বাংলারজমিন
উপজেলা নির্বাচন
দোহার ও নবাবগঞ্জ সবাই চান অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন!
দোহার ও নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবারষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। ইতিমধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা-সমালোচনা। চায়ের দোকানের পাশাপাশি নির্বাচনের তর্ক হচ্ছে যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে। সিলেকশন নাকি ইলেকশন এমন কথার ঝড় উঠেছে ফেসবুকে। তবে সব প্রার্থীদেরই চাওয়া- ভোট হোক অংশগ্রহণমূলক। জনগণের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার কথা জানান প্রার্থীরা। দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ৮ই মে অনুষ্ঠিত হবে।
দোহার উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, দোহারে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে তিন জন হলেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন। এ ছাড়া অন্য দুজন হলেন- মো. মেহবুব কবির ও এ.এইচ.এম ফারুক উজ্জামান।
তবে দোহারের তুলনায় নবাবগঞ্জে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সংখ্যা বেশি। নবাবগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদ ঝিলু, যুবলীগ নেতা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল উদ্দীন, মোহাম্মদ বাবুল মিয়া ও মো. শেখ বোরহান উদ্দিন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. তাবির হোসেন খান পাভেল, উপজেলা তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার মণ্ডল, বাহ্রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পত্তনদার মো. রাকিবুর রহমান রাকিব, আওয়ামী লীগ নেতা তাজুল ইসলাম, মো. আক্তার হোসেন, মধ্যম কুমার সিদ্ধা আকাশ, কায়েশ আহমেদ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে যাচাই বাছাইয়ে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. তাবির হোসেন খান পাভেলের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে রোকসানা বেগম, দীপা কবির, ইয়াসমিন আক্তার, নিলুফা আক্তার, গাজী শাকিলা ও মনিকা ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে মনিকা ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে স্ব স্ব প্রার্থীরা নিজস্ব কর্মী নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, হ্যান্ডবিল বিতরণ ছাড়াও ফেসবুকের মাধ্যমে প্রার্থিতার জানান দিয়ে দোয়া ও সমর্থন চেয়ে নিচ্ছেন তারা। দোহারে সব প্রার্থীরা মাঠে থাকলেও নবাবগঞ্জে প্রার্থীদের প্রচারণা খুবই কম। নবাবগঞ্জের চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসিরউদ্দিন আহমেদ ঝিলু, মোয়াজ্জেম হোসেন ও ডা. বাবুল মিয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবুর রহমান নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করলেও অন্যান্য প্রার্থীরা অনেকটা নীরব। তবে ফেসবুকে সবাইকে প্রচারণায় সরব দেখা যায়।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বার বার নির্বাচিত হেভিওয়েট প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমি একাধিকবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আমাদের অভিভাবক সালমান এফ রহমান এমপি মহোদয়ের নেতৃত্বে জনগণের কল্যাণে কাজ করেছি। করোনাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে সব সময় চেষ্টা করেছি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। আশা করি জনগণ এবারও আমাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে তাদের সেবা করার সুযোগ দিবে।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ ঝিলু জানান, এবারও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, শিক্ষার উন্নয়নেও ব্যাপক কাজ করেছি। আশা করি নির্বাচনে জনগণ আমার কাজ মূল্যায়ন করবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমাদের অভিভাবক ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানের পাশে থেকে নবাবগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।
নবাবগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। তাই প্রতীক পাওয়ার আগেই প্রচারণায় নেমে পড়েছি। আশা করি আগামী ৮ই মে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে আসবে। জনগণের রায় আমি মেনে নেব। এব্যাপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তাবির হোসেন খান পাভেল ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিকা ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তারা আপিল করেছেন কিনা অবগত নই। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।