ঢাকা, ৬ মে ২০২৪, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ চরমে

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

দেশে চলমান দাবদাহের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করছে সর্বত্র। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। তাই চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি থাকায় চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। ঢাকায় লোডশেডিং কম হলেও গ্রামগঞ্জে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গতকাল বিকাল ৩টায় সারা দেশে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের  বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ এ হিসাব দিলেও প্রকৃত লোডশেডিং আরও বেশি বলে খাত বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। 

এদিকে, রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিনও (২২শে এপ্রিল) সারা দেশে বিশেষত গ্রামাঞ্চলে গড়ে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর কয়েকদিন চাহিদা কম থাকায় সাময়িক স্বস্তি থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে লোডশেডিং বাড়ছেই। গত কয়েকদিনে তা চরম আকার ধারণ করেছে। 
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। ফলে ঘাটতি মেটাতে নিয়মিতই হচ্ছে লোডশেডিং। তবে তা ঢাকায় তুলনামূলক অনেক কম অন্যান্য শহর ও গ্রামাঞ্চলে চাহিদার অর্ধেকও বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে না। এতে সারা দেশে লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে।

গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে বিদ্যুতের চাহিদা। ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় কোথাও ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এই এলাকার শেরপুর, নেত্রকোনা, জামালপুর জেলায়  চাহিদার তুলনায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে বলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গতকালও ১১০০ মেগাওয়াটের বিপরীতে ৩০০ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে ময়মনসিংহ এলাকায়। জ্বালানি সংকট থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেয়ায় এই লোডশেডিং বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বুধবার বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব হাবিবুর রহমান জামালপুরের  ইসলামপুরে যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চরে সৌর বিদ্যুতের প্লান্ট স্থাপনের জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। তবে তাপপ্রবাহ কমে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। 

লোডশেডিং বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন গতকাল মানবজমিনকে বলেন, গ্যাস সরবরাহের কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ কোনো কোনো জায়গায় কম পাচ্ছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে জানানো হয়েছে, যাতে এক জায়গায়  লোডশেডিং বেশি না হয়। ময়মনসিংহ এলাকায় লোডশেডিং সঞ্চালন লাইনের কারণে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আরও এক বছর লাগবে এই সমস্যা সমাধানে।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, জ্বালানির অভাবে বা আমদানি করতে না পারায় গত দুই বছর গরমের সময় লোডশেডিং বেড়েছিল। শহরে দুই থেকে তিন ঘণ্টার লোডশেডিং হলেও গ্রামে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিংয়ের অভিযোগ ছিল গ্রাহকদের। এবারো তেমন পরিস্থিতি হওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী দুই সংস্থা ডিপিডিসি ও ডেসকো জানায়, সরবরাহ ঘাটতির কারণে লোডশেডিং হচ্ছে না। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে কিছু কিছু এলাকায় বিভিন্ন সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সূত্র জানায়, তারা চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছে না। তাই বিতরণেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কিছু স্থানে অপেক্ষাকৃত বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। চট্টগ্রামে লোডশেডিংয়ের অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলের নির্দেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে রাজধানীকে। ঢাকা শহরে পিক আওয়ারে বিশেষত বিদ্যমান গরমে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। আর রাজধানীর বাইরে ঢাকার অন্যান্য জেলায় চাহিদা আরও প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট। অর্থাৎ শুধু ঢাকা বিভাগেই বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে পিক আওয়ারে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। এতে রেকর্ড উৎপাদনের সময় ঢাকায় তেমন লোডশেডিং ছিল না। তবে ফিডারগুলোয় বিশেষত গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা আরও কিছুটা বেশি হতে পারে। তাই ওই সময় ঢাকায় কিছুটা লোডশেডিং হয়েছে।

পিজিসিবি’র হিসাবে দেখা যায়, বুধবার চাহিদার তুলনায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোডশেডিং হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ময়মনসিংহ এলাকায়। ওইদিন ১৩৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল রংপুর বিভাগে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা  সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৬ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। ওই সময়ে সর্বোচ্চ উৎপাদন ধরা হয় ১৭ হাজার ৪৯২ মেগাওয়াট।

 

পাঠকের মতামত

What a Digital BD! In the Boardbazar, Gazipur, every day, 8-10 times load shading going on ! In other hand, we paid load charges , meters charge, vat, service charges etc. !?!

Rahman
২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৯:১৩ পূর্বাহ্ন

নোয়াখালী সোনাপুর এলাকায় গত ১৭/০৪/২৪ তারিখ হতে আজ পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ১৬-১৭ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে আপনারা চাইলে তদন্ত করে দেখতে পারেন আমি ঠিক বললাম কিনা।

Md Robiul Islam
২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৫:২৬ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2022
All rights reserved www.mzamin.com