বাংলারজমিন
হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ উপনির্বাচন
আওয়ামী লীগ সভাপতির স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাধারণ সম্পাদক
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবারহবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আবু জাহির এমপি’র স্ত্রী মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলেয়া বেগমের (আনারস) বিরুদ্ধে লড়ছেন জেলা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী (ঘোড়া)। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নাকি সমঝোতা হবে- এ নিয়ে জেলার সর্বত্র চলছে নানামুখী আলোচনা।
আগামী ৯ই মার্চ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে পদত্যাগ করায় পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছিল। নির্বাচনে মোট চারজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। অপর দুই প্রার্থী হচ্ছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের এডভোকেট মো. নূরুল হক (চশমা) এবং স্বতন্ত্র মো. ফরিদ উদ্দিন তালুকদার (মোটরসাইকেল)। জানা যায়, যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী ৯ই মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। জেলার ৯ উপজেলা, ৫ পৌরসভা ও ৭৮ ইউনিয়নে মোট ভোটার এক হাজার ১০৪ জন। প্রার্থীদের মধ্যে আলেয়া বেগম ও এডভোকেট আলমগীর চৌধুরীর নামই আলোচনায় রয়েছে। প্রতিনিধিত্বমূলক ভোট হওয়ায় ভোটারদের গতিবিধি নিয়ে নানাভাবে বিশ্লেষণ হচ্ছে।
এবারের নির্বাচন নিয়ে নানা হিসাব নিকাশ করছেন ভোটাররা। আলেয়া বেগম নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণার আগেই সকল উপজেলার ভোটারদের নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। ভোটাররা আলেয়া বেগমকে সমর্থন দিলে তিনি প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। এক্ষেত্রে দলীয় ভোটাররা প্রভাবশালী নেতা আবু জাহিরকে খুশি করতে হলেও তার স্ত্রীকে ভোট দিবেন। অন্যদিকে অপর প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী ও আবু জাহির জেলা আওয়ামী লীগের একই গ্রুপের নেতা। এক্ষেত্রে সম্পর্ক ঠিক রাখতে তিনি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা। তবে ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৫শ’ জনপ্রতিনিধি রয়েছেন বিএনপি ও বিরোধী মতাদর্শের অনুসারী ও নেতাকর্মী। তাদের ভোটের সমীকরণ কী হবে, সেটি নিয়েও চুলচেরা হিসাব-নিকাশ চলছে। এ ছাড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিগত দিনের অভিজ্ঞতা খুবই হতাশাব্যঞ্জক। ভোট কিনতে লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিজয়ী হয়েছেন অনেক প্রার্থী। এ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি টাকার খেলা হয়েছে বিগত দিনে। এক্ষেত্রে ভোটের হিসাব কেমন হবে সহজে অনুমান করা অনেকটা দুষ্কর। সব মিলিয়ে এবার হবিগঞ্জের জেলা পরিষদ নির্বাচন দিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে সকল মহলে।
এ বিষয়ে এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী জানান, ছাত্রজীবন থেকেই দলের জন্য কাজ করে জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলাম ৫ বছর। বিগত সংসদ নির্বাচন এবং জেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিনি। আর জেলা পরিষদের যারা ভোটার আছেন তাদের সঙ্গে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আশা করি ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
আলেয়া বেগম জানান, আমি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জেলার নারীদের উন্নয়ন ও সমাজের জন্য কাজ করে আসছি। আমি এমপি আবু জাহিরের স্ত্রী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি না। আমি জেলার সকল ভোটার ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। তারা আমাকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করে ভোট দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করে সেবা করার সুযোগ দিবেন। আমি সুযোগ পেলে জেলার নারীদের উন্নয়নসহ জেলা পরিষদ নিয়ে মানুষের যে অপ্রাপ্তি তা দূর করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।