ঢাকা, ১১ মে ২০২৪, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

মত-মতান্তর

ই-সিগারেট: স্মার্টনেস নাকি হুমকি?

আলফি শাহরীন

(৪ মাস আগে) ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবার, ১২:৩৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০২ পূর্বাহ্ন

সাধারণ সিগারেটের বিকল্প হিসেবে পরিচিত ই-সিগারেট । যা বর্তমানে ভেপিং নামে তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।তরুন সমাজের মাঝে আজ ই-সিগারেটই ফ্যাশন এর অন্যতম উৎস হয়ে দাড়িয়েছে। এই ফ্যাশনই কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাদের সুস্থ-সবল জীবন যাপনের।   
“ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর” প্রচলিত এই কথার সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। ধূমপান নয় যেন বিষপান। তাই ধূমপানের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে অনেকেই বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছে ই-সিগারেট। ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে সাহায্য করে ই -সিগারেট, এমনটাই ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে অনেকের। কিন্তু সিগারেটের মতই স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই ইলেকট্রনিক সিগারেট। 
প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ প্রাণ হারান তামাকের ভয়ঙ্কর আগ্রাসনে। এরই মধ্যে স্মার্টনেস এর নামে তরুণ সমাজের মাঝে পরিচিত হচ্ছে ই-সিগারেট। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের কিছু পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও  এখনও বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের হার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা হলে দেশে ই-সিগারেট আমদানি বন্ধের পাশাপাশি তামাকের ব্যবহার হ্রাস পাবে এবং একই সঙ্গে দেশে এর মারাত্মক স্বাস্থ্যের ক্ষতি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি আরও কমানো সম্ভব হবে।    
ই-সিগারেটের ধোঁয়ায় ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুন। পাশাপাশি দেখা দেয় নানান ধরনের শারীরিক জটিলতা । গবেষকদের মতে ই-সিগারেটে রয়েছে রাসায়নিক পদার্থ যা ফুসফুসের রোগ এবং শ্বাসযন্ত্রে ইনফেকশনও ঘটাতে পারে। 
প্রতিনিয়ত নানান প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে তরুণদের আকৃষ্ট করছে তামাক দ্রব্য উৎপাদনকারী কোম্পানি গুলো। তরুনদের কাছে সহজেই এই প্রচারণা পৌঁছাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে তারা। তামাক কোম্পানির রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি করে এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে বাধার সৃষ্টি করে। বিশেষত তরুণদের কাছে তামাক কোম্পানি তাদের ব্র্যান্ডগুলোকে পরিচিত করার সুযোগ পায়। ধূমপানের প্রতি তরুণদের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। সেজন্য তরুন প্রজন্মকে ই-সিগারেটের ভয়াবহ ছোবল থেকে বাঁচাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরো কঠোর হওয়া প্রয়োজন। 
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন এই আসক্তি সৃষ্টিকারী ও ক্ষতিকর পণ্যে বিক্রির অনুমতি দেয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। উপাত্ত এবং অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, ই-সিগারেট, এইচটিপি বা নিকোটিন জাতীয় পণ্য বিক্রির অনুমতি দেয়া হলে তা বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।  ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের ৩২টি দেশে হিটেড টোব্যাকো পণ্য বা ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 
ই-সিগারেট এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার অকাল মৃত্যুর কারন। তরুনরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইন করে এটি বন্ধ করা হয়েছে। প্রত্যক্ষ্ এবং পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি নিরসনে আমাদের দেশেও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করে সকল ধরনের ইমার্জিং টোবাকো এবং নিকোটিন পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে।

মত-মতান্তর থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2022
All rights reserved www.mzamin.com