ অপর তিন পুলিশকে উপজেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বারীনগর ও ময়নারটেক এলাকাসহ চরাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে। এদিকে পুলিশের দাবি, শুক্রবার বিকালে গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বারীনগর গ্রামে মাদক উদ্ধারে গেলে সংঘবদ্ধ মাদক কারবারি দলের নেতা তোজাম্মেল মেম্বারের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। গ্রামবাসী চার পুলিশকে চারদিক থেকে ঘেরাও দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। রাতভর অভিযান চালিয়ে দুই নারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে এলাকাবাসীর দাবি, মাদক উদ্ধারের নামে পুলিশের ৪ সদস্যের দলটি সাদা পোশাকে বারীনগর গ্রামের রফিকের বাড়িতে যায়।

বিজ্ঞাপন
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রফিক পালিয়ে যায়। তবে  মাদক না পেলেও পুলিশ রফিকের ভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা প্রতিবাদ করলে গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পদ্মার চরাঞ্চলের বারীনগরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশ ৬ নারীসহ ৬ জনকে আটক করেছে। উদ্ধার করেছে ১৯ বোতল ফেনসিডিল। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে। পুলিশ বলছে আটককৃতরা মাদক কারবারি।  এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা গেছে, শুক্রবার বিকালে এসআই আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে গোদাগাড়ী থানা পুলিশের চার সদস্যের একটি দল সাদা পোশাকে পদ্মা নদীর পশ্চিমপাড়ের সীমান্তবর্তী গ্রাম বারীনগরে যায় মাদকবিরোধী অভিযানে। এ সময় একজন সোর্সের সহায়তায় বারীনগর গ্রামের রফিকের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এলাকাবাসীর দাবি রফিকও পুলিশের একজন সোর্স। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রফিক পালিয়ে গেলে পুলিশ তার ভাইকে আটক করেন। এ সময় রফিকের ভাইয়ের আট বছরের একটি শিশু তার বাবাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় একজন পুলিশ ওই শিশুটিকে লাথি মারে।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের দলটিকে ঘেরাও করেন। তারা পুলিশের কাছে জানতে চান কেন তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধার করা মাদক কোথায় সেটিও গ্রামবাসী দেখাতে বলে পুলিশকে। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গ্রামবাসী পুলিশ দলটিকে ঘেরাও করে তাদের কাছে জানতে চাইছিলেন মাদক না পাওয়া গেলে কেন তারা একজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তোজাম্মেল মেম্বারের নেতৃত্বে গ্রামবাসী পুলিশের দলটিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। পুলিশের সঙ্গে কিছু সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এসআই আতিকসহ তিন পুলিশ, কনস্টেবল মাহবুবকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী কনস্টেবল মাহবুবকে বেধড়ক পিটুনি দিলে তার মাথা ফেটে যায়। ভেঙে যায় একটি হাতও। এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল আলম বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে গোদাগাড়ী থানায়। একটি মাদকের মামলা ও অপরটি পুলিশের ওপর হামলার মামলা। মাদকের মামলায় দুজন ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status