ঢাকা, ৪ মে ২০২৪, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

শতকোটি টাকার মালিক সাবেক মন্ত্রীপুত্র

মিলন পাটোয়ারী, লালমনিরহাট থেকে
২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার
mzamin

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদের পুত্র রাকিবুজ্জামান আহম্মেদ। পেশায় এমপিওভুক্ত কলেজশিক্ষক। ছাত্ররাজনীতি না করেই পিতার ক্ষমতায় হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকও। পিতার মন্ত্রিত্বকালীন সময়ে নিজ নামে গড়েছেন অঢেল সম্পদ। সংসদ নির্বাচনে পিতা নুরুজ্জামান আহম্মেদ নির্বাচনী হলফনামায় পুত্রের সম্পদের কথা গোপন রাখেন। উপজেলা নির্বাচনে পুত্র রাকিবুজ্জামান তার হলফনামায় তার নিজ নামীয় ১৬ একর জমি উল্লেখ করেছেন। বাকি সম্পদের তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন তার আপন চাচা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহবুবুজ্জামান। নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর তিনি অভিযোগ করেন- ভাতিজা তার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। একই অভিযোগ করেছেন নির্বাচন কমিশনেও। হলফনামায় সম্পদের হিসাব গোপন করলেও মাহবুবুজ্জামানের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন
এতেই ক্ষুব্ধ হন চাচা মাহবুবুজ্জামান। সংবাদ সম্মেলনে রাকিবুজ্জামানের সম্পদের গোপন তথ্য ফাঁস করে মাহবুবুজ্জামান বলেন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ ক্ষমতায় থাকাকালে ভাতিজা রাকিবুজ্জামান আহম্মেদ রাতারাতি অঢেল টাকার মালিক হয়েছেন। পৈতৃক জমি ছাড়াও ২৫ একর জমির হিসাব হলফনামায় দিলেও আরও রয়েছে অবৈধভাবে ক্রয় করা ৪২ একর জমি। কলেজশিক্ষক হয়েও পিতার মন্ত্রিত্বের সময় করতেন নিয়োগ বাণিজ্য। এ ছাড়াও নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি ক্রয় করেছেন নিজ নামে। সাবেক মন্ত্রীর পুত্র ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ জমির প্রমাণপত্র সাংবাদিকদের দেন তিনি। মাহবুবুজ্জামান আরও জানান, ৪২ একর জমির মালিক ছাড়াও কয়েক শত কোটি টাকার মালিক সাবেক মন্ত্রীর পুত্র। রাকিবুজ্জামানের গোপন সম্পদ ফাঁস করায় নানাভাবে লাঞ্ছনার  শিকার হন মাহবুবুজ্জামান। অভিযোগ রয়েছে- রাকিবুজ্জামান এলাকার যুবরাজ সেজে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নানান দুর্নীতির সঙ্গে রয়েছেন জড়িত। তার ব্যবহারিক গাড়ির মূল্য কোটি টাকার উপরে রয়েছে। পৈতৃক সম্পদ ছাড়াও ৪২ একর জমির মালিক হয়েছেন পিতা মন্ত্রিত্ব থাকাকালীন। নামে-বেনামে অঢেল টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। জেলা দুর্নীতি নির্মূল কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) আজিজুল ইসলাম জানান, বিষয়টির যে তথ্য ফাঁস হয়েছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ওদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হলফনামায় ১৬ একর তার নামে জমি দিলেও বাকি জমি উল্লেখ না করার বিষয়ে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীপুত্র রাকিবুজ্জামান রাকিব নির্বাচনী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানান, বাকি সম্পত্তি লেখার বিষয়ে জানতেন না। এত সম্পত্তির ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলেননি। 

ওদিকে কালীগঞ্জ উপজেলা জমি রেজিস্ট্রার অফিস সহ বিভিন্ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাকিবুজ্জামান আহম্মেদ নামে ২০১৯ সালে ১৮ই মার্চ কালীগঞ্জের দঃ ঘনোশ্যাম গ্রামের সহিদুল ইসলামের কাছে ৫১ শতক জমি, ২০১৯ সালের ২৫শে মার্চ একই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের নিকট ১৯ শতক, আম্বিয়া বেগমের নিকট ২০২২ সালের ৪ঠা অক্টোবর ২১.২৫ শতক জমি, আব্দুল হালিমের নিকট ২০১৮ সালের ২৪শে জুলাই ৫৪ শতক, ২০১৯ সালের ১৮ই মার্চ আয়েশা বেগমের নিকট ৩৪ শতক জমি নিজ নামে ক্রয় করেন। এভাবে এলাকায় সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মন্ত্রীপুত্র রাকিবুজ্জামান কালীগঞ্জ উপজেলায় তুলভাণ্ডার ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘনশ্যাম, কাঞ্চনশ্বর মৌজায় ৪২ একর ছাড়াও অঢেল সম্পদ ক্রয় করেন যার মূল্য কয়েক শত কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছেন দলিল লেখক সমিতির অনেকেই। দুদককে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন চাচা কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহম্মেদ। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ। ভাতিজার অবৈধ সম্পদ তথ্য ফাঁস করে দেয়ায় লালমনিরহাট জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। 
 

পাঠকের মতামত

একজন মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে কত টাকা বা বেতন পায়.. অথচ তাদের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ এই সব দুর্নীতি বাজদের কারনে আজকে দেশের এই পরিস্থিতি.. এদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হোক সঠিক প্রমান না থাকলে।

মো:আবুল হাছান
২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬:৫৯ পূর্বাহ্ন

রাজনৈতিক পরিবার গুলো হচ্ছে হায়নার চেয়েও ভয়ংকর।

Hafiz Mohammed
২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৬:১৭ অপরাহ্ন

ওদের কবরের ভয় নাই। নির্লজ্জ দূর্নীতিবাজ

Reza
২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৪:০০ অপরাহ্ন

সমস্যা কি, টাকাতো দেশেই আছে, তাই না! এতো কষ্ট, এতো ঝুঁকি সবইতো এজন্যই। ধন্যবাদ।

SM. Rafiqul Islam
২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:৩১ অপরাহ্ন

হায়রে গরীবের টাকা ! এভাবেই ওরা দেশটাকে কয়েকটা পরিবার মিলে ভাগ বাটোয়ারা করে খেয়ে ফেলবে । দেখার কেউ নাই ।

f
২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

This is Bangladesh, Criminals always use the identity of ruling government party & it's corrupted leaders (MP, minister etc. ). Dishonest/corrupted man/woman couldnot be have shame. These seasonal Criminals no have identity of any specific party, they are always busy to take shelter under ruling government party for doing their misdeeds.

Mohshin Ali
২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৭:১৫ পূর্বাহ্ন

হায়রে গরীবের টাকা ! এভাবেই ওরা দেশটাকে কয়েকটা পরিবার মিলে ভাগ বাটোয়ারা করে খেয়ে ফেলবে । দেখার কেউ নাই ।

Titu Meer
২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৬:৩১ পূর্বাহ্ন

Great Leader. President Zia was the greasest leader. Great Leaders are people who guide and influence those around them. The very essence of leadership is that you have to have vision. My freedom fighting time 1971 Major Zia’s actions inspire me and others to dream more, and make free country from the enemies. Kindest Regards DR. Jahangir Miah

DR. Jahangir Miah
২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২:২৫ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status