প্রথম পাতা
কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত টানাপড়েন
মানবজমিন ডেস্ক
২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবারভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরাজ করছে কূটনৈতিক উত্তেজনা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার এবং বিরোধী দল কংগ্রেসের কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা নিয়ে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। প্রথমে কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানায় জার্মানি। পরে তার সঙ্গে যুক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এতে ক্ষিপ্ত হয় ভারত। দিল্লিতে জার্মান দূতাবাসের শীর্ষ কূটনীতিক জর্জ এঞ্জওয়াইরা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অস্থায়ী প্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে তলব করে ভারত। তাদের সতর্ক করা হয়। ভারতের কড়া মনোভাব ও আপত্তির কথা তাদেরকে জানিয়ে দেয়া হয়। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রকে এ সতর্কতা দেয়ার পর আবারো যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ইস্যুতে কথা বলেছে। মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর প্রশ্নের জবাবে জানান, কেজরিওয়াল, কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দসহ এসব ইস্যুতে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
তার এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলছি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারসহ এসব বিষয়ে আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কংগ্রেস পার্টির কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আয়কর বিষয়ক কর্তৃপক্ষ জব্দ করেছে বলে অভিযোগের বিষয়েও আমরা অবহিত। এটা করার ফলে আসন্ন নির্বাচনে কার্যকর প্রচারণা চালানো তাদের পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে। এর প্রতিটি ইস্যুতে সময়মতো অবাধ, স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি আমরা। আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাবে বলতে হয়, কূটনৈতিক কোনো প্রাইভেট আলোচনা নিয়ে আমি কথা বলবো না। তবে অবশ্যই প্রকাশ্যে আমি যেটা বলবো তা হলো, আমরা সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং সময়মতো আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি। আশা করি এতে কারও কোনো আপত্তি থাকা উচিত নয়। একই বিষয় আমরা প্রাইভেটলিও ক্লিয়ার করবো।
উল্লেখ্য, ভারতে আগামী ৯ই এপ্রিল থেকে জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে তুমুল জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর (ইডি)। পাশাপাশি বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে দেয়া হয়েছে। এর ফলে কংগ্রেস তার নির্বাচনী প্রচারণায় হোঁচট খাবে। আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এতদিন পর নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যকর করা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ)। এর অধীনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মুসলিম বাদে প্রায় সব জাতিগত সংখ্যালঘুকে নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। সরকারের এসব কর্মকাণ্ডে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে দেশের ভেতরে এবং বাইরে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার ও কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করায়। এ নিয়ে প্রথমে প্রশ্ন তোলে জার্মানি। পরে যুক্তরাষ্ট্র। এই দুটি দেশের মনোভাব দিল্লিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির মধ্যে উদ্দীপনা এনেছে।
উদ্দিপনা পাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষও।