ঢাকা, ১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

উপজেলা নির্বাচনে কৌশল বদল আওয়ামী লীগের

কাজী সোহাগ
৬ মে ২০২৪, সোমবার

একদিন পরই উপজেলা নির্বাচনের ভোট। ভোটকে কেন্দ্র করে ক্ষণে ক্ষণে কৌশল বদল করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। শেষ মুহূর্তে এসে মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়দের ভোটে অংশগ্রহণ নিয়ে সুর নরম করেছেন নেতারা। এর আগে বক্তব্যের পাশাপাশি সাংগঠনিক বিবৃতি দিয়েও মন্ত্রী-এমপিদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। তবে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবেই শুরু থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের চাপে রাখা হয়। ওই চাপ না থাকলে নির্বাচনী মাঠের পরিবেশ এখন অন্যরকম হতো। নেতারা জানান, মন্ত্রী ও এমপিদের চাপে না রাখলে পরিণতি কি হতো তা কয়েকটি উপজেলায় দৃষ্টি দিলেই বোঝা যায়। কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপি’র নির্বাচনী এলাকায় তাদের নিকট আত্মীয়রা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় সেখানে আর কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। এমনও উদাহরণ তৈরি হয়েছে, মন্ত্রী ও এমপি’র নিকট আত্মীয় দলের নির্দেশনা মেনে নির্বাচন থেকে সরে গেলে সেখানে আর কোনো প্রার্থী থাকে না। এদিকে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতারা অংশ নিচ্ছেন না উল্টো তারা ভোটবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে ভোটার উপস্থিতি যাতে সন্তোষজনক হয় তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক উপজেলায় বেশি সংখ্যক প্রার্থী রাখারও কৌশল রয়েছে। এ কারণে কিছু কিছু প্রার্থী দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যত্যয় করলেও বিশেষ কারণে তাদের ক্ষেত্রে নমনীয়তা প্রদর্শন করা হচ্ছে। নেতারা জানিয়েছেন, সব উপজেলায় এমনটা হচ্ছে না। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কেউ কেউ ছাড় পেতে পারেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অটুট রয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনদের বিরত রাখা আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এখানে আইনগত কোনো বিষয় নেই। তিনি বলেন, প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলে নির্বাচনটি আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে- এ ভাবনা থেকে আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ স্থগিত করেছে। এর মানে এই নয় যে, অন্যান্য দলগুলো নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ করতে পারবে না। উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা দলগতভাবে নির্বাচন করবে না। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি এবং দলীয় প্রতীকও ব্যবহার করছে না। আওয়ামী লীগের হাতেগোনা দু’একজন- যেমন, তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ছাড়া বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী- এমপিরাই এ সিদ্ধান্ত মানেননি। তাদের আত্মীয়স্বজনরা প্রার্থী হয়ে আছেন। ইতিমধ্যেই আত্মীয়স্বজনের একটি নতুন ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্ত্রী-পুত্র নিয়ে পরিবার। এর বাইরে যদি কেউ নির্বাচন করে তাহলে তাদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে ধরা হবে না। একই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এটিও বলেছেন যে, অনেকের আত্মীয়স্বজনরা আওয়ামী লীগের নেতা। কোথাও কোথাও তারা আগে থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান রয়েছেন। তাদেরকে বাধা দেয়া যায় কীভাবে? তবে প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেছেন, স্ত্রী, ভাই, বোন সবাইকে নির্বাচনে প্রার্থী করা ঠিক না। এর বাইরে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হবে। আর এই প্রেক্ষিতেই এ স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন কোনো আলোচনা করছে না। 

এর আগে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়াদের নিয়ে আরেকটি কৌশল নেয় আওয়ামী লীগ। সে কৌশলে বলা হয়, দলীয় প্রার্থী না থাকলেও সুনির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে দলীয় সমর্থন থাকবে। কিন্তু এ কৌশলে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিভেদ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ওই পথ থেকে সরে আসে ক্ষমতাসীন দল। আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ এবং অর্থপূর্ণ করার জন্য কৌশলগত কারণেই এখন কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। তবে উপজেলায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় দেখা হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দৌরাত্ম্যের অভিজ্ঞতা আমরা জানি। তবে নির্বাচনকে অংশগ্রহনমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে এর কোনো বিকল্প ছিল না। প্রায় একই চিত্র দেখা যাচ্ছে উপজেলা নির্বাচনেও। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দল কৌশলগত কারণে অনেক সময় অনেক ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এটা সব রাজনৈতিক দলই করে। তার মানে এই নয় যে, অতীতের সিদ্ধান্ত এবারো কার্যকর হবে। দলের পক্ষ থেকে যে বার্তা দেয়া হয়েছে সেটা যারা মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
 

পাঠকের মতামত

যারা ভুয়া ভোট ভোট খেলায় মেতে জনগনের টাকা অপচয় করছেন তারা নিজের বিবেককে প্রশ্ন করেন!(যদিও বিবেক নাই) আপনাদের জন্য দেশ ও জাতির যে ক্ষতি হচ্ছে তা কি ক্ষমার যোগ্য??

MU
৬ মে ২০২৪, সোমবার, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সমস্ত আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি ।

Kazi
৬ মে ২০২৪, সোমবার, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

পেটেপেটে কৌশল থাকলে তা বের হবেই।

srkhan
৬ মে ২০২৪, সোমবার, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2022
All rights reserved www.mzamin.com