ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

ভাষা দিবসের আলোচনায় বিএনপি নেতারা

‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলবে’

স্টাফ রিপোর্টার
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার

মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশের হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা। তারা বলেছেন, ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষা আন্দোলন ছিল না। সেটি প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সূচনাপর্ব। ভাষা আন্দোলনের চেতনাই কিন্তু পরবর্তীতে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নিতে প্রেরণা জুগিয়েছে। আজকে বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র নেই, কথা বলা ও লেখার স্বাধীনতা নেই। জনগণের ভোটাধিকার নেই। ফলে বিএনপি’র একদফার যে আন্দোলন, তা চলবে। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তারা। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের উন্নয়নে যা করেছেন তা বলে শেষ হবে না। তিনি দেশের কৃষির উন্নয়নে খাল খনন কর্মসূচি করেছেন।  শিক্ষার উন্নয়নে অসংখ্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। একটি ছোট দেশ হয়েও তিনি নিজের পায়ের ওপর দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। 

তিনি আমাদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন। তার শাসনামলে যে নির্বাচন হয়েছিল সেখানে সকল দল অংশ নিয়েছিল।  তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কতো সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করেছিলেন। কোনো বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে বন্দি করে কারাগারে পাঠান নাই। ইনশাআল্লাহ আবারো তার নেতৃত্বে বিএনপি সফল হবে। তার যোগ্য পুত্র তারেক রহমান দলের হাল ধরেছেন। আজকে তিনি দেশে আসতে পারছেন না। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি ফিরবেন। বিএনপি মানেই শান্তি ও গণতন্ত্র। বিএনপি মানেই সাধারণ মানুষের উন্নতি ও সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষা। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধম্যেই কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা ঘটে। তার আগে মাতৃভাষার চেতনাকে কেন্দ্র করেই ৬৯, ৭০ পর্যন্ত এসেছিলাম। আমরা পাকিস্তানিদের বলেছিলাম তোমাদের বৈষম্যের শাসন মানি না। সেদিন বাঙালি তাদের ব্যালটের মাধ্যমে পাকিস্তানিদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছিল তোমাদেরকে চায় না। ফলে পাকিস্তান মুসলিম লীগ সরকারের ভরাডুবি হয়েছিল। তিনি বলেন, আমাদের কর্মীরা আদালতে যায়। উকিলকে টাকা না দিয়ে পারে। কিন্তু জেল থেকে যখন আসে লাখ লাখ টাকা দিয়ে বের হতে হয়। না হলে কাগজ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার ঢুকিয়ে দিমু। এক লক্ষ, দুই লক্ষ, তিন লক্ষ টাকা। একটা বেকার যুবক জেলখানায় গেছে। সর্বোচ্চ আদালত থেকে সে রায় পেয়েছে। তারপরও তাদেরকে টাকা না দিলে জেলখানা থেকে বের হতে তারা দেয় না। আমি বলছি, এতে আমার ফাঁসি হোক। কিন্তু এই সত্যি কথা বলতে আজকে আমি বাধ্য হচ্ছি। 

 গয়েশ্বর বলেন, এই সরকার হলো পাকিস্তানের প্রেতাত্মা সরকার। এদের কোনো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নেই। আবার তারাই বলে, আমি তো থাকতে চাই নাই। কিন্তু জনগণ আমাকে ছাড়লো না। আসলে এদের লাজলজ্জা ও নৈতিকতা নেই। তারা বিরোধী রাজনীতিবিদদের নিয়ে যেরকম ভেংচি কাটে এবং কথা বলে তাতে প্রমাণিত হয় লজ্জা নেই। আমাদের নেতাদের নিয়ে কটূক্তি করছে। যখন খুশি মামলা দিচ্ছে। বিচারকরা কোনো যাচাই-বাছাই করেন না।  বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম সেটি আজ ভূলুণ্ঠিত। এই সরকার ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্র হত্যা করেছে। আমরা এই দুইটি ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করছি।  বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য  সেলিমা রহমান বলেন,  এই আওয়ামী লীগ আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করে একতরফা ডামি নির্বাচন করেছে ৭ই জানুয়ারি। এই সরকার সবচেয়ে ভয় পায় বিএনপিকে। যার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আমাদের আন্দোলন কিন্তু চলমান। আমরা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। জনগণ তাতে সাড়া দিয়েছে। ফলে আমরা সফল হয়েছি। আমরা দেশের সকল মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ঘটিয়ে সত্যিকারের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, এই দেশের মানুষ আন্দোলনের মাধ্যমেই তাদের দাবি আদায় করেছিল। তার উদাহরণ ১৯৫২ সালের মাতৃভাষা আন্দোলন।

 সে সময় বাঙালি জাতি পশ্চিম পাকিস্তানের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই সংগ্রাম করেছে। কখনো জয়ী বা পরাজিত হয়েছে। আজকে আমরা একদফা দাবিতে আন্দোলন করছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। লড়াই হচ্ছে সহজাত প্রবৃত্তি। দেশের মানুষ আজ অসহায়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে ছাত্র-যুবক সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে এবং এই সরকারের পতন ঘটিয়ে আমরা ঘরে ফিরবো। বাঙালি জাতিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায়  অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুকসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সংগঠনের নেতারা। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা জেড মোর্তুজা চৌধুরী তুলা, অঙ্গসংগঠনের হেলেন জেরিন খান, মো. আব্দুর রহিম, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, শাহ মো. নেছারুল হক, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, কাজী মো. সেলিম রেজা, ড.  কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, তানজিল হাসানসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী।  কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভার আগে ভাষা আন্দোলন ও চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এদিকে অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ের কারণে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

মৌলভীবাজারে জাতীয় পার্টির সম্মেলন সম্পন্ন / ‘আমরা আওয়ামী লীগে নেই, বিএনপিতেও নেই

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status