দেশ বিদেশ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে বাম জোটের বিক্ষোভ
রাজপথে জনগণের পার্লামেন্ট হবে
স্টাফ রিপোর্টার
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবারঅর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান ও শ্বেতপত্র প্রকাশ, পাচারের টাকা ও খেলাপি ঋণ আদায় এবং দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পূর্ব-ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ করে তারা। বিক্ষোভ মিছিলটি দুপুর ১২টার দিকে তোপখানা রোড থেকে পল্টন হয়ে মতিঝিলে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় ব্যাংকের প্রবেশ গেটটি প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বন্ধ ছিল। ব্যাংকের টাকা লুটপাট ও অর্থ পাচারকারীদের শাস্তিসহ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বক্তারা বলেন, রাজপথে জনগণের পার্লামেন্ট হবে।
বিক্ষোভ-সমাবেশে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, লুটেরাদের প্রশ্রয় দিয়ে ব্যক্তিখাত গড়ে তোলা যায় না। এটা হয় স্বজন তোষণমূলক পুঁজিবাদ। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ কম দেখানোর জন্য নানা পদ্ধতি বের করা হয়। এতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় না। খেলাপি ঋণ বেড়েই চলছে। এর মধ্য দিয়ে প্রকৃত শত্রুদের আড়াল করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এদের শক্তির উৎস ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এখন এসব দল এদের পক্ষে চলে গেছে। এ সময় তিনি খেলাপি ঋণ গ্রহীতাদের তালিকা প্রকাশ, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ডামি নির্বাচনের পার্লামেন্ট জনগণের পার্লামেন্ট নয়। এটা লুটেরা ব্যবসায়ী ও একদলীয় কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতাসীনদের ক্লাব। পালাক্রমে বামপন্থিরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজপথে জনগণের পার্লামেন্ট হবে। আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে এই অবস্থান হলো জনগণের পার্লামেন্ট। এখানে জনগণের কথা বলা হলো। এরপর দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামনে অবস্থান করা হবে।
তিনি বলেন, দেশের আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনার দায় বাংলাদেশ ব্যাংক এড়িয়ে যেতে পারে না। খেলাপি ঋণ আদায় ও পাচারের টাকা ফেরত আনতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দলীয় প্রভাবমুক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেশপ্রেমিক অর্থনীতিবিদদের পরামর্শে পরিচালনা করতে হবে। ব্যাংকের তথ্য উন্মুক্ত ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ৭ দিনের মধ্যে খেলাপিদের তালিকা ও ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানান তিনি। এ সময় প্রিন্স প্রশ্ন রেখে বলেন, বিগত রাতের ভোটের সংসদে যে খেলাপিদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল- তার খবর কি? কাদের প্রশ্রয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না জানতে চাই।
সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, সরকার শুধু লুটেরাদের পাহারাদার নয়, এরা এই লুটের অংশীদার। এদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তুলে মুক্ত বাজারের অর্থনীতি বিদায় করে সমাজতান্ত্রিক অভিমুখীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সময় তিনি বেনামে ঋণের সঙ্গে যুক্ত ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বাসদ’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতা আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। সমাবেশটি পরিচালনা করেন- সিপিবি নেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল।